1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন

শারীরিক ফিটনেস বাড়াতে চালের ভূমিকা

  • সময় রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩
  • ৩৫৪ বার দেখা হয়েছে

পেট ফিট রাখার জন্যে এবং ফিজিকেল ফিটনেস বাড়ানোর জন্যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের আরেকটি বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। সেটা হচ্ছে আমাদের মূল খাবার চাল নিয়ে।

১. চালের ব্যাপারে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি

আসলে বাস্তব সত্য হচ্ছে,আমাদের মূল খাবার চাল কিন্তু চালের ব্যাপারে আমাদের ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদের টোটাল ফিটনেসের পথে একটা অন্তরায় সৃষ্টি করছে। আমরা গত ৫০ বছরে আবরণযুক্ত চাল যাকে ঢেঁকিছাঁটা লাল চালও বলা হয়, এই চালের বদলে আমরা কলে ভাঙা সাদা মসৃণ চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

আসলে কলে ভাঙা মসৃণ সিদ্ধ চাল দেখতে আকর্ষণীয় সহজে রান্না করা যায় কিন্তু অনেক পুষ্টি উপাদান বঞ্চিত।

২. আবরণযুক্ত লাল চালের যত গুণ

আসলে চালের ওপরের যে আবরণটি এটা ডায়েটারি ফাইবার আঁশ ও নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, খনিজ লবণ, বায়োটিন, আমিষ, চর্বি, ফাইটোকেমিক্যাল, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ এবং ই। মেশিনের ছাঁটার সময় এই চালকে মসৃণ করতে গিয়ে অতি প্রয়োজনীয় এই উপাদানগুলো উপাদানগুলো বাদ পড়ে যায়। যে কারণে সাদা চালকে বলা হয় ফাঁপা কার্বোহাইড্রেট।

যত চালকে পলিশ করা হবে তত বেশি পুষ্টি উপাদানগুলো নষ্ট হবে। এককাপ আবরণযুক্ত চালে ৭৮ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। কলে ভাঙানো চালে থাকে মাত্র ১৯ মিলিগ্রাম। আবরণযুক্ত চালে পটাশিয়াম থাকে ১৭৪ মিলিগ্রাম আর কলে ভাঙানো চালে পটাশিয়াম থাকে মাত্র ৫৫ মিলিগ্রাম।

আসলে আবরণযুক্ত চালের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এতে আঁশ থাকে বেশি। এবং এই আঁশ কোলেস্টেরল কমায় হজমে সাহায্য করে। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে অন্ত্রের কোষের সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকতে বাধা দেয়। অর্থাৎ অন্ত্রের যে কোষ অন্ত্রের যে দেয়াল, দেয়ালের যে কোষ সেখানে থেকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে।

আবরণযুক্ত চালে প্রচুর সেলেনিয়াম থাকে। এবং এই সেলেনিয়াম অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

আমরা জানি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হৃদরোগ ক্যান্সার ও অকাল বার্ধক্যসহ বেশ কয়েকটি ভয়াবহ রোগের কারণ হতে পারে। লাল চালে রয়েছে পেনল ফ্ল্যাবনয়েডস নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থায় গতি আনে।

এছাড়া আবরণযুক্ত লাল চালে প্রচুর এন্থোসায়ানিন নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এই এন্টি-অক্সিডেন্ট লাল রঙের ফলমূল ও শাকসবজিতেও পাওয়া যায়। এন্থোসায়ানিন শরীরে প্রদাহ কমায় এনার্জি কমায় ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়া ত্বকের ভাজ কমায় এবং ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে। এবং এন্থোসায়ানিন ক্ষতিকর আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

লাল চালের ভাতে লিগন্যান্স নামক যৌগ রয়েছে যা হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলো উপশমে সাহায্য করতে পারে। লিগন্যান্স সমৃদ্ধ খাবার যেমন তিসি তিল বাদাম উচ্চ কোলেস্টেরল নিম্ন রক্তচাপ ও ধমনী শক্ত হয়ে যাওয়া হ্রাসে সাহায্য করে।

৩. সাদা মসৃণ চালের যত ক্ষতি

এর বিপরীতে সাদা চালের ভাত ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

আসলে মেশিনে ছেঁটে চাল মসৃণ করার সময় আয়রন হারিয়ে যায় আর জিংকের পরিমাণ কমে যায়। তাই কলে ভাঙা অতিরিক্ত মসৃণ সাদা চাল মানুষের দেহে জিংকের অভাব সৃষ্টি করে এবং জিংকের অভাব মস্তিষ্কের বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।

আমরা যারা কলে ছাঁটা অনেক বেশি মসৃণ পলিশ চাল খেতে অভ্যস্ত, যত ধীরে ধীরে ধাপে ধাপে এই মসৃণ চালের পরিবর্তে সাদা চালের পরিবর্তে আবরণযুক্ত চাল খাওয়ার অভ্যাস করব তত নিজেদের স্বাস্থ্যগত ফিটনেসটাকে আরো এগিয়ে নিতে পারব।

৪. কিডনি রোগ, আইবিএস ও সার্জারি রোগীর ক্ষেত্রে সতর্কতা

তবে কিডনি রোগে আক্রান্ত যারা তাদের লাল চালের ব্যাপারে আবরণযুক্ত চালের ব্যাপারে সতর্কতা প্রয়োজন। যাদের আইবিএস-এর প্রবণতা রয়েছে এবং যারা সার্জারির রোগী সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আবরণযুক্ত চালের ভাত খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকাই উত্তম।

 

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com