কালোজিরাকে বলা হয় প্রাকৃতিক মহৌষধ। কারণ হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ সুস্থ থাকার জন্য, বহু রোগের নিরাময়ের জন্য কালোজিরা ব্যবহার করে আসছেন।
মহানবী (স) সেই ১৪শ বছর আগে বলে গেছেন, “মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ওষুধ হচ্ছে কালোজিরা”
এ-কালের গবেষকরা গবেষণা করে বলছেন যে, এই হাদীসটি অত্যন্ত সত্য।
কালোজিরায় রয়েছে যাদুকরী নিরাময় ক্ষমতা
বহু রোগ নিরাময় করার ক্ষমতা রাখে কালোজিরা। বিশেষ করে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস, এলার্জিক রাইনাইটিস, ক্রনিক সর্দি-ঠান্ডা, কোল্ড এলার্জি, ডাস্ট এলার্জি, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট যাদের লেগে থাকে তারা যদি নিয়মিত কালোজিরা খান তাহলে দারুণ উপকার পাবেন।
কালোজিরায় রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট যেমন- থাইমোকুইন, কারভাক্রল, ট্যানেথল ও ফোর-টারপিনিয়ন। এন্টি-অক্সিডেন্ট হলো এমন একটি পদার্থ যা আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। দেহকে রক্ষা করে ফ্রি-রেডিকেল নামক ক্ষতিকর পদার্থ থেকে থেকে।
এছাড়াও এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার, ডায়বেটিস, হৃদরোগ এবং স্থূলতা প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্ট্রেরল কমায়
বিশেষ করে এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমায় কালোজিরা। অন্যদিকে বাড়ায় উপকারী কোলেস্ট্রেরল এইচডিএল।
ফলে নিয়মিত যখন আপনি কালোজিরা খাবেন আপনার এলডিএল কম থাকবে, এইচডিএল বেশি থাকবে। আপনি সহজেই উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে পারবেন।
লিভারকে রক্ষা করে
আমরা যা কিছুই খাই না কেন, এটি প্রথমে ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে রক্তে যায়, এরপর রক্ত থেকে লিভারে। খাবারের মধ্যে যদি ক্ষতিকর পদার্থ থাকে তাহলে তা লিভারকে ক্ষতি করতে সক্ষম। কালোজিরা লিভারকে এই সকল ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে।
ডায়বেটিস রোগীরা কেন কালোজিরা খাবেন?
ডায়বেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তের সুগার একটা বিরাট সমস্যা। কালোজিরা ব্লাড সুগার কমাতে সক্ষম। যখন আপনি নিয়মিত কালোজিরা খাবেন তখন আপনার ব্লাড সুগার লেভেল কমবে। ফলে আপনি সুস্থ থাকবেন।
ন্যাচারাল এন্টিবায়োটিক
কালোজিরায় রয়েছে Anti-bacterial activity। আপনি যখন নিয়মিত কালোজিরা খাবেন এই কালোজিরা আপনার শরীরে এন্টিবায়োটিকের মতো কাজ করবে এবং বিভিন্ন রকম ক্ষতিকর পদার্থ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।
পাকস্থলীতে ঘা হওয়া থেকেও রক্ষা করে কালোজিরা।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
কালোজিরায় রয়েছে এন্টি-ক্যান্সারাস একটিভিটি। বলা যায় এটি একটি শক্তিশালী এন্টি-ক্যান্সার ড্রাগ।
নিয়মিত খেলে কালোজিরা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার থেকে আপনাকে প্রতিরক্ষা দিতে সক্ষম। এর মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার, লাং ক্যান্সার, সারভাইকাল ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, স্কিন ক্যান্সার এবং কোলন ক্যান্সার অন্যতম।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
সর্বোপরি কালোজিরা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে দারুণভাবে শক্তিশালী করে।
আমরা সুস্থ থাকি যখন আমাদের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী থাকে। আর অসুস্থ হই যখন ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়। তাই সুস্থ থাকতে সবচেয়ে জরুরি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা। এক্ষেত্রে কালোজিরা দারুণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কীভাবে খাবেন?
সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন চা চামচের আধা চামচ কালোজিরা খান। চিবিয়ে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো। কারণ কালোজিরার মধ্যে যে বাষ্প থাকে চিবিয়ে খেলে তা দেহে যাবে। তবে চিবিয়ে খেতে অসুবিধা হলে ভর্তা বা পাউডার করেও খেতে পারেন।
নিয়মিত এভাবে কালোজিরা খান। টানা খেলে একটা সময় দেখবেন আপনার সুস্থতার পরিমাণ বাড়বে এবং অসুস্থ হওয়ার হার কমতে শুরু করবে। ধীরে ধীরে আপনি এগিয়ে যাবেন সুস্থ কর্মময় দীর্ঘজীবনের দিকে।