গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৩২তম (অধিবর্ষে ২৩৩তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
ঘটনাবলি
১৮২৮ : হিন্দুধর্ম সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩) ও তার বন্ধুবর্গ মিলে এক সর্বজনীন উপাসনার মাধ্যমে কলকাতায় ব্রাহ্মসমাজ শুরু করেন।
১৮৯৭ : আজকের দিনে চিকিৎসক রোনাল্ড রস অ্যানোফিলিস মশাবাহিত ম্যালেরিয়া রোগের কারণ আবিষ্কার করেছিলেন।
১৯৭০ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।
১৯৭১ : ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শহীদ হন।
জন্ম
১৮৩৩ : বেঞ্জামিন হ্যারিসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৩তম রাষ্ট্রপতি।
১৮৬৪ : রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, বাঙালি বিজ্ঞান লেখক ও অধ্যাপক।
১৮৯০ : এইচপি লাভক্রাফট, আমেরিকান ছোট গল্পের লেখক, সম্পাদক ও ঔপন্যাসিক।
১৯০১ : সরোজকুমার রায়চৌধুরী, বিশিষ্ট বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
১৯৪৪ : রাজীব গান্ধী, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
মৃত্যু
১৯০৬ : আনন্দমোহন বসু, বাঙালি রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবক।
১৯১৫ : নোবেলজয়ী (১৯০৮) জার্মান জীবাণুবিদ পল এইরলিখ।
১৯৮৬ : গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, বাংলা আধুনিক ও চলচ্চিত্র সঙ্গীতের বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার।
১৯৭১ : বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, বাংলাদেশের ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
২০১৩ : নরেন্দ্র দাভোলকার, ভারতীয় চিকিৎসক, সমাজসেবী, যুক্তিবাদী ও মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি।
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার ও সঙ্গীতসাধক। বাংলা সঙ্গীতের ভুবনে তিনি এক অসাধারণ স্রষ্টা। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে বাংলা ছায়াছবি ও আধুনিক গানের জগৎকে যারা প্রেমাবেগ-উষ্ণ রেখেছিলেন তিনি তাদের একজন। তার অসংখ্য গান আমাদের সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করেছে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৫ সালের ৫ ডিসেম্বর পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে। বাবা উদ্ভিদবিদ গিরিজাপ্রসন্ন মজুমদার ও মা সুধা মজুমদার।বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম রাখা হলো গৌরীপ্রসন্ন। প্রেসিডেন্সি কলেজের খ্যাতনামা অধ্যাপক বাবা ও গৃহিণী মায়ের আদরে বেড়ে ওঠা গৌরীপ্রসন্ন শিশুকাল থেকেই মেধাবী ছিলেন। গ্রামে শৈশব ও কৈশোর কাটিয়ে উচ্চতর পড়ালেখার জন্যে তিনি পড়ি জমালেন কলকাতায়। ভর্তি হলেন প্রেসিডেন্সি কলেজে ইংরেজি বিষয়ে। প্রথম প্রথম গ্রামের বাড়িতে আসা–যাওয়া থাকলেও একসময় পরিবারের সবাই ভারতে চলে যান। পড়ালেখায় মনোযোগী গৌরীপ্রসন্ন ইংরেজি ও বাংলা দুই বিষয়েই স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন।
মান্না দে’র গাওয়া ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ গৌরীপ্রসন্নের লেখা জনপ্রিয় একটি গান। এছাড়া ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘কী আশায় বাঁধি খেলা ঘর বেদনার বালুচরে’, ‘এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় এ কী বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু’ ‘ও নদী রে/ একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘তারে বলে দিও’, ‘আজ দু’জনার দু’টি পথ’, ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি’, ‘এই রাত তোমার আমার’, ‘পথের ক্লান্তি ভুলে’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, ‘এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে না তো মন’, ‘কেন দূরে থাকো শুধু আড়াল রাখো’, ‘আমার গানের স্বরলিপি’, ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে’ ইত্যাদি বহু বিখ্যাত গান লিখেছেন গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।
অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা বাংলা সঙ্গীত আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র এই গীতিকবি দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত