‘রক্তদাতারা মুমূর্ষু মানুষের জীবন বাঁচান। এ বহমান রক্তের ধারা রক্তগ্রহীতাকে নতুন জীবন দেয়। তাই বলা যায়, রক্তদানের মতো মহান কাজের মধ্য দিয়ে অমরত্ব লাভ করেন রক্তদাতা। এ কল্যাণকর কাজে যুক্ত হয়ে একইসাথে তিনি মুক্ত থাকেন ক্ষতিকর বিভিন্ন আসক্তি থেকে। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমে সর্বস্তরের মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে আমি সত্যিই অভিভূত’।
১৭ নভেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।
এ আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মোটিভেশন) জনাব এম রেজাউল হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকিং এন্ড ট্রেনিং কনসালটেন্ট অর্থনীতিবিদ বাবু সুকুমার চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় দুই দশকের যাত্রায় কোয়ান্টাম গড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ স্বেচ্ছা রক্তদাতার সুসংগঠিত ডোনার পুল। এর মধ্যে অর্ধ লক্ষাধিকই নিয়মিত রক্তদাতা। কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমে বিভিন্ন সময়ে রক্ত দিয়েছেন এমন, নারী রক্তদাতার সংখ্যা ৪৭ হাজারের বেশি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষাধিক ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
এ-ছাড়া ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৮ জন শিশুকে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৯৮৪ ইউনিট রক্ত দিয়ে সেবা দেয়া হয়েছে। শিশু ও মহিলা থ্যালাসেমিয়া রোগীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৪৫ হাজার ৩৮১ জন শিশু এবং ১৪ হাজার ৩০৭ জন মহিলা থ্যালাসেমিয়া রোগী রক্ত সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে গত দুই বছরে ২ হাজার ৩৩৭ জন শিশু ও ১ হাজার ১০১ জন মহিলা নির্ধারিত দিন পর পর নিয়মিত সেবা নিতে পেরেছেন।
অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ৩ বার, ১০ বার অথবা ২৫ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন, এমন তিন শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতাকে সনদপত্র, আইডি কার্ড ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এসময় স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের পক্ষে অনুভূতি বর্ণনা করেন ১০ বার রক্তদানকারী ডা. সারিয়া তাসনি এবং নিয়মিত রক্তগ্রহীতাদের মধ্য থেকে অনুভূতির কথা জানান থ্যালাসেমিয়া রোগী মাইশা বিনতে সাহাদাৎ।