1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০২:২৭ অপরাহ্ন

ইতিহাসে ডিসেম্বর ১০ বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন মৃত্যুবরন করেন ।

  • সময় শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৯৫৩ বার দেখা হয়েছে

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩৪৪তম (অধিবর্ষে ৩৪৫তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৮৬৮ : বিশ্বের প্রথম ট্রাফিক বাতি বসানো হয় লন্ডনের প্যালেস অব ওয়েস্টমিনস্টারের সামনে। সেগুলো লাল ও সবুজ গ্যাস বাতি ছিল।
১৮৮৪ : মার্ক টোয়েনের বর্ণবাদবিরোধী উপন্যাস ‘অ্যাডভেঞ্চার অব হাকলবেরি ফিন’ প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৮৯৮ : কিউবা স্পেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯০১ : আলফ্রেড নোবেলের অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।
১৯০৬ : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট প্রথম আমেরিকান হিসেবে নোবেল পুরস্কার পান।
১৯৪৮ : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণা দেয় এবং মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক অধিকারের বিষয়টি অনুমোদন করে। এই দিন থেকেই বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করা শুরু হয়।

জন্ম

১৮১৫ : অ্যাডা লাভলেস, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ধারণার একজন প্রবর্তক।
১৮২১ : নিকোলাই নেক্রাসভ, রাশিয়ান কবি ও সমালোচক।
১৮৩০ : এমিলি ডিকেনসন, বিখ্যাত মার্কিন কবি।
১৮৭০ : স্যার যদুনাথ সরকার, স্বনামধন্য বাঙালি ইতিহাসবিদ।
১৮৮৮ : প্রফুল্ল চাকী, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা।
১৯২৫ : সমর দাস, প্রখ্যাত বাঙালি সংগীত পরিচালক।
১৯৩৪ : হাওয়ার্ড মার্টিন টেমিন, নোবেলবিজয়ী আমেরিকান জেনেটিসিস্ট ও অধ্যাপক।

মৃত্যু

১৮৯৬ : সুইডিশ বিজ্ঞানী ও নোবেল পুরস্কার প্রবর্তক আলফ্রেড নোবেল
১৯৩৬ : নোবেলজয়ী ইতালিয়ান লেখক ও নাট্যকার লুইগি পিরান্ডেলো
১৯৫৩ : ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ পণ্ডিত ও অনুবাদক আবদুল্লাহ ইউসুফ আলী। আল কোরআনের ইংরেজি অনুবাদক হিসেবে সমগ্র বিশ্বে খ্যাতি লাভকারী মুসলিম ব্যক্তিত্ব।
১৯৭১ : বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন
১৯৯৫ : স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রথম কণ্ঠদাতা আবুল কাসেম সন্দ্বীপ
১৯৯৮ : বাঙালি ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী কিরণময় সেন
২০১০ : নোবেলজয়ী আমেরিকান রসায়নবিদ ও অধ্যাপক জন বেনেট ফেন
২০১২ : বাংলাদেশের ১৩ তম রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ

দিবস

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস

বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন

মোহাম্মদ রুহুল আমিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীর শ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ সালের জুন মাসে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বাঘচাপড়া গ্রামে। বাবা মোহাম্মদ আজহার পাটোয়ারী এবং মা জোলেখা খাতুন। ছোটবেলায় পড়াশোনা শুরু হয় পাড়ার মক্তবে, পরে বাঘচাপড়া প্রাইমারি স্কুল এবং আমিষাপাড়া হাইস্কুলে।

১৯৫৩ সালে তিনি নৌবাহিনীতে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন এবং প্রাথমিক প্রশিক্ষণের জন্যে করাচির অদূরে মানোরা দ্বীপে পিএনএস কারসাজ-এ (নৌবাহিনীর কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) যোগ দেন। ১৯৫৮ সালে তিনি পেশাগত প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন এবং ১৯৬৫ সালে মেকানিক্যাল কোর্সের জন্যে নির্বাচিত হন। সফলভাবে কোর্স সমাপ্তির পর তিনি ইঞ্জিন রুম আর্টিফিশার নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে তিনি চট্রগ্রামে পিএনএস বখতিয়ার নৌঘাঁটিতে বদলি হন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে রুহুল আমিন মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন এবং এপ্রিল মাসে ত্রিপুরা সীমান্ত অতিক্রম করে ২নং সেক্টরে যোগদান করেন। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনের উদ্দেশ্যে সকল সেক্টর থেকে প্রাক্তন নৌ-সেনাদের আগরতলায় সংগঠিত করে নৌবাহিনীর প্রাথমিক কাঠামো গঠন করা হয়। পরে তাদের কলকাতায় আনা হয়। সেখানে সবার সাথে রুহুল আমিনও ছিলেন। ভারত সরকার বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দুটি টাগবোট উপহার দেয়। এগুলোকে কলকাতার গার্ডেন রীচ নৌ-ওয়ার্কশপে দুটি বাফার গান ও মাইন-পড জুড়ে গানবোটে রূপান্তর করা হয়। গানবোট দুটির নামকরণ হয় ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’। রুহুল আমিন নিয়োগ পান পলাশের ইঞ্জিন রুম আর্টিফিশার হিসেবে।

