আসলে আতঙ্ক বেনিয়াদের ব্যাপারটা-ই এমন, যখনই তাদের কোনো প্রোডাক্ট মার্কেটে চালানোর প্রয়োজন পড়ে তখনই ভাইরাস ‘আগ্রাসী’ হয়ে ওঠে! এটা নতুন কিছু না, আগেও এমনটা বহুবার হয়েছে।
বছর দশেক আগে মেক্সিকোতে সোয়াইন ফ্লু-র সংক্রমণ হয়। রোগী বাড়তে শুরু করলে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় স্যাম্পল পাঠায়। সেখানকার বিজ্ঞানীরা সাথে সাথে ঘোষণা করেন- এটা খুব আগ্রাসী ভাইরাস! বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্যানেল বিশেষজ্ঞরা বললেন যে, পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবে এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ মারা যাবে।
পৃথিবীজুড়ে আতঙ্ক, এখন যেমন চারপাশে আতঙ্ক। স্কুল কলেজ ব্যবসা বাণিজ্য বিমান চলাচল- সব বন্ধ। কয়েক সপ্তাহে মেক্সিকোর আর্থিক ক্ষতি হলো সোয়া দুই বিলিয়ন ডলার।
অবস্থা এমন দাঁড়ালো যে একটু হাঁচি-কাশি দিলেই তাকে হাসপাতাল ভর্তি। হাসপাতালের যা ধারণ ক্ষমতা, রোগী তার দশগুণ।
ডব্লিউএইচও গাইডলাইন জারি করল- এটা মিডিয়া মারফত প্রচার করতে হবে এবং বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনতে হবে। ইংল্যান্ড সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রফেসর এন্ডারসন বললেন যে, এই মহামারি থেকে বাঁচার একটাই উপায়-ট্যামিফ্লু পিল খাওয়া। না হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে।
আতঙ্কিত হয়ে সবাই এন্টিফ্লু ওষুধ এবং ভ্যাকসিন অর্ডার করতে লাগল। দশ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ এবং ভ্যাকসিন বিক্রি হয়ে গেল।
পরে দেখা গেল ২০০৮ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে যত লোক মারা গেছে, ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুতে মারা গেছে তার চেয়েও কম। যারাওবা মারা গেছে তাদের অনেকেরই আগে থেকে ক্যান্সার, ফুসফুসের সংক্রমণ, এইডস, মারাত্মক স্থূলতা, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠলো- WHO কেন এত আতঙ্ক ছড়ালো? ইউরোপিয়ান কাউন্সিল পুরো বিষয়টাকে তদন্তের নির্দেশ দিল। আর তাতে আতঙ্ক বেনিয়া শোষকদের স্বরূপ উন্মোচিত হলো।
সোয়াইন ফ্লুতে সবচেয়ে বেশি যে ওষুধটি বিক্রি হয়েছে- ট্যামিফ্লু, এর প্রস্তুতকারক ‘হফম্যান লা রশ’ নামে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি। আর ওষুধটির মূল উপাদান প্রস্তুতকারক হচ্ছে গ্ল্যাক্সো স্মিথক্ল্যাইন (জিএসকে)।
তদন্তে দেখা গেল- ডব্লিউএইচও-এর বিশেষজ্ঞদের যে প্যানেল এটাকে মহামারি আকারে ঘোষণা করেছিল, তার একাধিক সদস্য হফম্যান লা রশ এবং জিএসকে- এই কোম্পানিতে কাজ করতেন।
এবং বৃটেন সরকারের যিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ছিলেন, তিনি প্রতি বছর জিএসকে থেকে ১ লক্ষ ১৬ হাজার পাউন্ড সম্মানী পেতেন। আর মার্কিন সরকারের যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ডিভিশনের প্রধান- ন্যান্সি কক্স, তিনি হফম্যান লা রশ এবং জিএসকে থেকে গবেষণা করার জন্যে নিয়মিত অনুদান পেতেন।
টিকা, ওষুধ বিক্রি শেষ। পৃথিবীতে সোয়াইন ফ্লু আতঙ্ক বলেও আর কোনোকিছু দ্বিতীয়বার আসে নাই।
তাহলে করোনার ক্ষেত্রে কী হয়েছে? সেইম কেস! প্রথমে আতঙ্ক ছড়িয়ে এক শ্রেণীর ধনী মানুষ আরো ধনীতে রূপান্তরিত হয়েছে। এবার আবারো মানুষকে বিভ্রান্ত-আতঙ্কিত করার পায়তারা চলছে। কারণ ফাইজার এবং অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বাজারে আসতে শুরু করেছে। অবশ্য আল্লাহ্ আলিমুল গায়েব ভালো জানেন এত তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন কী করে আসে! মিনিমাম দশ বছর নাকি লাগে ভ্যাকসিন বানাতে।
তো, ভ্যাকসিন বাজারজাত হচ্ছে, অতএব মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর এটা-ই উপযুক্ত সময়! কারণ মানুষকে আতঙ্কিত করতে পারলেই তারা ভ্যাকসিন কিনতে বাধ্য হবে। যারাও কিনবে কি কিনবে না এই দোলাচলে আছে তারাও ভ্যাকসিন কিনবে যদি তাদের মধ্যে কৃত্রিমভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যায়।
আসলে আতঙ্ক ছড়ানোরও একটা গ্রামার আছে। এই গ্রামারটা যিনি বুঝতে পারবেন, তার আতঙ্কিত হওয়ার কিছু থাকবে না। যেরকম আল্লাহর রহমতে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিচ্ছু নাই।
আমরা করোনার শুরুতেই যেটা বলেছি- যে সচেতন হতে হবে, আতঙ্কিত নয়- আমরা আমাদের বক্তব্যেই অটল আছি। ফ্লু সিজনে ফ্লু ছড়াবেই। বড় জোর মিউটেশনের মাধ্যমে রূপান্তর ঘটতে পারে। এগুলো নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ফাউন্ডেশনের পরামর্শগুলো মানছেন, মানতে থাকুন। আতঙ্কবাদীদের প্রচার প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে স্বাভাবিক জীবনধারা অব্যাহত রাখুন।