ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রা একটি ঘুমের ব্যাধি। এটি ব্যক্তির ভাল ঘুমকে নষ্ঠ করে এবং ব্যক্তি সারা রাত ঘুমাতে পারেনা। একবার যদি তার ঘুম ভেঙে যায় সে আর ঘুমাতে পারে না । এটি ইনসোমনিয়ার কারণে ঘটে।
ইংল্যান্ডের প্রভাবশালী ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুল উন্নয়নশীল দেশগুলোর নাগরিক স্বাস্থ্যের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে ‘নিদ্রাহীনতা‘-কে মহামারী হিসেবে আখ্যায়িত করে।
এর চেয়েও আশংকাজনক তথ্য হলো, বাংলাদেশে নিদ্রাহীনতার প্রকোপ অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। এদেশের ৪৩.৯ শতাংশ নারী ও ২৩.৬ শতাংশ পুরুষ বর্তমানে নিদ্রাহীনতায় ভুগছে। (sleep Problem: Emerging Global Epidemic, Journal of Sleep/Volume 35)
আর এই রোগ নিরাময়ে স্লিপিং পিল কোনো দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়। বরং শিথিলায়ন মেডিটেশন চর্চা দিতে পারে সুনিদ্রা ও সুস্বাস্থ্য।
জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন ইন্টারনাল মেডিসিনে এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। যা আবার প্রকাশিত হয়েছে হার্ভার্ড হেলথ পাবলিকেশনে।
৪৯ জন মধ্যবয়সী অনিদ্রায় ভোগা মানুষকে নিয়ে এ গবেষণাটি চালানো হয়। দেখা যায়, প্রতি সপ্তাহে দুঘণ্টা করে ৬ সপ্তাহ মেডিটেশন করার পর বাকিদের তুলনায় তাদের অনিদ্রার সমস্যা কমে গেছে, বিষণ্নতা এবং অবসাদের কবলেও তারা অনেক কম পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ আমেরিকায় মেডিকেল গবেষণা পরিচালনার সর্বোচ্চ সরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানে ১৯৯৬ সালে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয় অনিদ্রার ওপর শিথিলায়নের প্রভাবের ওপর এ যাবৎ যত গবেষণা হয়েছে সেগুলোকে রিভিউ করার জন্যে এবং দেখার জন্যে যে, অনিদ্রার প্রচলিত চিকিৎসার সঙ্গে মেডিটেশনকে যোগ করা ফলপ্রসূ হবে কিনা। দেখা যায় যে, তা ফলপ্রসূ।
১৯৯৯ সালে গবেষক মরিন একইরকম সমীক্ষায় দেখতে পান যে, “আমেরিকান সাইকোলজিকেল এসোসিয়েশন ফর ইনসমনিয়া” কর্তৃক প্রদত্ত অনিদ্রা দূরীকরণের যে চিকিৎসাপদ্ধতিগুলো উল্লেখ করা হয়েছে তার প্রত্যেক পদ্ধতির মূলই হচ্ছে মেডিটেশন।
আরেক গবেষণায় মরিন দেখেন শেষরাত্রির অনিদ্রা দূর করতে মেডিটেশন অত্যন্ত কার্যকরী এবং যে-কোনো ওষুধের (ঘুমের বড়ি) থেকে এটি অনেকগুণ ফলপ্রসূ।