১৮১৩ : জেনারেল হেস্টিংসের উপস্থিতিতে কলকাতার বিখ্যাত চৌরঙ্গী থিয়েটারের উদ্বোধন হয়।
১৯৭২ : বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় উত্তর ভিয়েতনাম এবং ইথিওপিয়া।
১৯৯১ : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
১৯৯৬ : পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
২০০৪ : দর্শনার্থীদের জন্যে রাতে তাজমহল উন্মুক্ত করা হয়।
১৯০৬ : নূরুল মোমেন, নাট্যকার।
১৯১৯ : মুহম্মদ আবদুল হাই, ধ্বনি বিজ্ঞানী ও ভাষাতাত্ত্বিক।
১৯৩৩ : শক্তি চট্টোপাধ্যায়, ভারতীয় বাঙালি কবি।
১৯৩৪ : ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়, বিশিষ্ট বাঙালি যাত্রা পালাকার।
১৯২৫ : খ্যাতনামা মৃৎশিল্পী যদুনাথ পাল।
১৯৭৪ : জাতিসংঘের তৃতীয় মহাসচিব উ থান্ট।
১৯৮১ : প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি সুরশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক রাইচাঁদ বড়াল।
২০১৬ : কিউবান রাজনৈতিক নেতা ও সমাজতন্ত্রী বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রো।
২০২০ : ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা।
নুরুল মোমেন ছিলেন একজন বাংলাদেশি অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, নাট্যকার ও নির্দেশক, রম্য সাহিত্যিক, পথিকৃৎ মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, অনুবাদক, কবি এবং প্রাবন্ধিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন এবং অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আধুনিক বাংলা নাটকে অগ্রণী ভূমিকার জন্যে তাকে ‘নাট্যগুরু’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৬ সালের ২৫ নভেম্বর তৎকালীন যশোর জেলা বর্তমান ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়। বাবা নুরুল আরেফিন ছিলেন একজন জমিদার ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।
নুরুল মোমেন কলকাতায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ১৯১৬ সালে খুলনা জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৯২০ সালে তিনি ঢাকা মুসলিম হাই স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯২৪ সালে ম্যাট্রিক, ঢাকা ইন্টারমেডিয়েট কলেজ থেকে ১৯২৬ সালে আইএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৯ সালে বিএ পাস করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম বছরেই (১৯২৭) তিনি ক্রীড়া ও নাট্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হন। রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তধারায়’ বটু চরিত্রায়ন করে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। সেটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম নাট্য প্রতিযোগিতা এবং নুরুল মোমেন তখন থেকেই পূর্ব বাংলার নাটকে পথিকৃৎ ভূমিকা রাখেন। এর পরের ৩ বছর তিনি কার্জন হলে বহু নাটক পরিচালনা ও অভিনয় করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএল ডিগ্রি লাভ করে ১৯৩৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন।
দশ বছর বয়সে তার প্রথম পদ্য ‘সন্ধ্যা’ ১৯১৯ সালে সেসময়কার ‘ধ্রুবতারা’ নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৩৯ সালে ঢাকায় ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ প্রতিষ্ঠা হলে, মোমেন নতুন এই মাধ্যমের সুযোগ গ্রহণ করেন এবং প্রথম লেখক হয়ে ওঠেন। ১৯৪১ রেডিওর জন্যে রচনা ও নির্দেশনা দেন কমেডি নাটক ‘রূপান্তর’।
এই নাটকের প্রগতিশীল প্লট এবং প্রধান চরিত্র নারী হওয়ার কারণে প্রথাগত মুসলিম বাংলা নাটকের মধ্যে নতুন ধারার উন্মেষ ঘটে; যার ফলশ্রুতিতে কবি ও সাহিত্য সমালোচক মোহিতলাল মজুমদার তার প্রশংসা করেন এবং পরবর্তীতে আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের পূজা সংখ্যায় নাটকটি প্রকাশ করেছিল।
সমকালীন সমাজের অসঙ্গতি ও দ্বন্দ্বসমূহ তিনি ব্যঙ্গরসের মাধ্যমে নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরেন। নাট্যশিল্পী হিসেবে এটা তার বড় কৃতিত্ব। তার অন্যান্য বিখ্যাত নাটক যদি এমন হতো, নয়া খান্দান, আলোছায়া, আইনের অন্তরালে, শতকরা আশি, রূপলেখা ও যেমন ইচ্ছা তেমন ইত্যাদি।
সাহিত্যকর্মে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যে তিনি ১৯৫৪ সালে কলকাতায় সংবর্ধিত হন। ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল প্লেয়ার্স সংগঠন তাকে সংবর্ধনা দেয় ১৯৬৪ সালে। এর দুই বছরের মাথায় ১৯৬৬ সালে ব্রিটেনের থিয়েটার ব্যক্তিত্বগণ কর্তৃক সংবর্ধিত হন। বাংলাদেশের থিয়েটার নাট্যদল কর্তৃক সংবর্ধনা দেয়া হয় ১৯৭৭ সালে। ১৯৭৮ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
বাংলাদেশে আধুনিক নাট্যচর্চার অগ্রদূত হিসেবে ‘নাট্যগুরু’ অভিধায় সম্মানিত এই মানুষটি ১৯৮৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত