প্রায়ই বিভিন্ন গবেষণার কথা আপনি শুনবেন- যেখানে বলা হয়ে থাকে- সীমিত কফিপান স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো।
২০১৮ সালের শুরুতে প্রকাশ হওয়া একটি গবেষণায় বলা হয়, দিনে অন্তত তিন কাপ কফি পান করলে হার্ট অ্যাটাকসহ অনেক জটিল রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। ১৬ বছর ধরে ইউরোপের ১০টি দেশের ৫ লাখ মানুষের তথ্য নিয়ে চালানো হয় এ গবেষণা।
কিন্তু এ গবেষণাটিসহ এ জাতীয় অন্যান্য গবেষণায় আছে বড় ধরনের এক ফাঁক। কারণ গবেষণাগুলো আজ থেকে ১০ বা ১৬ বছর আগের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা। যখন মানুষ কফি খেত ছোট কাপে। এক কাপে হয়তো চার আউন্স। দু’কাপে বড়জোড় আট আউন্স। ব্যস। এটুকুই ছিল তার দিনের কফি খাওয়া।
কিন্তু এখন স্টারবাকসের সবচেয়ে ছোট যে ক্যানে কফি পরিবেশন করা হয় তার পরিমাণ ১২ আউন্স। মানে আগের দিনের মানুষের পরিমাণের অন্তত তিনগুণ। এবং অনেকেই শুধু যে এক ক্যানে সন্তুষ্ট থাকেন তা নয়, সারাদিনে ছোট, মাঝারি এমনকি সবচেয়ে ঢাউস সাইজের ক্যানেও তিন থেকে চার ক্যান কফি খেয়ে ফেলছেন। হয়তো ৬০০ থেকে ৮০০ মিলি কফি পান করছেন একেকজন।
আর কফিতে আছে ক্যাফেইন, যা আসক্তি সৃষ্টিকারী একটি উপকরণ। আপনি যত খাবেন, ততই বাড়াতে বাধ্য হবেন এর পরিমাণ। কারণ আগের পরিমাণে আর সেই তৃপ্তি বা প্রভাব হচ্ছে না বলে আপনার মনে হতে থাকবে।
চলুন এবার দেখা যাক, অতিরিক্ত ক্যাফেইন কী কী ক্ষতি করতে পারে আপনার দেহের? অতিরিক্ত ক্যাফেইন আপনার দেহের যেসব হরমোনাল সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে তাহলো-
-কর্টিসল নামে স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যেতে পারে। যার ফলে পেটের চর্বি বেড়ে যাবে এবং বুড়িয়ে যাওয়া ত্বরান্বিত হবে।
-টেস্টোস্টেরন কমে যেতে পারে। যার মানে হলো পেশীর ক্ষয়ে যাওয়া এবং যৌনক্ষমতা কমে যাওয়া
-গ্রোথ হরমোন কমে যাওয়া। যার মানে চর্বি বাড়া এবং বুড়িয়ে যাওয়া
-থাইরয়েড হরমোন কমে যাওয়া। যার মানে মোটা হয়ে যাওয়া
-এড্রিনালিন হরমোন বেড়ে যাওয়া
-এস্ট্রজেন বেড়ে যাওয়া, যার ফলে মহিলাদের পিরিয়ডে অনিয়ম থেকে শুরু করে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। পুরুষদের অনেক সময় যে ভারী স্তন সমস্যা দেখা যায়, তাও এস্ট্রজেনের কারণে হয়।
-ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়া এবং ইনসুলিন
-ডোপামাইন কমে যায়। ফলে আনন্দ অনুভূতি কমে যায় এবং পার্কিনসন্স দেখা দেয়
-সেরেটনিন কমে যায়, যার মানে আনন্দ অনুভূতি কমে যায়, উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়ে যায় এবং প্যানিক অ্যাটাক বেড়ে যায়।
-অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বেড়ে যায়। ফলে ব্যথা বা প্রদাহ বাড়ে।