1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ অপরাহ্ন

ইতিহাসে জুলাই ২৭ বাংলা লোকসঙ্গীত শিল্পী আব্দুল আলীম এর জন্মদিন

  • সময় মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১
  • ১১৪৬ বার দেখা হয়েছে

বাংলা লোকসঙ্গীত শিল্পী আব্দুল আলীম এর জন্মদিন

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২০৮তম (অধিবর্ষে ২০৯তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৬৯৪ : ব্যাংক অব ইংল্যান্ড অনুমোদন লাভ করে।
১৮৬৮ : আটলান্টিক টেলিগ্রাফ কেবল স্থাপনের কাজ শেষ হয়।
১৯২১ : টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদলের প্রধান বায়োকেমিস্ট ড. ফ্রেডরিখ বেন্টিং হরমোন ইনসুলিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেন।
১৯৭১ : প্রশাসনের সুবিধার্থে মুজিবনগর সরকার সমগ্র দেশকে ৯টি অঞ্চলে ভাগ করে।
২০০৭ : ঢাকা-মিয়ানমার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চুক্তি স্বাক্ষর।

জন্ম

১৮৩৫ : জোযুয়ে কার্দুচ্চি, নোবেল বিজয়ী ইতালীয় কবি এবং শিক্ষক।
১৮৫৭ : আর্নেস্ট টমসন ওয়ালিস, প্রাচ্যবিদ ও জাদুঘর বিশেষজ্ঞ।
১৮৮১ : হান্স ফিশার, নোবেলবিজয়ী জার্মান জৈবরসায়ন বিজ্ঞানী।
১৯১৩ : কল্পনা দত্ত, ভারতীয় বিপ্লবী এবং রাজনীতিবিদ।
১৯২২ : নির্মলেন্দু চৌধুরী, ভারতীয় বাঙালি লোকসঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার; বাংলার লোকসঙ্গীতের প্রসারে ও প্রচারে যার অবদান অসীম।
১৯৩১ : আব্দুল আলীম, বাংলা লোকসঙ্গীত শিল্পী।

মৃত্যু

১৮৪৪ : ইংরেজ রসায়নবিদ, আবহাওয়াবিজ্ঞানী ও পদার্থবিদ জন ডাল্টন
১৯৩১ : ভারতের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী কানাইলাল ভট্টাচার্য
১৯৪৬ : মার্কিন ঔপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার ও শিল্প সংগ্রাহক গারট্রুড স্টেইন
১৯৯২ : ভারতীয় জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালক আমজাদ খান
২০১৫ : ভারতীয় বিজ্ঞানী, ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম

শিল্পী আব্দুল আলীম

আব্দুল আলীম ছিলেন বাংলাদেশের লোক সঙ্গীতের একজন জনপ্রিয় শিল্পী। যিনি লোক সঙ্গীতকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে জীবন জগৎ এবং ভাববাদী চিন্তা একাকার হয়ে গিয়েছিল। ভাটিয়ালি ছাড়াও মারফতি-মুর্শিদী গানে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়। তার দরদভরা কণ্ঠে মরমিধারার গান অতি চমৎকারভাবে ফুটে উঠত। তার গাওয়া জনপ্রিয় একটি গান ‘হলুদিয়া পাখি সোনারই বরণ, পাখিটি ছাড়িল কে’।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩১ সালের ২৭ জুলাই বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের তালিবপুর গ্রামে। বাবা মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। বাল্যকাল থেকেই আব্দুল আলীম সঙ্গীতের প্রতি প্রবল অনুরাগী ছিলেন। গ্রামোফোন রেকর্ডে গান শুনে কিংবা অন্যের গান শুনে শুনে গান গাওয়া শুরু। বিভিন্ন পালা পার্বণে গান গেয়ে অন্যদের গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন। পরবর্তীতে সঙ্গীতের গুরু হিসেবে ছিলেন সৈয়দ গোলাম আলী।

মাত্র তেরো বছর বয়সে আব্দুল আলীমের গানের প্রথম রেকর্ড হয়। গান দুটি ছিল- ‘তোর মোস্তফাকে দে না মাগো’ এবং ‘আফতাব আলী বসলো পথে’। এতো অল্প বয়সে গান রেকর্ড হওয়া সত্যিই বিস্ময়কর! পরে তা আর বিস্ময় হয়ে থাকেনি, তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলার লোক সঙ্গীতের এক অবিসংবাদিত-কিংবদন্তি পুরুষ। কলকাতায় তিনি আব্বাসউদ্দিন ও কাজী নজরুল ইসলামের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে গান করেছেন। তিনি বেদারউদ্দিন আহমদ, ওস্তাদ মোহাম্মদ খসরু, মমতাজ আলী খান, আব্দুল লতিফ, কানাইলাল শীল, আব্দুল হালিম চৌধুরী প্রমুখের কাছে লোক ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উপর দীক্ষা নিয়েছেন।

আব্দুল আলীম দেশ বিভাগের পরে ঢাকায় চলে আসেন এবং রেডিওতে স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে গাইতে শুরু করেন। পরে টেলিভিশন সেন্টার চালু হলে সেখানেও সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করেন। লেটো দল এবং যাত্রা দলেও কাজ করেছেন। এছাড়াও তৎকালীন বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’সহ বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রে গান করেছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রটি হলো ‘লালন ফকির’। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০টির মতো গান রেকর্ড হয়েছিল তার। আব্দুল আলীম তার আধ্যাত্মিক ও মরমী মুর্শিদী গানের জন্যে অমর হয়ে থাকবেন। কবি ও বাংলার লোক সঙ্গীতের গবেষক কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘সমাজাটকে যারা জাগিয়েছেন আব্দুল আলীম তাদের একজন’। পেশাগত জীবনে আবদুল আলীম ঢাকার সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় লোকগীতি বিভাগে অধ্যাপনাও করেন।

তিনি প্রায় ৫০টি ছবিতে নেপথ্যে কন্ঠশিল্পী ছিলেন। এর মধ্যে এদেশ তোমার আমার, জোয়ার এলো, সুতরাং, পরশমণি, বেদের মেয়ে, রূপবান, সাত ভাই চম্পা, পদ্মা নদীর মাঝি উল্লেখযোগ্য। তার গাওয়া জনপ্রিয় কয়েকটি গান হলো- পরের জায়গা পরের জমি, নাইয়া রে নায়ের বাদাম তুইলা, সর্বনাশা পদ্মা নদী, হলুদিয়া পাখি, মেঘনার কূলে ঘর বাঁধিলাম, এই যে দুনিয়া, দোল দোল দুলনি, মনে বড় আশা ছিল যাবো মদীনায় এবং উজান গাঙের নাইয়া ইত্যাদি।

আব্দুল আলীম প্রায় পাঁচশ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু গান তার নিজের রচনা। বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি মাধ্যমে গান গেয়ে তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এছাড়া কলকাতা, বার্মা, চীন ও প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করে বিদেশিদের কাছে তিনি বাংলা লোকসঙ্গীতের পরিচয় তুলে ধরেন। তার সাত সন্তানের মধ্যে তিন সন্তান জহির আলীম, আজগর আলীম ও নূরজাহান আলীম সঙ্গীত শিল্পী।

পুরস্কার ও সম্মাননা

আব্দুল আলীম বেশ কয়েকটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- একুশে পদক, পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার। এছাড়াও পাকিস্তান মিউজিক কনফারেন্স, লাহোরে সঙ্গীত পরিবেশন করে আব্দুল আলীম পাঁচটি স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৭ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে সম্মানিত করে।

কিংবদন্তি এই শিল্পী ১৯৭৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com