প্রথম ভারতীয় বাঙালি বিমানচালক এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একমাত্র ভারতীয় বৈমানিক ইন্দ্রলাল রায় জন্মগ্রহণ করেন।
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩৩৬তম (অধিবর্ষে ৩৩৭তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৮১৫ : নেপালের রাজা ও ব্রিটিশদের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত।
১৮২৩ : স্বাধীনচেতা মার্কিন রাষ্ট্রপতি জেমস মনরো তার বিখ্যাত ও মনরো নীতি ঘোষণা করেন।
১৯৯৭ : পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৮৮৫ : জর্জ রিচার্ডস মিনট, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান চিকিৎসক ও অধ্যাপক।
১৮৮৮ : ক্ষিতিমোহন সেন, ভারতীয় বাঙালি গবেষক, সংগ্রাহক এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
১৮৯৮ : ইন্দ্রলাল রায়, প্রথম ভারতীয় বাঙালি বিমানচালক, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির পক্ষে যুদ্ধ করেন।
১৯২১ : কামরুল হাসান, পটুয়া চিত্রশিল্পী।
১৯২৫ : সন্তোষ দত্ত, প্রখ্যাত বাঙালি অভিনেতা।
১৯৩০ : গ্যারি স্ট্যানলি বেকার, নোবেলজয়ী আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক।
১৯৬০ : সুবর্ণা মুস্তাফা, বাংলাদেশি অভিনেত্রী।
১৮৮৮ : তুর্কি কবি নেমিক কামাল।
১৯৮৫ : ইংরেজ লেখক ও কবি ফিলিপ লার্কিন।
১৯৮৭ : নোবেলবিজয়ী ফরাসি বংশোদ্ভূত আর্জেন্টিনার চিকিৎসক ও বায়োকেমিস্ট লুইস ফেদেরিকো লেলইর।
১৯৯১ : ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক ও কথাসাহিত্যিক বিমল মিত্র।
আন্তর্জাতিক দাসত্ব বিলোপ দিবস।
ইন্দ্রলাল রায় ছিলেন প্রথম ভারতীয় বাঙালি বিমানচালক এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একমাত্র ভারতীয় বৈমানিক। তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির পক্ষে যুদ্ধ করেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ফ্রান্সের পক্ষ হয়ে জার্মানির বিপক্ষে বেশ কয়েকটি সামরিক অভিযানে অংশ নেন এবং যুদ্ধবিমান চালনায় দক্ষতার পরিচয় দেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় বিমান চালক, যিনি ১৭০ ঘণ্টা বিমান চালানোর রেকর্ড করেছিলেন।
জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর কলকাতায়। বাবা পি.এল রায় ছিলেন বরিশাল জেলার লাকুতিয়ার জমিদার। মা ললিতা রায়।
ইন্দ্রলাল শিক্ষাজীবনে একাধিক বৃত্তি অর্জনের মাধ্যমে উজ্জ্বল মেধার পরিচয় দেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনি ব্যালিওল বৃত্তি লাভ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। পরিবারের প্রত্যাশা ছিল যে, তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আই.সি.এস) পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা করবেন, কিন্তু তার পরিবর্তে তিনি রয়েল ফ্লাইং কোর-এ যোগ দেন। ১৯১৭ সালের অক্টোবর মাসে তিনি কমিশন লাভ করেন এবং ৫৬ নং বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ফ্রান্সের পক্ষে জার্মানির বিরুদ্ধে এক সামরিক অভিযানকালে ইন্দ্রলালের বিমান জার্মান কর্তৃক ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ ভূপাতিত হয়। তিন দিন অজ্ঞান থাকার পর ব্রিটিশ সেনাদল তাকে উদ্ধার করে ফ্রান্সের ব্রিটিশ সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করে মর্গে পাঠানো হয়, কিন্তু অলৌকিকভাবে তিনি আবার জ্ঞান ফিরে পান। সুস্থ হয়ে ইন্দ্রলাল শীঘ্রই আবার উড্ডয়ন করেন। তিনি বেশ কয়েকটি জার্মান যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছিলেন।
বিমানযুদ্ধে অসাধারণ সাফল্যের পুরস্কারস্বরূপ ইংল্যান্ড সরকার তাকে মরণোত্তর বিশিষ্ট উড্ডীয় ক্রস (Distinguished Flying Cross-ডিএফসি) সম্মানে ভূষিত করে। কলকাতার ভবানীপুরে ‘ইন্দ্র রায় রোড’ রাস্তাটির নাম তার নামানুসারে করা হয়। ১৯৯৮ সালে ভারতে ইন্দ্র লাল রায়ের ছবি সম্বলিত ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়।
১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই শত্রুর গোলায় তার বিমান ভূপাতিত হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত