১৯২৫ : কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘লাঙ্গল’ কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়।
১৯৩৯ : ঢাকা থেকে প্রথম বেতার অনুষ্ঠান সম্প্রচার।
১৯৭১ : পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিকেলে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অবসান হয় ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৭১ : বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৭২ : বঙ্গবন্ধু সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
১৯৯১ : কাজাকিস্তান নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
১৮৪০ : উমেশচন্দ্র দত্ত, সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ।
১৮৮২ : দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ।
১৯১৭ : আর্থার সি ক্লার্ক, একজন বিখ্যাত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক এবং উদ্ভাবক।
১৯০৬ : মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, বাঙালি কবি।
১৯৪০ : মাহমুদুন্নবী, বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৪২ : হায়াৎ সাইফ, কবি।
১৯৪৭ : সিপাহী মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা।
১৯০১ : নবাব খাজা আহসানউল্লাহ।
১৯৬৫ : ইংরেজ কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার উইলিয়াম সমারসেট মম।
বিজয় দিবস, বাংলাদেশ
মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীর শ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়; তিনি তাদের অন্যতম।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার হাজিপুর গ্রামে। বাবা হাবিবুর রহমান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার ছিলেন।
মোস্তফা কামালের ছেলেবেলা তার বাবার কর্মস্থল কুমিল্লা সেনানিবাসে কেটেছে। বিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার চেয়ে সেনানিবাসে সেনাদের কুচকাওয়াজ, মার্চপাস্ট ইত্যাদি ভালো লাগতো। ক্রমেই তিনি সেনাবাহিনীর একজন সদস্য হবার স্বপ্ন দেখতে থাকেন এবং স্থির করেন সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন। ২০ বছর বয়সে হঠাৎ করেই মোস্তফা কামাল বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশে হয়ে যান। পরে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানের চতুর্থ ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি চূড়ান্ত হবার পরে তার বাবা-মা সন্ধান পান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাকে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন বীরদর্পে। ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল সিপাহি মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে ১টি মুক্তিযোদ্ধাদের দল ব্রাম্মণবাড়িয়ার দিকে এগিয়ে আসা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ঠেকানোর জন্যে আখাউড়ার দরুইন গ্রামে অবস্থান নেয়। সংখায় বেশি ও আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকাবাহিনীর সাথে মোকাবেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ছিল অদম্য মনোবল। ১৮ এপ্রিল সকাল থেকেই আকাশে মেঘ ছেয়ে রইল। ১১টার দিকে শুরু হলো প্রচণ্ড বৃষ্টি। একইসাথে শত্রুর গোলাবর্ষণ। মুক্তিযোদ্ধারও পাল্টা গুলি ছুড়তে শুরু করল। শুরু হলো সম্মুখ যুদ্ধ। মেশিনগান চালানো অবস্থায় এক মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি লাগল। মুহুর্তের মধ্যে মোস্তফা কামাল এগিয়ে এসে চালাতে লাগলেন স্টেনগান।
মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আধুনিক অস্ত্র ছিল না। সংখায়ও অনেক কম তারা। আর পাকিস্তানি সৈন্যরা সংখায় ছিল বেশি। ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত তারা। হয় সামনাসামনি যুদ্ধ করে মরতে হবে, নয় পিছু হটতে হবে। কিন্তু পিছু হটতে হলেও সময় দরকার। ততক্ষণ অবিরাম গুলি চালিয়ে শত্রুদের আটকিয়ে রাখতে হবে। কে নেবে এই মহান দ্বায়িত্ব? এমন সময় আরো একজন মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি বিঁধল। ততক্ষণে মোস্তফা কামাল সকল সহযোদ্ধাদের সরে যেতে বললেন। পরিখার মধ্যে সোজা হয়ে চালাতে লাগলেন স্টেনগান। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ছেড়ে যেতে না চাইলে তিনি আবারো সবাইকে নিরাপদে যেতে বলেন। অবিরাম গুলি চালাতে থাকেন তিনি। তার গোলাবর্ষণে শত্রুদের থামকে যেতে হয়েছে। মারা পড়েছে বেশ কয়েকজন পাক সৈন্য। ততক্ষণে দলের অন্য সদস্যরা সাবধানে পিছু হটেছেন।
একসময় মোস্তফা কামালের গুলি শেষ হয়ে যায়। হঠাৎ করেই একটি গুলি লাগে তার বুকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। মৃত্যুবরণ করেন মোস্তফা কামাল। তার এমন বীরত্বের কারণে সহযোদ্ধাদের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। দরুইনের মাটিতে সমাহিত করা হয় জাতির এই শ্রেষ্ঠ বীরকে। তিনি আমাদের গর্ব ও গৌরব।
১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল ব্রাম্মণবাড়িয়ায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে তিনি শাহীদ হন।
সূত্র : সংগৃহীত