বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি বিনয় মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৬০তম (অধিবর্ষে ২৬১তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৯২৪ : হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির জন্যে মহাত্মা গান্ধীর অনশন।
১৯৭৪ : বাংলাদেশ, গ্রানাডা এবং গিনি-বিসাউ জাতিসংঘে যোগদান করে।
১৯৯১ : উন্মুক্ত সোর্সকোড ভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স কার্নেলের প্রথম সংস্করণ (0.01 Version) ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়।
১৮৬৭ : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, একজন ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী, শিল্পরসিক এবং মঞ্চাভিনেতা।
১৯১৫ ; মকবুল ফিদা হুসেন, অত্যন্ত জনপ্রিয় ভারতীয় চিত্রশিল্পী।
১৯২২ : হরিপদ কাপালী, বাংলাদেশি কৃষক, হরি ধানের উদ্ভাবক।
১৯৩৪ ; বিনয় মজুমদার, বাঙালি কবি।
১৯৫৪ : বাংলা ভাষার কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত।
১৯৭৭ : ইংরেজ উদ্ভাবক ও ফটোগ্রাফির পুরোধা উইলিয়াম হেনরি ফক্স টলবোট।
ঐতিহাসিক শিক্ষা দিবস৷
বিনয় মজুমদার ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি। জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মায়ানমারের মিকটিলা জেলার টোডো নামক শহরে। বাবা বিপিনবিহারী মজুমদার। মায়ের নাম বিনোদিনী। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। ডাক নাম ছিল মংটু।
১৯৪২ সালে বাংলাদেশের একটি স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪৪ সালে তিনি প্রথম বিভাগে ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৪৬ সালে তাকে বৌলতলী উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। ১৯৪৮ সালে দেশভাগের সময় তারা সপরিবারে ভারতের কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৫৭ সালে শিবপুর বি.ই.কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন।
ছাত্রজীবন শেষ করার কয়েক মাস পরেই এনবিএ থেকে প্রকাশিত হয় ‘অতীতের পৃথিবী’ নামক একটি অনুবাদ গ্রন্থ। একই বছর গ্রন্থজগৎ থেকে বের হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নক্ষত্রের আলোয়’। ১৯৫৩-৫৭ সাল পর্যন্ত রুশ ভাষা শিক্ষা গ্রহণ করে কিছু রুশ সাহিত্য বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন।
বৌলতলি হাই-ইংলিশ স্কুলের ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। ত্রিপুরা গভর্নমেন্ট কলেজে অল্প কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর স্থির করেন শুধুই কবিতা লিখবেন। লেখা শুরু করেন ‘ফিরে এসো চাকা’। এসময় তিনি দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টেও কিছুদিন কাজ করেন। তখন থেকেই মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যায়।
১৯৬৬ সালে লিখতে শুরু করেন ‘আঘ্রানের অনুভূতিমালা’ ও ‘ঈশ্বরীর স্বরচিত নিবন্ধ’। প্রায় বিশটি কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন। যার মধ্যে ‘ফিরে এসো চাকা’ তাকে সবচেয়ে বেশি খ্যাতি দিয়েছে। এছাড়াও নক্ষত্রের আলোয়, গায়ত্রীকে, অধিকন্তু, ঈশ্বরীর, বাল্মীকির কবিতা, আমাদের বাগানে, আমি এই সভায়, এক পংক্তির কবিতা, আমাকেও মনে রেখো, আমিই গণিতের শূন্য, স্বনির্বাচিত, কবিতা বুঝিনি আমি ইত্যাদি রচনা করেন। রহস্যময়তা, প্রতীকের সন্ধান, জড় ও প্রাণের সম্পর্কে ব্যাখ্যা ছিল তার কবিতার মর্মবস্তু।
নানা পুরস্কারে ভূষিত হন বিনয় মজুমদার। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তাকে দুটি বড় পুরস্কার দেওয়া হয়, রবীন্দ্র পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার। কবিতার জগতে তার স্বকীয়তা এবং বিজ্ঞানে, বিশেষত গণিতে প্রগাঢ় আগ্রহ নিয়ে প্রথম থেকেই প্রথা ভেঙ্গে এগোচ্ছিলেন তিনি।
ফলে সমকালীন কাব্যজগত থেকে পৃথক জায়গায় ছিলেন। এর সাথে তার নিজের কিছুটা অসুস্থতা, কিছুটা সচেতন বিচ্ছিন্নতা তাকে কষ্ট দিয়েছে। ফলে দীর্ঘ সময় ঠাকুরনগরে নিজের বাড়িতে একা থাকতেন। ১৯৮৭ সাল নাগাদ বিনয় মানসিক ব্যাধির কারণে দীর্ঘ দিন কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত