1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসে আগস্ট ১১- বাঙালি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু এর মৃত্যুদিন

  • সময় বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১
  • ১২১১ বার দেখা হয়েছে

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বাঙালি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু এর মৃত্যুদিন

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২২৩তম (অধিবর্ষে ২২৪তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৯০৮ : দেশপ্রেমিক ও বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি কার্যকর হয়।
১৯০৯ : রেডিওর বিপদবার্তা বা এসওএস-এর ব্যবহার শুরু হয়।
১৯২২ : বাংলাদেশের জাতীয় কবি ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

জন্ম

১৯৩১ : মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার।
১৯৩৭ : সালমা সোবহান, বাংলাদেশের প্রখ্যাত ব্যারিস্টার, শিক্ষক, মানবাধিকারকর্মী।
১৯৩৮ : চঞ্চল কুমার মজুমদার, শান্তিস্বরূপ ভটনাগর পুরস্কারে সম্মানিত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী।

মৃত্যু

১৯০৮ : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বাঙালি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু
১৯৩৫ : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বেসরকারি উপাচার্য স্যার দেবপ্রসাদ সর্বাধিকারী
১৯৭০ : ভারতের মহারাষ্ট্রের একজন নৃবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ এবং লেখক ইরাবতী কার্বে
১৯৯০ : বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ননীগোপাল চক্রবর্তী
২০১২ : বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাফায়াত জামিল বীর বিক্রম
২০১৮ : ভারতীয়-নেপালীয় বংশোদ্ভূত ত্রিনিদাদীয় সাহিত্যিক বিদ্যাধর সূর্যপ্রসাদ নাইপল

ক্ষুদিরাম বসু

ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন একজন ভারতীয়-বাঙালি বিপ্লবী; যিনি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয় মুজফফপুর সংশোধনাগারে। স্বাধীনতার স্বপ্নে মৃত্যুভয়কেও বশ করেছিলেন তিনি। ভারতের কনিষ্ঠতম বিপ্লবী অভিধায় অভিষিক্ত হন তিনি।

জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরের কাছাকাছি (বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে। বাবা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ছিলেন নাড়াজোলের তহসিলদার। মায়ের নাম লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। তিন মেয়ের পর মায়ের চতুর্থ সন্তান ক্ষুদিরাম। দুই ছেলে অকালে মৃত্যুবরণ করেন, তাই ছোট ছেলের মৃত্যুর আশঙ্কায় লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তাকে তার বড় দিদির কাছে তিন মুঠো খুদের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে পরবর্তী সময়ে তার নাম ক্ষুদিরাম রাখা হয়। ক্ষুদিরামের বয়স যখন মাত্র পাঁচ-ছয় বছর তখন তিনি তার মাকে হারান। পরের বছর পর তার বাবার মৃত্যু হয়। এরপর তিনি বড় বোন অপরূপার কাছে আশ্রয় নেন।

গ্রামের বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষার পর তমলুকের ‘হ্যামিলটন’ স্কুল ও তারপর ১৯০৩ সালে মেদিনীপুরের ‘কলেজিয়েট’ স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি শিক্ষা লাভ করেন। পড়াশুনায় মেধাবী হলেও কিশোরোচিত দুরন্তপনা ও দুঃসাহসিক কার্যকলাপের প্রতি তার ঝোঁক ছিল।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী ও স্বদেশী আন্দোলন ক্ষুদিরামের মতো স্কুলের ছাত্রদেরও প্রভাবিত করে এবং পরিণামে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে সত্যেন বসুর নেতৃত্বে এক গুপ্ত সমিতিতে যোগ দেন। আরও কয়েকজনের সঙ্গে সেখানে তিনি শরীরচর্চার সাথে সাথে নৈতিক ও রাজনৈতিক শিক্ষা পেতে শুরু করেন। এ সময়ে পিস্তল চালনাতেও তার হাতেখড়ি হয়। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ইংল্যান্ডে উৎপাদিত কাপড় পোড়ানো ও ইংল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত লবণে বোঝাই নৌকা ডোবানোর কাজে ক্ষুদিরাম অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তী দুই বছর তিনি নানা অভিযানে অংশ নেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। পালিয়ে যান। বিক্ষোভ করেন।

১৯০৮ সালে বাঙালিদের অত্যন্ত ঘৃণার পাত্রে পরিণত হওয়া কলকাতার প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যুগান্তর বিপ্লবী দল এবং প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরামের উপর এ দায়িত্ব পড়ে। কর্তৃপক্ষ কিংসফোর্ডকে কলকাতা থেকে দূরে মুজাফফরপুরে সেশন জাজ হিসেবে বদলি করেছিলেন। দুই যুবক ৩০ এপ্রিল স্থানীয় ইউরোপীয় ক্লাবের গেটের কাছে একটি গাছের আড়ালে অতর্কিত আক্রমণের জন্যে ওত পেতে থাকেন। কিন্তু কিংসফোর্ডের গাড়ির মতো অন্য একটি গাড়িতে ভুলবশত বোমা মারলে গাড়ির ভেতরে একজন ইংরেজ মহিলা ও তার মেয়ে মারা যান। এ ঘটনার পর ক্ষুদিরাম ওয়ানি রেলস্টেশনে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তিনি বোমা নিক্ষেপের সমস্ত দায়িত্ব নিজের উপর নিয়ে নেন। কিন্তু অপর কোনো সহযোগীর পরিচয় দিতে বা কোনো গোপন তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য অনুসারে, মুজফফরপুর কারাগারে ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ফাঁসিতে তার মৃত্যৃ হয়

ফাঁসির সময় ক্ষুদিরাম নির্ভয়ে হাসতে হাসতে উঠে যান ফাঁসির মঞ্চে। স্বাধীনতার জন্যে, দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্যে তিনি কাজ করেছেন, জীবন বাজি রেখেছেন। ফাঁসিতি মৃত্যু হলেও তিনি আজো বেঁচে রয়েছেন। বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল।

ক্ষুদিরামকে নিয়ে লেখা গানটিতে তার অবদান আজো মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে-

‘একবার বিদায় দে-মা ঘুরে আসি।
হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে জগৎবাসী।
কলের বোমা তৈরি করে
দাঁড়িয়ে ছিলাম রাস্তার ধারে মাগো,
বড়লাটকে মারতে গিয়ে
মারলাম আরেক ইংল্যান্ডবাসী।’

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com