৬ ডিসেম্বর মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌঘাটি পিএনএস তিতুমীর দখলের উদ্দেশ্যে ‘পদ্মা’, ‘পলাশ’ ও মিত্র বাহিনীর গানবোট ‘পানভেল’ ভারতের হলদিয়া নৌঘাঁটি থেকে রওনা হয়। ৮ ডিসেম্বর সুন্দরবনের আড়াই বানকিতে বিএসএফের পেট্রোল ক্রাফট ‘চিত্রাঙ্গদা’ তাদের বহরে যোগ দেয়। ৯ ডিসেম্বর কোনো বাধা ছাড়াই তারা হিরণ পয়েন্টে প্রবেশ করেন।

১০ ডিসেম্বর সকাল নয়টায় মংলা থেকে শুরু হয় চূড়ান্ত অভিযান। ১১টার দিকে গানবোটগুলো খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে পৌঁছায়। এ সময় আকাশে দেখা যায় তিনটি জঙ্গি বিমান। শত্রুবিমান মনে করে মো. রুহুল আমিন সহযোদ্ধাদের নির্দেশ দেন বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র দিয়ে বিমান প্রতিরোধের। তার সহযোদ্ধারা দ্রুত প্রস্তুত হন। কিন্তু তাদের বহরে থাকা ভারতীয় গানবোট প্যানভেল থেকে জানানো হয় ওগুলো ভারতীয় বিমান।

বিমানগুলো কিছুটা নিচে নেমে দক্ষিণ-পশ্চিমে সাগরের দিকে যায়। ১০-১১ মিনিট পর হঠাৎ ঘুরে এসে বোমা বর্ষণ করে পদ্মার ওপর। পরক্ষণেই পলাশে।

বোমার আঘাতে মুক্তিবাহিনীর গানবোটে আগুন ধরে যায়। বিপদ বুঝে যারা আগেই পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, তারা অক্ষত থাকেন। কিন্তু রুহুল আমিনসহ অনেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গানবোটেই ছিলেন। প্রথম আঘাতেই বোমার স্প্লিন্টার লেগে তার বাঁ হাত ভেঙে যায়। তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তারই এক সহযোদ্ধা তাকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেন।

আহত রুহুল আমিন আপ্রাণ চেষ্টায় সাঁতার কেটে নদীর পুবপাড়ে পৌঁছান। সেখানে অপেক্ষা করছিল আরেক বিপদ। নদীর পুব তীরে ছিল কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা ও অনেক রাজাকার। রাজাকাররা তাকে আটকের পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। নদীতীরে পড়ে থাকে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তার মরদেহ উদ্ধার করে রূপসা নদীর পাড়ে তাকে দাফন করে এবং সেখান একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।

স্মরণ ও সম্মাননা

১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাতজন বীর সন্তানকে মরণোত্তর বীর শ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। রুহুল আমিন সেই সাতজনের অন্যতম।

রুহুল আমিনের নামে রো রো ফেরির নামকরণ করা হয়েছে। জন্মস্থান নোয়াখালীর বাগপাদুরা গ্রামের নাম পরিবর্তন করে এখন রাখা হয়েছে তার নামে আমিননগর৷ বাড়ির সামনে বীর শ্রেষ্ঠের পরিবারের দেয়া ২০ শতাংশ জমিতেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নোয়াখালী জেলা পরিষদ ৬২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছে রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার৷ রুহুল আমিনের নামে চট্টগ্রামে বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নামে অনেক পুরস্কারও প্রচলিত রয়েছে।

সূত্র : সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com