1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

অধীনস্থের অধিকার

  • সময় বুধবার, ২ জুন, ২০২১
  • ১০৫৭ বার দেখা হয়েছে

বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে আল্লাহতায়ালা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে সৃষ্টি করেছেন। কাউকে আর্থিক সচ্ছলতা ও ধনদৌলত দিয়েছেন, আবার কাউকে করেছেন নিঃস্ব-এতিম। কেউ দুহাতে টাকা ব্যয় করছেন, কেউ পেটের ক্ষুধা নিয়ে মানুষের কাছে হাত পাতছেন। আদর্শ পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পৃথিবীতে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় এই বৈচিত্র্য খুবই জরুরি। তবে এর উদ্দেশ্য এই নয় যে, ধনী ব্যক্তি সম্পদের অহংকারে বিভোর থাকবে এবং দরিদ্র ব্যক্তি আল্লাহর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলবে। বরং আল্লাহ চান ধনী তার সম্পদের সঠিক ব্যবহার করুক এবং অসহায় ব্যক্তি অভাবের দিনগুলোয় ধৈর্যধারণ করুক। তাই ধন-ঐশ^র্যের বিনিময়ে ধনীকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে হবে এবং তার নির্দেশিত পথে তা ব্যয় করতে হবে। আর দারিদ্র্য জয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করাই দরিদ্র ও অসহায় মানুষের দায়িত্ব।

ধনী-হোক বা দরিদ্র, মানুষ দৈনন্দিন জীবনের সব কাজ সে একা করতে পারে না। প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে অন্যের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এজন্যই মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে কিংবা করতে হয়। আর সমাজের শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সমাজের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মমতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।

৭৯০.
তোমার অধীনস্থরা তোমার ভাই, তোমার খাদেম। আল্লাহ তাদের ওপর তোমাকে কর্তৃত্ব দিয়েছেন। তাই তাকে তা-ই খাওয়ানো উচিত, যা নিজে খাও। তা-ই পরানো উচিত, যা নিজে পরো। সামর্থ্যরে বাইরে তাদের ওপর কাজের বোঝা চাপিয়ে দিও না। যদি তাদের ভারী কাজ দাও, তবে নিজেরাও সে-কাজ সম্পাদনে (অতিরিক্ত মজুরি বা লোকবল দিয়ে) সাহায্য করো।
—আবু যর গিফারী (রা); তিরমিজী, ইবনে মাজাহ

৭৯১.
বেতন-ভাতা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ না করে কাউকে কাজে নিয়োগ করবে না।
—বায়হাকি

৭৯২.
যখন তোমার কোনো খাদেম তোমার জন্যে খাবার নিয়ে আসে, তখন তুমি যদি তাকে তোমার সাথে খেতে বসতে না-ও বলো, তবুও তোমার খাবার থেকে একটা অংশ তাকে দাও। কারণ সে পরিশ্রম করে এ খাবার তোমার জন্যে তৈরি করে এনেছে।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, ইবনে মাজাহ, তিরমিজী

৭৯৩.
অধীনস্থকে তার কর্ম সম্পাদনে সাহায্য করো। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তুমি যা কিছুই করো না কেন, তা কখনো বৃথা যাবে না।
—আবু হুরায়রা (রা); আহমদ, মুফরাদ

৭৯৪.
অধীনস্থের ওপর কখনো কষ্টদায়ক কোনো কাজ চাপিয়ে দেবে না। আশাব্যঞ্জক কথা বলবে। নেতিবাচক কথা বলে নিরাশ করে দেবে না।
—আবু বুরদা (র); বোখারী, মুসলিম (মেশকাত)

৭৯৫.
কোনো অধীনস্থকে অন্যায় শাস্তি দেবে না। প্রহার করবে না। করলে মহাবিচার দিবসে এর বদলা নেয়া হবে।
—আবু হুরায়রা (রা); তাবারানী, বায়হাকি, মুফরাদ

৭৯৬.
অধীনস্থের সাথে ভালো ব্যবহার সৌভাগ্য বয়ে আনে। আর অধীনস্থের সাথে দুর্ব্যবহার দুর্ভাগ্য বয়ে আনে।
—রাফে ইবনে মাকীস (রা); আবু দাউদ

৭৯৭.
অধীনস্থের সাথে দুর্ব্যবহারকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
—আবু বকর সিদ্দীক (রা); তিরমিজী, আহমদ

৭৯৮.
যদি কেউ তার গৃহকর্মীর ওপর যৌন অপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আনে, তবে অভিযোগকারীকেই মহাবিচার দিবসে এ অপবাদের শাস্তি দেয়া হবে।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

৭৯৯.
যখন কোনো কর্মচারী বা অধীনস্থ তার মনিবের খেদমত সুচারুরূপে করে আর পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর ইবাদত করে, তখন সে দ্বিগুণ সওয়াব লাভ করে।
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); বোখারী, মুসলিম

৮০০.
নির্ধারিত পারিশ্রমিকের বাইরে (মালিকের অজ্ঞাতে) কোনোকিছু নেয়া কর্মচারীর জন্যে মালিকের সম্পদ আত্মসাতের শামিল।
—আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা (রা); আবু দাউদ

৮০১.
‘অধীনস্থ কর্মীকে তার ভুলত্রুটির জন্যে আমি কতবার ক্ষমা করব?’ একজন প্রশ্ন করল নবীজীকে (স)। নবীজী (স) চুপ থাকলেন। দ্বিতীয় বার একই প্রশ্ন করার পরও নবীজী (স) চুপ থাকলেন। তৃতীয় বার প্রশ্ন করার পর নবীজী (স) উত্তর দিলেন—‘দৈনিক ৭০ বার ক্ষমা করবে।’
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © RMGBDNEWS24.COM