দুঃখী মানুষের দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান অনেক পেছনে
সুখ এবং দুঃখ এটা শুধু এখন পরিবারে সীমিত নাই, এটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ও এটা বিস্তৃতি ঘটেছে।
সুখেরও ব্যারোমিটার আছে দুঃখের ব্যারোমিটার আছে। তো ব্যারোমিটার হিসেবের খাতা একেকজনের কাছে একেকরকম। পরিমাপ-দণ্ড একেকজনের একেকরকম।
তো এর মধ্যে একটি পরিমাপ-দণ্ড হচ্ছে হাংকে, তো তিনি একজন অর্থনীতিবিদ।
তিনি তার মানদণ্ডে দুঃখী দেশের তালিকা করেছেন। এটার নাম হচ্ছে হাংকিস অ্যানুয়াল মিজারি ইনডেক্স। এবং ২০২২ সালে তিনি যে সারা পৃথিবীর মিজারি ইনডেক্স করেছেন, তাতে ১৫৭টি দেশের হিসেব-নিকেশ নেয়া হয়েছে। এবং তার মধ্যে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে দুঃখী মানুষের দেশের তালিকায় আমাদের অবস্থান কিন্তু অনেক পেছনে। আমরা প্রথম দিকে এগোতে পারি নাই।
তার মানে হচ্ছে যে আমরা দুঃখী না, আমরা সুখী। এবং শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান ভারত নেপাল মিয়ানমার- এদের চেয়েও আমরা সুখী। মানে এই দেশগুলো আমাদের চেয়ে দুঃখী।
তো আমাদের চেয়ে দুঃখী দেশ কিন্তু আরো আছে, অনেক আছে যে বেলজিয়াম, কানাডা অ্যা যেখানে যাওয়ার জন্যে একেবারে নিজের নাম বদলে অন্যের স্বামীর সেজে যদি যাওয়ার সুযোগ থাকে এই সুযোগও কেউ কেউ গ্রহণ করবেন, সেই কানাডা আয়ারল্যান্ড ফিনল্যান্ড বাহরাইন নিউজিল্যান্ড সৌদি আরব এবং সুইডেনের চেয়েও সুখী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ (হাততালি)।
এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে সুখী হওয়ার পথে বাধাটা হচ্ছে বেকারত্ব। এই বাধাটা যদি না থাকত তো আমরা সবচেয়ে সুখী দেশ হতে পারতাম।
এবং সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশে কিন্তু অশিক্ষিত কোনো বেকার নাই। বরং বুয়াদের বেতন অনেক সময় অনেক কেরানির চেয়েও (হাসি) বেশি!
এবং এই শিক্ষিত বেকাররাই হচ্ছে… দেখেন কী শিক্ষা? শিক্ষার চোটে সে বেকার হয়ে যাচ্ছে। সে কোনো কাজ করার যোগ্য থাকছে না।
তো এই বেকারত্ব থেকে উঠতে পারলেই আমরা সুখী মানুষের দেশের তালিকায় এক নম্বরে চলে আসতে পারি।
এবং সুইজারল্যান্ড সুখী মানুষের তালিকায় ওপরের দিকে। সুইজারল্যান্ডের সুখী মানুষের দেশ হওয়ার কারণ হচ্ছে ঋণ ডেট ব্রেক। তারা ঋণ বিরতি দিয়েছে।
যে তারা এখন ঋণ দিচ্ছে না, তারা কাউকে ঋণ করতে উৎসাহিত করছে না। ক্রেডিটে কিনতে উৎসাহিত করছে না। ক্রেডিট কার্ড ওখানে- কার্ডের উৎসাহ নাই।
এবং গত দুই দশকে তাদের ঋণ করার পরিমাণ হচ্ছে নিম্নমুখী এবং গত দশকে ইউরোপ এবং আমেরিকার ঋণ করার পরিমাণ হচ্ছে একেবারে ঊর্ধ্বমুখী। যে কারণে আমেরিকা সুখী মানুষের তালিকায় সামনে আসতে পারছে না।
তো ঋণ ব্রেক, তারা বলে ডেট-ব্রেক। যে ঋণ থেকে বিরত থাকার ফলে, বিরত থাকতে উৎসাহিত করার ফলে, ক্রমাগতভাবে তাদের ঋণ গ্রহণের পরিমাণটা কমে যাচ্ছে এবং তারা সুখী মানুষের দেশের তালিকার সামনে চলে আসছে।
[প্যারেন্টিং ওয়ার্কশপ, ২৭ মে ২০২৩]