বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রথিতযশা কবি ও অনুবাদক অরুণ মিত্র এর মৃত্যুদিন
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৩৪তম (অধিবর্ষে ২৩৫তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৯৩২ : বিবিসি প্রথম নিয়মিত টিভি সম্প্রচার শুরু করে।
১৯৮৯ : নেপচুন গ্রহে প্রথম বলয় দেখতে পাওয়া যায়।
১৯১৫ : শম্ভু মিত্র, বাংলা তথা ভারতীয় নাট্যজগতের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব।
১৯৫৮ : মুকুল চৌধুরী, কবি ও গীতিকার।
১৯৭৭ : ইংরেজ বংশোদ্ভূত কানাডীয় অভিনেতা ও গায়ক সেবাস্টিয়ান কাবট।
১৯৮২ : ভারতের সমাজ সংস্কারক এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সংগঠক একনাথ রানাডে।
২০০০ : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রথিতযশা কবি ও অনুবাদক অরুণ মিত্র।
অরুণ মিত্র ছিলেন আধুনিক বাংলার একজন বিশিষ্ট কবি। তিনি ফরাসি সাহিত্যের বিশেষজ্ঞ ছিলেন। জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৯ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশের যশোর শহরে। বাবা হীরালাল মিত্র ও মায়ের নাম যামিনীবালা দেবী।
কলকাতার বঙ্গবাসী স্কুলে শিক্ষাজীবনের শুরু। ১৯২৬ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৮ সালে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইসিএস পরীক্ষা ও ১৯৩০ সালে রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে ডিস্টিংশনসহ বিএ পাস করেন। এই সময়ে সাহিত্যের চেয়ে সঙ্গীতের প্রতি তার অধিক আকর্ষণ বোধ করেন।
এই সময়েই ভিক্টর হুগোর উপন্যাস ইংরেজি অনুবাদে পড়ে ফরাসি সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ফরাসি ভাষা শিখতে শুরু করেন। বিএ পাস করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পড়া শুরু করেন।
কিন্তু বাবা-মায়ের জ্যেষ্ঠপুত্র হওয়ায় সাংসারিক দায়দায়িত্বের চাপে এমএ পড়া অসমাপ্ত রেখেই ১৯৩১ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি গ্রহণ করতে বাধ্য হন। পরিচয় ঘটে বিভিন্ন সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, কবি ও লেখক গোষ্ঠীর সঙ্গে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরির সময়েই মার্ক্সবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন অরুণ মিত্র। সেই সূত্রে ‘বঙ্গীয় প্রগতি লেখক সংঘ’ ও ‘সোভিয়েত সুহৃদ সমিতি’র সঙ্গে তার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আনন্দবাজার ত্যাগ করার পর তিনি যোগ দেন সতেন্দ্রনাথ মজুমদার সম্পাদিত ‘অরণি’ পত্রিকায়।
ফরাসি সরকারের আহ্বানে ১৮৪৮ সালে বৃত্তি গ্রহণ করে গবেষণার্থে ফ্রান্স যাত্রা করেন। প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার গবেষণা কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ডক্টরেট লাভ করেন। ফরাসি সাহিত্য অধ্যয়নের পর ১৯৫২ সালে দেশে ফিরে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপকের পদে বৃত হন। এরপর দীর্ঘ বিশ বছর সপরিবারে এলাহাবাদেই বসবাস করেন। ১৯৭২ সালে কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করে ফিরে যান কলকাতায়।
তার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘প্রান্তরেখা, উৎসের দিকে, ঘনিষ্ট তাপ, শুধু রাতের শব্দ নেই, খুঁজতে খুঁজতে এতো দূর ইত্যাদি।
১৯৯০ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানিক ডি. লিট. উপাধিতে ভূষিত করে। ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যে নিরন্তর গবেষণার জন্যে ১৯৯২ সালে ফরাসি সরকার তাকে ‘লিজিয়ন অফ অনার’ সম্মানে ভূষিত করে। ২০০০ সালের ২২ আগস্ট কলকাতায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত