খ্যাতনামা রবীন্দ্র বিশারদ পুলিনবিহারী সেন এর মৃত্যুদিন
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৮৭তম (অধিবর্ষে ২৮৮তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৮৮২ : পাকিস্তানের লাহোরে ভারতীয় উপমহাদেশের চতুর্থ পুরাতন সর্ব্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (পাকিস্তানে প্রথম) পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৪৬ : লন্ডনে বিশ্বের ২৫টি দেশের প্রতিনিধিরা বিশ্বব্যাপী পণ্যসেবার মান বজায় রাখতে মান নির্ধারক সংস্থা গঠনের বিষয়ে একমত হন। সংস্থাটি পরের বছর কার্যক্রম শুরু করে এবং সে হিসেবে ১৪ অক্টোবর বিশ্ব মান দিবস পালিত হয়।
১৯৫৫ : পূর্ববাংলার নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখা হয়।
১৬৪৪ : উইলিয়াম পেন, পেনসিলভানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা।
১৮৯০ : ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪তম রাষ্ট্রপতি।
১৯৩০ : অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।
১৯৩০ : সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ, ভারতীয় বাঙালি লেখক।
১৯৩১ : পণ্ডিত নিখিল রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, মাইহার ঘরানার ভারতীয় ধ্রুপদী সেতার বাদক।
১৯৪১ : রমা চৌধুরী, বাংলাদের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীরাঙ্গনা।
১৯৫৬ : বাঙালি লেখক ও স্বামী বিবেকানন্দর অনুজ মহেন্দ্রনাথ দত্ত।
১৯৮৪ : রবীন্দ্রবিশারদ পুলিনবিহারী সেন।
১৯৯৯ : তাঞ্জানিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী জুলিয়াস নায়ার।
বিশ্ব মান দিবস
পুলিনবিহারী সেন ছিলেন খ্যাতনামা রবীন্দ্র বিশারদ। তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রবীন্দ্রচর্চা ও গবেষণায় অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তার চেষ্টায় রবীন্দ্র গবেষণা, সংকলন, সম্পাদনা, মুদ্রণ ও পুস্তকাকারে প্রকাশে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন রবীন্দ্র সঙ্গীতের ভাণ্ডারী ছিলেন, পুলিনবিহারী ছিলেন রবীন্দ্র রচনা ও সাহিত্যের ভাণ্ডারী।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ময়মনসিংহে। খুব ছোটবেলায় তিনি তার মা বিজনবামিনী দেবীকে হারান। বাড়ির পণ্ডিতমশাই দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের কাছে পাঠাভ্যাস শুরু। ১৯২৫ সালে তাকে শান্তিনিকেতনে পাঠানো হয়। এখান থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্বভারতীর শিক্ষা ভবনে ভর্তি হন।
শান্তিনিকেতনে আশ্রমের ঐতিহ্য ও নিয়ম অনুসারে তিনিও প্রতি বুধবার সকালে ‘উপাসনা গৃহ’ মন্দিরে যোগ দিতেন। কবির ভাষণ শুনতেন নিবিষ্ট মনে। একদিন স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে তিনি সেই ভাষণ খাতায় লিখতে শুরু করেন। পর পর কয়েকটি ভাষণ লিপিবদ্ধ করার পর তিনি কবিকে দেখান। রবীন্দ্রনাথ পড়ে দেখার পর তাকে বলেছিলেন, ‘চমৎকার লিখেছিস তো! তোর বাংলা জ্ঞান বেশ ভালো।’ অচিরেই তিনি কবির স্নেহ লাভ করেন।
স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অর্থনীতিতে এমএ পাস করেন।
কর্মজীবনের শুরু ১৯৩৫ সালে প্রবাসী পত্রিকায় কাজ করার মধ্য দিয়ে। ১৯৩৯ সাল থেকে বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগে যোগ দেন। বিস্মৃতপ্রায় রবীন্দ্ররচনার সূচি ও সংকলন তার জীবনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান। রবীন্দ্ররচনা, রবীন্দ্রজীবন ও বিস্তৃত কর্মের তথ্যনিষ্ঠ পরিচয় লিপিবদ্ধকরণ, আকর, পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র, সমকালীন পত্রপত্রিকা সংগ্রহ ও সংরক্ষণে তার আজীবন নিরলস সাধনা ছিল।
রবীন্দ্রজীবন ও সাহিত্যের ভাণ্ডারী হিসেবে অভিহিত পুলিনবিহারী সেন ১৯৮৪ সালের ১৪ অক্টোবর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত