ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক অক্ষয়চন্দ্র সরকার এর মৃত্যুদিন
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৭৫ তম (অধিবর্ষে ২৭৬ তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৯৫৮ : ঘানা ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে।
১৮৫২ : উইলিয়াম র্যামসি, নোবেলজয়ী স্কটিশ ইংরেজ রসায়নবিদ।
১৮৬৯ : মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সবচেয়ে গুরূত্বপূর্ণ নেতা।
১৮৮৯ : শিশিরকুমার ভাদুড়ী, খ্যাতনামা বাঙালি অভিনেতা ও নাট্যাচার্য।
১৯১৭ : ক্রিশ্চিয়ান ডি ডুভে, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ বংশোদ্ভূত বেলজিয়ান সাইটোলগিস্ট ও প্রাণরসায়নবিদ।
১৯৩৩ : স্যার জন বার্ট্রান্ড গার্ডন, নোবেলজয়ী ইংরেজ জীববিজ্ঞানী।
১৯০৬ : ভারতীয় চিত্রশিল্পী রাজা রবি বর্মা।
১৯১৭ : বাঙালি কবি ও সাহিত্য সমালোচক অক্ষয়চন্দ্র সরকার।
১৯২৭ : নোবেলজয়ী সুইডিশ পদার্থবিদ ও রসায়নবিদ সভান্টে অগস্ট আরেনিউস।
১৯৮৭ : নোবেলজয়ী ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ জীববিজ্ঞানী পিটার মিডাওয়ার।
আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস।
জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস : বাংলাদেশ ৷
জাতীয় পথশিশু দিবস: বাংলাদেশ।
অক্ষয়চন্দ্র সরকার ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক। রায়বাহাদুরের পুত্র হয়েও ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের প্রবল সমর্থক অক্ষয়চন্দ্র দেশীয় শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও স্বায়ত্তশাসনের উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষপাতী ছিলেন।
অক্ষয়চন্দ্র সরকার জন্মগ্রহণ করেন ১৮৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর হুগলী জেলার চুঁচুড়ায় কায়স্থ পরিবারে। বাবা গঙ্গাচরণ সরকার।
১৯৬৭ সালে বিএ পাশ করেন এবং ১৮৬৮ সালে বিএল করে বহরমপুরে ওকালতি করেন। এ সময় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বহরমপুরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে এলে অক্ষয়চন্দ্র তার সঙ্গে পরিচিত হন। এ পরিচয় প্রগাঢ় বন্ধুত্বে পরিণত হয়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় বঙ্গদর্শন (১৮৭২) প্রকাশিত হলে
অক্ষয়চন্দ্র সরকার তার অন্যতম লেখক হন। অক্ষয়চন্দ্রের প্রথম রচনা ‘উদ্দীপনা’ এতে প্রকাশিত হয়। এ সময়ে তিনি নিজেও একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা সাধারণী (১৮৭৩) সম্পাদনা করেন। এ পত্রিকাটি তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে সতেরো বছর সম্পাদনা করেন।
১৮৭৬ সালে ‘ভারত-সভা’ প্রতিষ্ঠিত হলে অক্ষয়চন্দ্র সরকার এর প্রথম সহকারী যুগ্মসম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি তিন বার (১৮৯৭, ১৮৯৮ ও ১৯১৩ সালে) বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের সহসভাপতি ছিলেন। বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের উদ্যোগে ১৩১৮ সালের ১৯-২১ ফাল্গুন চুঁচুড়ায় পঞ্চম বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলন হয়।
অক্ষয়চন্দ্র সরকার এর অভ্যর্থনা-সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন। পরের বছর ৯-১০ চৈত্র চট্টগ্রামে ষষ্ঠ বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলন অনুষ্ঠিত হলে, তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হন।
বঙ্গদর্শন পত্রিকার লেখক হিসেবে অক্ষয়চন্দ্র সরকারের সাহিত্যিক-খ্যাতি অর্জিত হলেও, সারদাচরণ মিত্রের সঙ্গে যৌথ সম্পাদনায়-প্রাচীন কাব্যসংগ্রহ, নিজের লেখা গোচারণের মাঠ; যা যুক্তাক্ষর বর্জিত পয়ার ছন্দে লেখা পলিচিত্র এবং নবজীবন পত্রিকা সম্পাদনা তাকে সর্বসাধারণের মধ্যে সমধিক পরিচিত করে তোলে।
অক্ষয়চন্দ্র সরকারের অন্যান্য রচনার মধ্যে রয়েছে সমাজ-সমালোচনা, সংক্ষিপ্ত রামায়ণ, সনাতনী, কবি হেমচন্দ্র ইত্যাদি।
নবজীবন সম্পাদনাকালেই অক্ষয়চন্দ্র সরকার বিশেষ করে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভক্তিমান শিষ্য হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে অক্ষয়চন্দ্র সরকার সাহিত্য রচনায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভাষারীতি অনুসরণ করলেও তার নিজস্বতা ছিল।
তার আত্মজীবনী পিতা-পুত্র গ্রন্থে তার ভাষার বিশিষ্টতা যেমন লক্ষ করা যায়, তেমনি লক্ষ করা যায় সেকালের সামাজিক ও সাহিত্যিক ঘটনাবলি।
অক্ষয়চন্দ্র সরকার ১৯১৭ সালের ২ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত