ঈদের আগে গার্মেন্টসসহ সব সেক্টরের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জোর দাবি জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে অসহায় মানুষদের মাঝে ইফতার বিতরণ ও গণ-সমাবেশ থেকে এই দাবি জানান দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার।
আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত দাঁড়িয়ে আছে গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী সেক্টরে কর্মরত বিপুলসংখ্যক শ্রমিক আর প্রবাসী জনশক্তির মেধা ও শ্রমের ওপর। অথচ এই দুই খাতের মূল জায়গা শ্রমিক ভাই-বোনেরা সব সময়ই অবহেলিত।
প্রতিটি ঈদ এলেই গার্মেন্টকর্মীদের পাওনা বেতন-ভাতার জন্য আন্দোলন করতে হয়। ইতিমধ্যেই গাজীপুর, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের পুলিশ দিয়ে দমনের চেষ্টা করা হয়েছে।’ সব হয়রানি বন্ধ করে অবিলম্বে ঈদের আগে সব গার্মেন্টস শ্রমিক ভাই-বোনদের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানান তিনি।
এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হকের সভাপতিত্বে আজকের সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুব পার্টির আহ্বায়ক এ বি এম খালিদ হাসান ও সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
তিনি আরো বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাস শেষ হতে চলেছে। রোজার শেষে সাধারণ মানুষের খুশি নিয়ে আসে ঈদ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মানুষের এখন আর ঈদের খুশি উদযাপনের সুযোগ নাই। গরিব, দুঃখী, শ্রমজীবী মানুষের হক আজ লুট করে নিচ্ছে দেশের সুবিধাভোগী সামান্য কিছু মানুষ।
জিনিসপত্রের দামের কারণে প্রয়োজনই মানুষ মেটাতে পারছে না, উৎসব তো অনেক কঠিন বিষয়। গার্মেন্টসে চাকরিরত অনেক ভাই-বোনেরা বকেয়া বেতন-ভাতা এখনো পায়নি। গাজীপুর, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকরা পাওনা বেতন-ভাতা চাইতে গেলে তাদের পুলিশ দিয়ে হেনস্তা করা হয়। দেশের অর্থনীতি বেঁচে আছে গার্মেন্ট আর প্রবাসী ভাই-বোনদের জন্য। অথচ তারা সব সময়ই অবহেলিত।
’ তিনি অবিলম্বে ঈদের আগে সব গার্মেন্ট শ্রমিক ভাই-বোনের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানান।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘মুক্তবাজারের নামে চলমান লুটপাট ও সিন্ডিকেটের ব্যবস্থা বহাল রেখে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আগামী ২৫ রমজানের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের টাকা দিতে হবে। নানা অজুহাত দেখিয়ে বেতন-বোনাস থেকে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বঞ্চিত করা যাবে না। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে।’
আনোয়ার সাদাত টুটুল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে সরকারের লালিত-পালিত সিন্ডিকেট জনগণকে যখন পিষে মারছে, ঠিক সেই সময়ে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন। প্রতিবছর ঈদ এলেই শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়। মাসকে মাস বেতন বকেয়া রেখে ঈদের আগে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় আর ঈদ এলে তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয়। এই অমানবিক আচরণ আমরা মেনে নিতে পারি না।’ তিনি অবিলম্বে সব শ্রমিক ভাই-বোনদের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানান।
গণইফতারে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুব পার্টির আহ্বায়ক এ বি এম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী, মশিউর রহমান মিলু, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইন, শরণ চৌধুরী, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, সদস্যসচিব রনি মোল্লা, যাত্রাবাড়ী থানা আহ্বায়ক সিএমএইচ আরিফ, ছাত্রনেতা হাসিবুর রহমান খানসহ পার্টির কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।