গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৬০তম (অধিবর্ষে ২৬১তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
ঘটনাবলি
১৯২৪ : হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির জন্যে মহাত্মা গান্ধীর অনশন।
১৯৭৪ : বাংলাদেশ, গ্রানাডা এবং গিনি-বিসাউ জাতিসংঘে যোগদান করে।
১৯৯১ : উন্মুক্ত সোর্সকোড ভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স কার্নেলের প্রথম সংস্করণ (0.01 Version) ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়।
জন্ম
১৮৬৭ : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, একজন ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী, শিল্পরসিক এবং মঞ্চাভিনেতা।
১৯১৫ : মকবুল ফিদা হুসেন, অত্যন্ত জনপ্রিয় ভারতীয় চিত্রশিল্পী।
১৯২২ : হরিপদ কাপালী, বাংলাদেশি কৃষক, হরি ধানের উদ্ভাবক।
১৯৩৪ : বিনয় মজুমদার, বাঙালি কবি।
মৃত্যু
১৯৫৪ : বাংলা ভাষার কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত।
১৯৭৭ : ইংরেজ উদ্ভাবক ও ফটোগ্রাফির পুরোধা উইলিয়াম হেনরি ফক্স টলবোট।
হরি ধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী
হরিপদ কাপালী বাংলাদেশের একজন কৃষক; যিনি হরি ধানের উদ্ভাবক। ১৯৯৬ সালে ধানের নতুন যে জাত তিনি উদ্ভাবন করেন, সেটিই পরে তার নামে ‘হরি ধান’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহের সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামে। বাবা কুঞ্জলাল কাপালী এবং মায়ের নাম সরোধনী। জন্মের পরেই তার বাবা-মা মারা যান। পরে তিনি বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং আসাননগর গ্রামে সুনীতি বিশ্বাসকে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতেই থেকে যান।
মৃত্যুর আগে বিভিন্ন পত্রিকা, বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বিবিসির কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৃষক হরিপদ নতুন জাতের ধান উদ্ভাবনের বিষয়ে জানিয়েছিলেন। নিজের ইরি ক্ষেতে একটি ব্যতিক্রমী ধান গাছ দেখে তিনি সেটাকে আলাদা করে রাখেন। এরপর সেটি থেকে বীজ সংগ্রহ করে ১৯৯২ সালে নিজ ক্ষেতে এর আবাদ করে সুফল পান। এরপর এই ধানের আবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তার নামানুসারে নতুন জাতের এই ধানের নামকরণ করা হয় ‘হরি ধান’। এই ধানের আবিষ্কার রাতারাতি হরিপদকে বিখ্যাত করে দিয়েছিল। দেশের বিভিন্ন কৃষি সংগঠন তাকে সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান করে। এমনকি নবম ও দশম শ্রেণির কৃষিশিক্ষা বইতে হরিপদ কাপালীর নাম উঠে আসে।
ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের দিকে ঝিনাইদহসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে হরি ধানের ব্যাপক আবাদ ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৫ সালে ঝিনাইদহের সাংবাদিকরা এই ধান চাষের ওপর আঞ্চলিক ও জাতীয় দৈনিকে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ১৯৯৬ সালে চ্যানেল আইয়ের বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ ঝিনাইদহে গিয়ে হরি ধানের ওপর সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করলে দেশজুড়ে হইচই পড়ে যায়। পোকামাকড়, খরা ও অতিবৃষ্টি-সহিষুষ্ণ এই জাতের ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ দেখে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এটি চাষের ওপর ছাড়পত্র দেয়। হরি ধান উদ্ভাবক স্থানীয় জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র, ঢাকা রোটারি ক্লাবসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রায় ১৬টি পদক লাভ করেন।
হরিপদ কাপালী বার্ধক্যজনিত কারণে ২০১৭ সালের ৬ জুলাই ঝিনাইদহের আসাননগর গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত