1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসে সেপ্টেম্বর ২৮ -সাহিত্যবিশারদ শেখ ফজলল করিম মৃত্যুবরণ করেন।

  • সময় মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৬৬৭ বার দেখা হয়েছে

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৭১তম (অধিবর্ষে ২৭২তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৯২৮ : স্যার অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং প্রথমবারের মতো পেনিসিলিন আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন।

জন্ম

১৭৪৬ : উইলিয়াম জোনস, প্রাচ্য তত্ত্ববিদ ও এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা।
১৭৯৩ : রাণী রাসমণি, প্রসিদ্ধ ভারতীয় মানবদরদি জমিদার।
১৮৮৯ : নলিনীকান্ত সরকার, বাঙালি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি, গায়ক, সাহিত্যবোদ্ধা ও ছন্দশ্রী।
১৯২৯ : লতা মঙ্গেশকর, ভারতরত্ন স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী।
১৯৪৭ : শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।

মৃত্যু

১৮৯৫ : ফরাসি রসায়নবিদ ও অণুজীববিজ্ঞানী লুই পাস্তুর
১৯০২ : ফরাসি ঔপন্যাসিক এমিল জোলা
১৯৫৩ : মার্কিন জ্যোতির্বিদ এডউইন হাবল
১৯৩৬ : সাহিত্যিক শেখ ফজলল করিম

দিবস

বিশ্ব জলাতংক দিবস
তথ্য অধিকার দিবস

সাহিত্যবিশারদ শেখ ফজলল করিম

শেখ ফজলুল করিম ছিলেন একজন স্বনামধন্য বাঙালি সাহিত্যিক, সাহিত্যবিশারদ। তার লেখা কবিতার কয়েকটি লাইন-

কোথায় স্বর্গ? কোথায় নরক?
কে বলে তা বহুদূর?
মানুষের মাঝেই স্বর্গ-নরক
মানুষেতে সুরাসুর

জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮২ সালের ৯ এপ্রিল বর্তমানে লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ থানার কাকিনা গ্রামে। ডাক নাম ছিল মোনা। বাবা আমীরউল্লা সরদার। মায়ের নাম কোকিলা বিবি। ফজলল করিমদের পরিবার ছিল একান্নবর্তী। মানে আত্মীয়-পরিজন মিলে এক বিশাল পরিবার। বনেদি পরিবারের বাড়ির আদল যেমন হয়, তেমনি ছিল ফজলল করিমের পৈত্রিক বাড়ি। সেই বাড়ির প্রশস্ত কাছারি ঘরের মাঝামাঝি একটি বিরাট সেক্রেটারিয়েট টেবিল ছিল। তাতে থাকত সৌখিন দোয়াতদান ও পাখার নানারকম কলম। তখনকার দিনে পাখার কলমে লেখার প্রচলন ছিল। এই বিরাট টেবিলেই, ঝকঝকে লণ্ঠনের আলোয় পড়াশোনা করতেন শেখ ফজলল করিম। লিখতেনও এখানেই। রাত গভীর পর্যন্ত চলত বিরামহীন লেখাপড়া। তার মৃত্যুর পরও বহু বছর টেবিল এবং হারিকেনটি সেই নির্দিষ্ট স্থানেই ছিল।

স্কুলে যাতায়াত শুরু হয় মাত্র চার-পাঁচ বছর বয়সেই। সেই থেকে শুরু। স্কুলের প্রতি অতি-অনুরাগের কারণে বাড়ি থেকে পালিয়েই যেতেন তিনি। এমনকি, এই স্কুল-আসক্তির কারণে বড়দের হাতে প্রচুর মারও খেয়েছেন তিনি। স্কুলে প্রতি বছর বাৎসরিক পরীক্ষায় পুরস্কার পেতেন। কিন্তু নানা কারণে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটলে ১৮৯৬ সালে কবি শেখ ফজলল করিম পাশের গ্রামের বসিরন নেছা খাতুনকে বিয়ে করেন। আর এভাবেই অল্প বয়সে কবি সাংসারিক জীবনে জড়িয়ে পড়েন।

