1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন

ইতিহাসে অক্টোবর ২৯ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন।

  • সময় শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২১
  • ৮৬৮ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশের অন্যতম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩০২তম (অধিবর্ষে ৩০৩তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৯২৩ : ঐতিহাসিক ওসমানী সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটিয়ে মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসেবে ‘তুরস্ক’ রাষ্ট্রের পত্তন ঘটান।
১৯৭৪ : জর্জ ফোর ম্যানকে পরাজিত করে মোহাম্মাদ আলী ক্লে শ্রেষ্ঠ বিশ্ব মুষ্টিযোদ্ধা খেতাব অর্জন করেন।

জন্ম

১৯০৫ : হেনরি গ্রিন, ইংরেজ লেখক।
১৯১১ : অনাথবন্ধু পাঁজা, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদ বিপ্লবী।
১৯১৮ : তালিম হোসেন, বাংঙালি কবি।
১৯২০ : বারুজ বেনাসেরাফ, নোবেলজয়ী ভেনেজুয়েলার বংশোদ্ভূত আমেরিকান ঔষধ আবিষ্কারক।
১৯৪১ : বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, বাংলাদেশের অন্যতম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা।

মৃত্যু

১৯১০ : বাঙালি সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও বাগ্মী কালীপ্রসন্ন ঘোষ
১৯১১ : হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান প্রকাশক, আইনজীবী ও রাজনীতিক জোসেফ পুলিৎজার
১৯৪৯ : আর্মেনীয় ফরাসি সন্ন্যাসী, মনোবৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক জর্জ গার্দিজিয়েফ
১৯৮৮ : ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজ সংস্কারক কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান

মতিউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়; তিনি তাদের অন্যতম।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আগা সাদেক এলাকায়। বাবা মৌলভী আবদুস সামাদ, মা সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন। পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার রামনগর গ্রামে। যা এখন মতিনগর নামে পরিচিত। ৯ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে মতিউর ছিলেন ৬ষ্ঠ। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ডিস্টিংকশনসহ মেট্রিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন।

পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ছিলেন মতিউর রহমান। কর্মস্থল ছিল পাকিস্তানের করাচির মশরুর বিমানঘাঁটিতে। ১৯৭১ সালের জানুয়ারি মাসের শেষে ছুটি নিয়ে ঢাকায় আসেন। ১ মার্চ ছুটি শেষ হলেও তিনি পাকিস্তানে যাননি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে যান। ৬ মে তিনি করাচি ফিরে যান।

সেখানে যাওয়ার কিছুদিন পর মতিউর মনে মনে পরিকল্পনা করতে থাকেন কীভাবে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর একটি বিমান ছিনতাই করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া যায়। তার এ পরিকল্পনার কথা তিনি কাউকে বলেননি। এমনকি নিজের স্ত্রী মিলি রহমানকেও বুঝতে দেননি। স্ত্রীও তার হাবভাব থেকে ব্যাপারটা বুঝতে পারেননি। এর পর থেকেই তিনি সুযোগ খুঁজতে থাকেন।

দেশে আসার আগে মতিউর রহমান পাকিস্তানি শিক্ষানবিশ পাইলট রাশেদ মিনহাজকে বিমান উড্ডয়ন শিক্ষা দিতেন। গ্রাউন্ডেড হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন মিনহাজ যখন প্লেন নিয়ে উড়তে যাবেন, তখন তিনি ওই প্লেনে চড়ে সেটি ছিনতাই করবেন। বিমান ঘাঁটির কাছাকাছি সীমান্তের ওপারে আছে ভারতের এক বিমানঘাঁটি। বিমান ছিনতাই করতে পারলে তিনি সেখানে যাবেন।

দিনটি ছিল ২০ আগস্ট। শুক্রবার। বেলা ১১টায় মিনহাজের একাই টি ৩৩ বিমান নিয়ে ওড়ার শিডিউল ছিল। আর কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে এ বিমানের যোগাযোগের সাংকেতিক নাম ছিল ‘ব্লুবার্ড’। সেদিন নির্ধারিত সময় মিনহাজ বিমান নিয়ে ৪ নম্বর ট্যাক্সি-ট্র্যাক দিয়ে রানওয়েতে ঢোকার জন্যে এগিয়ে আসতে থাকেন। এ সময় মতিউরও নিজের গাড়ি চালিয়ে ওই ট্যাক্সি-ট্রাকে রওনা দেন। বিমানটি সেখানে একটি টিলার আড়ালে পৌঁছামাত্র তিনি বিমান থামানোর সংকেত দেন।

তার সংকেতে মিনহাজ বিমান থামান। কারণ, কন্ট্রোল টাওয়ার ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পরও ফ্লাইট সেফটি অফিসার কোনো বৈমানিককে বিমান থামানোর সংকেত দিলে তিনি বিমান থামাতে বাধ্য থাকেন। মতিউর সেফটি অফিসারের এ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। ফলে মিনহাজ বিমান থামাতে বাধ্য হন এবং ক্যানোপি (জঙ্গি বিমানের বৈমানিকদের বসার স্থানের ওপরের স্বচ্ছ আবরণ) খুলে কারণ জানতে চান।

মতিউর এ সুযোগে দ্রুতগতিতে বিমানের ককপিটে উঠে পড়েন। এর একটু আগে একটি যুদ্ধবিমান অবতরণ করায় তখন রানওয়ে খালিই ছিল। হকচকিত মিনহাজ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি বিমানটি রানওয়েতে নিয়ে আকাশে ওড়ান। কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানটি দিগন্তে মিলিয়ে যায়।

তবে মতিউর বিমানটির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিতে পারেননি। আকাশে ওড়ার পর দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলা অবস্থায় সেটি বিধ্বস্ত হয় এবং তারা দুজনই নিহত হন।

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের কল্পনায় ছিল কীভাবে মুক্ত হবে মাতৃভূমি। তাই তো দেশের পানে ছুটে ছিলেন নিজের প্রাণ হাতে রেখে। নিজের জীবনকে বিলিয়ে গড়েন মাতৃভূমির প্রতি তার ভালবাসার নজিরবিহীন ইতিহাস।

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com