১৮৫৬ : বিধবা বিবাহ আইনের প্রেক্ষাপটে ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয় যে, বিধবা বিবাহ করলে বরকে এক হাজার টাকা নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে।
১৮৫৭ : সিপাহি বিদ্রোহের এক পর্যায়ের ঢাকার লালবাগ দুর্গে সিপাহি ও ইংরেজদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
১৮১৯ : জর্জ ইলিয়ট, ইংরেজ ঔপন্যাসিক।
১৮৬৯ : আঁদ্রে জিদ, নোবেলজয়ী ফরাসি কথাশিল্পী ও সমালোচক।
১৮৮৬ : বেণী মাধব দাস, প্রাজ্ঞ বাঙালি পণ্ডিত, শিক্ষক ও দেশপ্রেমিক। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর প্রিয় শিক্ষক।
১৮৯৪ : পুলিনবিহারী সরকার, ভারতের বাঙালি বিশ্লেষক অজৈব রসায়নের গোড়াপত্তনকারী বিজ্ঞানী।
১৯০৪ : লুই নিল, নোবেলজয়ী ফরাসি পদার্থবিদ।
১৯১৬ : শান্তি ঘোষ, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী।
১৯১৭ : স্যার অ্যানড্রু ফিল্ডিং হাক্সেলে, শরীরবিদ্যা/ভেষজশাস্ত্রে নোবেলজয়ী ব্রিটিশ জীবজিজ্ঞানী।
১৯৬২ : রেজাউদ্দিন স্টালিন, বাংলাদেশি কবি, লেখক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব।
১৯৬৫ : শাকুর মজিদ, বাংলাদেশি স্থপতি, নাট্যকার, তথ্যচিত্র নির্মাতা ও চিত্রগ্রাহক।
১৯১৬ : মার্কিন কথাসাহিত্যিক জ্যাক লন্ডন।
১৯৬৩ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডি।
১৯৮৭ : সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস।
২০০৬ : ভারতীয় বাঙালি জৈব রসায়নবিদ ও উদ্ভিদ রসায়নবিদ অসীমা চট্টোপাধ্যায়।
হেমাঙ্গ বিশ্বাস ছিলেন একজন বাঙালি অসমীয়া সঙ্গীতশিল্পী এবং সুরকার। মূলত লোকসঙ্গীতকে কেন্দ্র করে গণসঙ্গীত সৃষ্টির ক্ষেত্রে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার মিরাশী গ্রামে। বাবা হরকুমার বিশ্বাস, মায়ের নাম সরোজিনী বিশ্বাস। তাদের পরিবার ছিল রক্ষণশীল। পুরোহিততন্ত্র ও জাতবিচারের প্রাবল্য ছিল তাদের পরিবারের মর্মমূলে।
শিক্ষা-জীবনে হবিগঞ্জের মিডল ইংলিশ স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। হবিগঞ্জ সরকারি স্কুল থেকে ১৯৩০ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। গণিত বিষয়ে দুটি লেটারসহ সুখ্যাতি লাভ করেন। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহণের জন্যে সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজে আইএসসি প্রথম বর্ষে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হন। এক বছরের মাথায় ইতি ঘটে তার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার। লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে আইন অমান্য আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহণ করেন।
১৯৩৮-৩৯ খ্রিষ্টাব্দে বিনয় রায়, নিরঞ্জন সেন, দেবব্রত বিশ্বাস প্রমুখের সাথে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ বা আই.পি.টি.এ গঠন করেন। পঞ্চাশের দশকে এই সংঘের শেষ অবধি তিনি এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।
সাহিত্য সংস্কৃতি ক্ষেত্রে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অবদান অতুলনীয়। ‘তিরিশ ও চল্লিশ দশকের একটা বড় সময়, গণনাট্য ও কমিউনিস্ট আন্দোলনের মূল জোয়ারের সময়টা, হেমাঙ্গ বিশ্বাস শ্রীহট্টের সুরমা উপত্যকা ও অসমে অতিবাহিত করেছেন। অসম গণনাট্য সংঘ তার হাতে তৈরি এবং তার জীবনে অসমীয়া সাহিত্য ও সংস্কৃতি একটা খুব বড় জায়গা নিয়ে আছে। অসমে কবি, গীতিকার ও সুরকার হিসেবে পশ্চিম বঙ্গের থেকে তিনি কিছুটা বেশিই পরিচিত।
১৯৬১ সালে বাংলা কাব্যগ্রন্থ ‘সীমান্ত প্রহরী’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে অসমীয়া ভাষায় ‘আকৌ চীন চাই আহিলোর’ (অসমিয়া) প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। একই সালে প্রকাশিত হয় ‘শঙ্খচিলের গান’ ও ‘আবার চীন দেখে এলাম’-গ্রন্থ। ১৯৭৭ সালের মে মাসে ‘আকৌ চীন চাই আহিলো’র দ্বিতীয় খণ্ড ও ‘চীন থেকে ফিরে’, ১৯৭৮ সালে ‘লোকসঙ্গীত সমীক্ষা : বাংলা ও আসামা’ প্রকাশ। ১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয় ‘হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান’।
১৯৮৩ সালে অসমীয়া ভাষায় ‘জীবনশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ’ প্রকাশিত হয়। ১৯৮৫ সালে অসমীয়া কাব্যগ্রন্থ ‘কুল খুরার চোতাল’ প্রকাশ। এছাড়াও ‘কুলো কুড়োর চতাল’ (অসমীয়া), সঙ্গীত ও সঙ্গীত বিষয়ক গ্রন্থের মধ্যে ‘বিষাণ’, ‘গণগীতি’, ‘নতুন দিনের গান’, ‘গানের বাহিরানা’; আত্মজীবনী ‘উজান গাঙ বাইয়া’ (১৯৯০) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। নিপীড়িত মানবতার আর্তনাদ তার কবিতা ও গানে মূর্ত হয়ে উঠেছে। ‘সঞ্জয় সেন’ ছদ্ম নামে তিনি অনেক গান লিখেছেন।
১৯৬১ সাল থেকে ৬৮ সাল পর্যন্ত সময়ে অসংখ্য নাটক, চলচ্চিত্র ও যাত্রায় সংগীত পরিচালনা করেছেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস। তন্মধ্যে ‘কল্লোল’, ‘তীর’, ‘তেলেঙ্গানা’, ‘লাল লণ্ঠন’, ‘লেনিন’, ‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘বিদুন’, ‘রাইফেল’, ‘রাহুমুক্ত রাশিয়া’, ‘মানুষের অধিকারে’, ‘কাঙ্গাল হরিশ’, নাটক ও যাত্রায় ‘চাঁদমনসার নৃত্যনাট্য’ ও ‘লালন ফকির’ চলচ্চিত্র উল্লেখযোগ্য। লালন চলচ্চিত্রে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের সুরে গান গেয়ে হেমন্ত মুখার্জী রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে সম্মানিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি গঠন করেন ‘মাস-সিঙ্গার্স’।
১৯৮৭ সালের ২২ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত