১৯৫৫ : বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৮৩ : বাংলা ভাষায় প্রথম ‘ছোটদের অভিধান’ প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি।
১৮৮৯ : ক্ষুদিরাম বসু, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরুর দিকের সর্বকনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী এক বিপ্লবী।
১৯২২ : শ্যামল গুপ্ত, বিংশ শতকের শেষার্ধের আধুনিক বাংলা রোমান্টিক গানের কিংবদন্তি গীতিকার সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পী।
১৯৩৩ : পল জে. নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ক্রুটযেন, ডাচ রসায়নবিদ ও প্রযুক্তিবিদ।
১৯৩৫ : নিতুন কুণ্ডু, বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী ও উদ্যোক্তা।
১৯৫৬ : ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৫৬ : বাঙালি লেখক সৈয়দ এমদাদ আলী।
১৯৮২ : কবি ও প্রাবন্ধিক বিষ্ণু দে।
১৯৯৮ : ইংরেজি সাহিত্যের দিকপাল শিক্ষক, শেক্সপিয়ার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত।
১৯৯৯ : বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই।
বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তার প্রকৃত নাম ছিল প্রবোধকুমার, ‘মানিক’ ছিল তার ডাকনাম। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ত্রিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যের একজন শক্তিমান লেখক। পদ্মানদীর মাঝি ও পুতুলনাচের ইতিকথা উপন্যাস দুটি তার বিখ্যাত রচনা। এ দুটির মাধ্যমেই তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পদ্মানদীর মাঝি চলচ্চিত্রায়ণ হয়েছে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মে বাবার কর্মস্থল বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা শহরে। তার পৈতৃক নিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের কাছে মালবদিয়া গ্রামে।
বাবা হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরিসূত্রে মানিককে দুমকা, আড়া, সাসারাম, কলকাতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বারাসাত, টাঙ্গাইল ও মেদিনীপুরের নানা স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে এন্ট্রান্স পাস করেন। পরে বাঁকুড়া ওয়েসলিয়ন মিশন কলেজ থেকে আইএসসি (১৯২৮) পাস করে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসি-তে ভর্তি (১৯২৮) হন, কিন্তু পাঠ অসমাপ্ত রেখেই পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে স্থাপন করা থেকে ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সহোদরের সঙ্গে যৌথভাবে ‘উদয়াচল প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং হাউস’ পরিচালনা করেন। একইসঙ্গে তিনি বঙ্গশ্রী (১৯৩৭-৩৯) পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। এছাড়া কিছুদিন তিনি ভারত সরকারের ন্যাশনাল ওয়ার ফ্রন্টের প্রভিন্সিয়াল অরগানাইজার এবং বেঙ্গল দপ্তরে প্রচার সহকারী পদেও কর্মরত ছিলেন।
স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নের সময় বিচিত্রা পত্রিকায় তার প্রথম গল্প ‘অতসী মামী’ প্রকাশিত হলে পাঠক মহলে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। পরে নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের ফলে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত লেখকের মর্যাদা লাভ করেন। বিশ শতকের তিরিশের দশকে রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র ধারার বিরোধিতা করে যে কল্লোল গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটে, সেই গোষ্ঠীর লেখক হিসেবে মানিকের স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে ওঠে।
মানিক বন্দোপাধ্যায় অর্ধশতাধিক উপন্যাস ও দুশো চবিবশটি গল্প রচনা করেন। উল্লেখযোগ্য গন্থগুলোর মধ্যে- উপন্যাস জননী, দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, শহরতলী, চিহ্ন, চতুষ্কোণ, সার্বজনীন, আরোগ্য প্রভৃতি; ছোটগল্প: অতসী মামী ও অন্যান্য গল্প, প্রাগৈতিহাসিক, সরীসৃপ, সমুদ্রের স্বাদ, হলুদ পোড়া, আজ কাল পরশুর গল্প, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প, ফেরিওয়ালা ইত্যাদি।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। তিনি পূর্ববঙ্গ প্রগতি লেখক ও শিল্পী সঙ্ঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি এর যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। দুবার তিনি এ সঙ্ঘের সম্মেলনে সভাপতিত্বও করেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি কলকাতার টালিগঞ্জ অঞ্চলে ঐক্য ও মৈত্রী স্থাপনের প্রয়াসে সক্রিয় ছিলেন।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে বোম্বেতে অনুষ্ঠিত প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের গণসাহিত্য শাখায় এবং ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল প্রগতি লেখক ও শিল্পী সঙ্ঘ আয়োজিত জোসেফ স্টালিনের শোকসভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর কলকাতায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত