বঙ্গীয় শিল্পকলার ভারতীয় চিত্রকর সুধীররঞ্জন খাস্তগীর এর মৃত্যুদিন
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ১৫৭তম (অধিবর্ষে ১৫৮তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৮৪৪ : খ্রিস্টীয় যুবাদের দেহ মন চেতনা বিকাশের জন্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াইএমসিএ (YMCA) লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হয়
১৯৭২ : বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইকুয়েডর
১৭৯৯ : আলেক্সান্দ্র পুশকিন, আধুনিক রাশিয়ান সাহিত্যের জনক হিসেবে আখ্যায়িত
১৮৫০ : কার্ল ফের্ডিনান্ড ব্রাউন, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী এবং উদ্ভাবক
১৯১১ : নীহাররঞ্জন গুপ্ত, ভারতের বাঙালি চর্মচিকিৎসক ও ঔপন্যাসিক
১৮৬৭ : কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম বাঙালি বিচারপতি শম্ভুনাথ পণ্ডিত
১৯১৯ : বাঙালি বিজ্ঞান লেখক ও অধ্যাপক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী
১৯৭১ : ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অন্যতম ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা লাবণ্যপ্রভা দত্ত
১৯৭৪ : বঙ্গীয় শিল্পকলার ভারতীয় চিত্রকর সুধীররঞ্জন খাস্তগীর
২০১৪ : বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহবুবুল আলম
সুধীররঞ্জন খাস্তগীর ছিলেন বঙ্গীয় শিল্পকলার ভারতীয় চিত্রকর ও চিত্রকলা প্রশিক্ষক। জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর অধুনা বাংলাদেশের চট্টগ্রামে।
বাবা সত্যরঞ্জন খাস্তগীরের আবাসস্থল ছিল তৎকালীন বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের)গিরিডি। সেখান থেকে প্রবেশিকা পাস করে আইএ পড়তে শান্তিনিকেতনে আসেন তিনি। কিন্তু আই.এ পরীক্ষা না দিয়ে নন্দলাল বসুর অধ্যক্ষতাকালে কলাভবনে কয়েক বছর চিত্রাঙ্কনের সঙ্গে ভাস্কর্য শিক্ষা নেন। সেখানে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছেও ভারতীয় রীতির শিল্পকর্মের শিক্ষা নেন এবং ঠাকুর বাড়ির সংস্পর্শে আসেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রতি তাই তার স্বাভাবিক আকর্ষণ ছিল। ভালো বাঁশিও বাজাতে পারতেন তিনি।
কলাভবনের পাঠ সমাপ্ত করে তিনি ভারত পর্যটনে বেড়িয়ে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে গেলেন গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া স্কুলে এবং ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে দেরাদুনের দুন স্কুলে। সেখানেই তিনি পরবর্তী দীর্ঘ ২০ বছর শিক্ষকতা করেন। এর মধ্যে এক বছরের জন্যে তিনি ইউরোপে যান। লন্ডনের রয়াল সোসাইটি অব আর্টস-এর ফেলো নির্বাচিত হন। দেরাদুনে অবস্থান কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ইত্যাদির উপর নির্দেশনার কাজও করেন তিনি এবং এ সময়ে জাতীয় স্তরে খ্যাতি অর্জন করেন।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের আমন্ত্রণে লক্ষৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সরকারি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষের পদে যোগদান করেন ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। তার ভাস্কর্য রচনা মূলত ব্রোঞ্জ, প্লাস্টার ও কংক্রিটের মাধ্যমে। মনঃকল্পিত ভাস্কর্যের সাথে বহু বিশিষ্ট বিদেশি ও ভারতীয়ের মুখাকৃতি রচনা করেন তিনি। চিত্রগুলো ভারতীয় পুরাণ কাহিনী আধারিত, নারী অবয়বে ও মনোমুগ্ধকর পল্লীদৃশ্যে পরিস্ফুট। তার রচিত গ্রন্থগুলো হলো- ‘ডানসেস ইন লিনোকাট’, ‘পেন্টিংস’, ‘স্কাল্পচার’, ‘পেন্টিংস অ্যান্ড ড্রয়িংস্’ ইত্যাদি।শিশুদের জন্য লেখেন-‘তালপাতার সেপাই’, আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ও জীবনকথা দুটি বই হলো ‘মাইসেল্ফ’ এবং ‘আমার এ পথ’। ভারতীয় শিল্পকর্মের জন্যে ভারত সরকার তাকে ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে।
সুধীররঞ্জন খাস্তগীর ৬৬ বছর বয়সে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুন কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত