একটা সময় ছিলো যখন দিনশেষে বাড়ি ফিরে পরিবারের সবাই একসাথে বসতো, স্কুলে কিংবা অফিসে সারাদিন কী হয়েছে, না হয়েছে সেসব গল্প হতো। আর এখন? সন্ধ্যার পর মা বসলেন হিন্দি সিরিয়াল দেখতে, ছেলে বসলো ফেসবুকে, বাবা ল্যাপটপ নিয়ে বসলেন, আর মেয়ে ছুটলো এসএমএস করতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত এসবের ফলাফল কী? আমরা আসলে বুঝতেই পারছি না, কীভাবে আমরা নিজেদের জীবনকে ক্রমশ জটিল করে তুলছি।
আমাদের জীবন এখন হয় পড়েছে প্রযুক্তিনির্ভর। সর্বক্ষেত্রে নিত্যনব প্রযুক্তির ছোঁয়া জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে সত্যি, কিন্তু এর যথেচ্ছ ব্যবহার আমাদের জীবন থেকে লুপ্ত করে দিয়েছে সব রহস্যময়তা আর রোমাঞ্চকর অনুভূতিগুলো। সবাই মিলে যেন ঢুকে পড়েছি একটা উৎকট হাস্যকর বাস্তবতার যুগে। কিন্তু জীবন তো রহস্যময়। সে রহস্যময়তা অনেক আনন্দেরও বটে।
নতুন নতুন প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করবো ঠিকই, কিন্তু তা যেন হয় যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকুই। কারণ, আধুনিক প্রযুক্তির যথেচ্ছ ব্যবহার আমাদের নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, অশান্তি বাড়াচ্ছে। প্রযুক্তি কখনো মানুষকে শান্তি দিতে পারে না। তা-ই যদি পারতো, তবে আমেরিকানরা হতো পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী জাতি। সেখানে তো ফেসবুক-ইন্টারনেটসহ সব ধরনের প্রযুক্তি আরো সহজলভ্য; কিন্তু আজকে হাজার হাজার ডলার খরচ করে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে আমেরিকানরাই।
আমার খুব ভালো লাগে যে, কোয়ান্টাম এসব ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করে তুলছে। একজন মনোচিকিৎসক হিসেবে আমি যে কাউন্সেলিং করি, গুরুজী সেটাই করছেন আরো বড় পরিসরে। অনেকেই আমাকে বলেছেন, কোয়ান্টামে গিয়ে তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।
জীবনে চলার পথে ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উত্থানপতন এবং নানা ঘাত-প্রতিঘাত, দুঃখ, বিষণ্নতা এগুলো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এর মধ্যেও মানুষকে একটু শান্তি দিতে পারা, ভালো থাকার সাহস যোগানো এ তো অনেক বড় ব্যাপার। কোয়ান্টাম সে কাজটিই সুন্দরভাবে করে যাচ্ছে। ব্যক্তিমানুষের উপকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবামূলক কাজের মধ্য দিয়ে কোয়ান্টাম মানুষকে সামষ্টিক কল্যাণের পথে উদ্বুদ্ধ করছে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ একদিন অবশ্যই এ কাজের মূল্যায়ন করবে।