মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এ চাল আমদানি করা হবে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনলাইন বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক ব্রিফিংয়ে অবশ্য জানিয়েছিলেন, মিয়ানমারে হঠাৎ সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশটি থেকে চাল আমদানির চিন্তা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর বিকেলের ব্রিফিংয়ের পর গতকাল রাত পৌনে ৯টায় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধনী পাঠিয়ে বলা হয়, ‘মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রস্তাব শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদিত হয়েছে। তথ্যবিভ্রাটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।’
গণ খাতে ক্রয় আইন ২০০৬–এর ৬৮(১) ধারা এবং গণখাতে ক্রয় বিধি–২০০৮–এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১ লাখ টন আতপ চাল মিয়ানমার থেকে আমদানির নীতিগত প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে। আর ক্রয় কমিটির বৈঠকে ১ লাখ টন চাল ৪১১ কোটি ২৮ লাখ টাকায় কেনার প্রস্তাব ছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়ের। দুটিই অনুমোদিত হয়।
অথচ অর্থমন্ত্রী তাঁর ব্রিফিংয়ে বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সে রকম কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে দেশটি থেকে পেঁয়াজ আনতে হয়েছে। যখন কোনো উপায় থাকে না, তখন তাদের কাছে যেতে হয়। তারাও এটাকে স্বাভাবিকভাবেই নেয়।
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, মিয়ানমারের এখন চাল রপ্তানির আগ্রহ আছে কি না বা বাংলাদেশও এ পরিস্থিতিতে কীভাবে তা আমদানি করবে, এসব বিষয় বিবেচনা করে চাল আমদানি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে দেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি ভালো আছে, এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভালো আছে বলেই আজ আমরা বৈঠকে বসলাম। বিশ্বে এখন এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যাদের স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য আছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে কি বাড়ছে না, নাকি এক জায়গায় আটকা আছে, নাকি নিচের দিকে যাচ্ছে, সেটা দেখুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন বাংলাদেশ কোথায় আছে।
ক্রয় কমিটির মোট ৯ প্রস্তাবের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের দুটি প্রস্তাব ছিল। তবে অনুমোদিত হয় ৭ হাজার ২৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ের আটটি প্রস্তাব। এর মধ্যে রয়েছে মরক্কো থেকে আট লাখ টন সার আনার দুটি প্রস্তাব।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদীতীর সংরক্ষণ ও খনন প্রকল্পের কাজ ডিপিএমে বাস্তবায়নের প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।