মনে রাখবেন, সাহস এবং হঠকারিতা দুটো কিন্তু এক জিনিস নয়। সাহস মানুষকে বিজয়ী করে। আর হঠকারিতা মানুষকে ধ্বংস করে।
এখন হঠকারিতা কী?
রাস্তা দিয়ে ৬০ মাইল বেগে ট্রাক আসছে।
আপনি যদি ওখানে গিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি বিশ্বাসী আমি সাহসী, তো কী হবে?
ট্রাক আপনার কথা শুনবেও না। এটা হচ্ছে হঠকারিতা।
ধরেন আসলে সাহসটা কী? সাহসটা হচ্ছে ঠান্ডা মাথায় চিন্তাভাবনা করে সাহসী পদক্ষেপ নেয়া, রিস্ক নেয়া। ঝুঁকি আছে, ঠিক আছে। কিন্তু চিন্তা করতে হবে ঠান্ডা মাথায়।
এবং প্রত্যেকটা কাজে একটা ঝুঁকি থাকে। হয় আপনি সফল হবেন, না হয় ব্যর্থ হবেন।
দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলে আপনি ব্যর্থ হবেন। আর যদি ঠান্ডা মাথায় চিন্তাভাবনা করে সাহসী পদক্ষেপ নেন, আপনি সফল হবেন।
সবসময় চিন্তা করতে হবে যে, আমি যে কাজটা করতে যাচ্ছি এটা আমার নিজের কল্যাণ এবং অন্যের কল্যাণের জন্যে কি না।
যখনই এটা নিজের এবং অন্যের কল্যাণের জন্যে হবে, আপনার সাহস তখন কাজ করবে, আপনি জয়ী হবেন।
এখন একজন বলল এই এই তুই না একটা পুরুষ, এই যা, অমুকের মুখে থুথু দিয়ে আসতে পারবি?
পারবি না? এই…তুই পুরুষই না।
আপনি বললেন যে কী! আমাকে ‘পুরুষ না’ বলেছে। ব্যস, আপনি গিয়ে কী করলেন, আপনি যে পুরুষ এটা প্রমাণ করার জন্যে থুথু মারতে গেলেন।
আপনি সাহসী হলেন! না। আপনি হঠকারী হলেন।
কারণ ঐ কাজটা আপনার নিজের এবং অন্যের কল্যাণের জন্যে হয় নাই। ঐ কাজটা ঘৃণার জন্যে হয়েছে।
ঐ কাজটা অহেতুক বোকামি হয়েছে, আহাম্মকি হয়েছে, অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আপনি কাজটা করেছেন।
সাহস সেটাই যেটা ঠান্ডা মাথায় চিন্তাভাবনা করে নিজের কল্যাণ এবং অন্যের কল্যাণের লক্ষ্যে যখন আপনি দাঁড়াচ্ছেন তখন এটা হচ্ছে সাহস।
আমরা সাহসী হবো, কিন্তু কখনো হঠকারিতা করব না এবং আহাম্মকি করব না।
আমরা নিজের সম্মান রক্ষা করব। সেই সাথে আরেকজনের সম্মানও রক্ষা করব, কাউকে অসম্মান করব না। অসম্মান করাটা কিন্তু সাহসী নয়।
এবং মহামানবদের যদি দেখি- তারা সবসময় সাহসী ছিলেন। কিন্তু তারা কখনো কাউকে অসম্মানিত করেন নাই।
মানুষজন গালিগালাজ করেছে। একজন গালি দিল, আর আপনি বললেন যে, হ্যাঁ…আমাকে অপমান করল। আপনি গিয়ে দুটো ঘুষি দিলেন। এটা কিন্তু সাহসী না, এটা বোকামি, এটা আহাম্মকি।
একজন গালি দিয়েছে, গালি দিক।
মহামানবরা কী করতেন, যে গালি দিত তার জন্যে দোয়া করতেন। প্রজ্ঞা হচ্ছে তার জন্যে দোয়া করা।
তাহলে কী হবে? চান্স হচ্ছে, যে গালি দিচ্ছে সে একদিন আপনার বন্ধু হয়ে যাবে, যদি আপনি তার সাথে প্রজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করেন।
[প্রজ্ঞা জালালি, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯]