কোর্স সম্পর্কে একটি কথাই বলা যায় তা হলো—‘অসাধারণ’। প্রশান্তিময় একটা পরিবেশ এখানে সবসময় বিরাজ করছে। এই প্রশান্তিময় জায়গাটায় আসার ইচ্ছে আমার সবসময় ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আসা হয়ে ওঠে নি। এবার সুযোগ করে চলে এলাম। কারণ নিজের মনকে আর বেঁধে রাখতে পারি নি।
‘মানুষ শ্রেষ্ঠ’ গুরুজী চার দিনের এই কোর্সের মাধ্যমে এই কথাটা বোঝাতে চেয়েছেন বার বার। মানুষের ব্রেনে হাজার হাজার কোটি নিউরোন সেল রয়েছে। তারপরও কেন আমরা ব্রেনকে কাজে লাগাচ্ছি না, আমরা আলোকিত মানুষ হচ্ছি না, আমরা জাগরিত হচ্ছি না—এ বোধকে তিনি আমাদের মাঝে সঞ্চার করতে চাচ্ছেন। আমাদের বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছেন যেন আমরা উপলব্ধি করতে পারি—আমরা অভাবী নই, গরিব নই, আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই। আমরা নির্বোধ নই, আমরা বুদ্ধিমান। গুরুজী আমাদের উপলব্ধি করাতে চেয়েছেন যে, আমরা যেন অন্ধকারের দিকে না যাই।
আমাদের সমাজ, পরিবার, রাষ্ট্র অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই অন্ধকারে একটু হলেও আলো জ্বালাতে আমি ৩৭ বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর একটা বছর দেখব যে, আমি কিছু করতে পারি কিনা—এই ভাবনাতেই কেটে গেল ৩৭টা বছর। এতগুলো বছর পেরিয়ে এসে মনে হয়, এক কোটি মানুষের কাছে না হয় গেলাম, মহিলা-শিশুদের জন্যে কিছু কাজ হয়তো করলাম, কিন্তু সত্যিই কি কোথাও আঘাত করতে পারলাম? বড় কোনো পরিবর্তনের দিকে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রকে কি এগিয়ে নিতে পারলাম?
কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে এসে আমি আলো দেখতে পাচ্ছি, আশা দেখতে পাচ্ছি সুন্দর আগামীর। এ সমাজে ভালো মানুষ আছেন। গুরুজী বলেছেন, আমরা ভালো লোকেরা একতাবদ্ধ নই, সংগঠিত নই। কে অসুস্থ আছেন, কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে, কে কষ্টে আছে—আমরা সাহসের সাথে কথা বলতে পারি না। আমি গুরুজীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যে, আমি সারাটা জীবন এই কাজগুলোই সাহসের সাথে করেছি, আর গুরুজীর কথা আমাকে আরো উৎসাহিত করেছে। এ পৃথিবীতে আমরা এসেছি খুব অল্প সময়ের জন্যে। সৃষ্টিকর্তা আমাকে পাঠিয়েছেন অপার সম্পদ দিয়ে। এই সম্পদকে, এই মানব মস্তিষ্ককে আমরা যেন কাজে লাগাতে পারি। প্রতিটি মানুষ যেন আমরা এভাবে এগিয়ে যেতে পারি আলোর পথে।