১৯০১ সালে কবি শেখ ফজলল করিম ‘মেসার্স এমভি আপকার কোম্পানিতে’ ২০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। ১৯০২ সালে ‘এক্সট্রা এসিস্টেন্ট ম্যানেজার’ হিসেবে পদোন্নতি পান। কিন্তু এর অল্প কিছুদিন পরে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।

কবি শেখ ফজলল করিম খুব অল্প বয়স থেকে সাহিত্য সাধনায় নিমগ্ন হন। তিনি অল্প বয়সে ‘সরল পদ্য বিকাশ’ শিশুপাঠ্য কবিতার বই রচনা করেন। তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পাঠ এবং নানা প্রবন্ধ ও কবিতা লিখে সময় কাটাতেন। তিনি রাতে ঘুমটুকু বাদে সবটা সময় ইবাদত-বন্দেগি ও লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকতেন। সেসময় তিনি কাকিনা থেকে ভালো মানের পত্রিকা প্রকাশের প্রত্যাশায় নিজের সঞ্চিত দেড় সহস্রাধিক টাকা ব্যয়ে কাকিনায় ‘সাহাবিয়া প্রিন্টিং ওয়ার্কস্’ নামে ছাপাখানা স্থাপন করেন। সেখান থেকে ‘বাসনা’ নামে মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করতেন। পত্রিকাটি ১৯০৮ সাল থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ওই ছাপাখানা থেকে ‘জমজম’, ‘কল্লোলিনী’ ও ‘রত্নপ্রদীপ’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তিনি ‘রংপুর সাহিত্য পরিষদ’-এর আজীবন সদস্য ছিলেন।

কবি শেখ ফজলল করিমের প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত ৩৯টি গদ্যগ্রন্থ ও ৬টি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন। তিনি বেশ কিছু জীবনীগ্রন্থ ও ইতিহাসগ্রন্থ রচনা করেছেন। তার অন্যতম গদ্যগ্রন্থগুলো হলো- ‘ছামৌতত্ত্ব’, ‘লাইলী-মজনু’, ‘পথ ও পাথেয়’, ‘চিন্তার চাষ’, ‘মাথার মনি’, ‘বেহেস্তের ফুল’ ইত্যাদি। কাব্যগ্রন্থসমূহ হলো— ‘তৃষ্ণা’, ‘পরিত্রাণ কাব্য’, ‘ভগ্নবীণা’, ‘ভক্তি পুষ্পাঞ্জলী’ ইত্যাদি। জীবনী গ্রন্থগুলো হলো— ‘হযরত রাব্বানী সাহেবের জীবনী’, ‘বিবি খোদেজার জীবনী’, ‘বিবি ফাতেমার জীবনী’, ‘বিবি রহিমা’, ‘বিবি আয়েশার জীবনী’, ‘হযরত আব্দুল কাদের (রহঃ)-এর জীবনী’, ‘আমার জীবন চরিত’ ইত্যাদি। ইতিহাস গ্রন্থগুলো হলো— ‘আফগানিস্তানের ইতিহাস’, ‘আল হারুণ’, ‘রাজা মহিমা রঞ্জনের পশ্চিম ভ্রমণ’ ইত্যাদি। এছাড়াও তার কয়েকটি গদ্যনাটক, গীতিকাব্য, উপন্যাস, নাট্যকাব্য ও শোকগাঁথা রয়েছে।

কবি শেখ ফজলল করিম সেই সময় সমগ্র ভারতের বিভিন্ন বাংলা সাহিত্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সম্মাননা লাভ করেন। তিনি ১৯২০ সালে ‘নীতিভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি ১৯২৩ সালে ‘নদীয়া সাহিত্য সভা’ প্রদত্ত ‘সাহিত্য বিশারদ’ উপাধি লাভ করেন। তাকে ‘কাব্যভূষণ’ উপাধিতেও ভূষিত করা হয়।

কবি শেখ ফজলল করিম সাহিত্য বিশারদ ১৯৩৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কাকিনায় মৃত্যুবরণ করেন। জন্মভিটা কাকিনায় তার সমাধি সৌধ রয়েছে। লালমনিরহাট পৌরসভা এলাকায় তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে কালেক্টরেট মাঠের পূর্বপাশে ১৯৮৫ সালে শেখ ফজলল করিম শিশু নিকেতন ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

সূত্র : সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com