1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০১ পূর্বাহ্ন

কে এই “গনিম-আল-মুফতাহ্” ?

  • সময় সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২
  • ৫৭৩ বার দেখা হয়েছে
আজমুল আজিজ
গতকাল বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে ভাবছিলাম কে এই “গনিম-আল-মুফতাহ্” ?
ইন্টারনেট ও গুগলের সহযোগীতায় তাকে মোটামুটিভাবে চিনতে পারলাম। গনিম আল মুকতাহ নামটি আরব বিশ্বে খুবই পরিচিত। বয়স কম হলেও গনিম কাতারের বিখ্যাত একজন ব্যক্তি। তার হাত ধরেই বেজে উঠলো ফিফা বিশ্বকাপের দামামা। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর উদ্বোধন করলেন গনিম-আল-মুখতাহ্। আল বাইয়াত ষ্টেডিয়ামের এই অনুষ্ঠান উপভোগ করলো গোটা বিশ্বের ফুটবল প্রেমীরা।
“গনিম-আল-মুখতাহ্” এর শরীরের নিচের অংশ নেই। “কোডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম” রোগে আক্রান্ত গনিমের শরীরের নিম্নাংশ না থাকা সত্বেও তিনি গোটা কাতার তথা আরব দুনিয়ার একজন রোল মডেল। আরবের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর ভক্ত, সমর্থকেরা।
তিনি একজন বিশ্বখ্যাত মোটিভেশনাল স্পীকার। বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুৃষকে অনুপ্রেরনা দিয়েছেন। গনিম যখন মাতৃগর্ভে ছিলেন, তখন আলট্রা-সাউন্ড মেশিনে ধরা পড়ে তাঁর শরীরের অবিকশিত অংশ। ডাক্তার গর্ভপাতের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ, অপূর্ণাঙ্গ সন্তানের জন্ম দেওয়ার চেয়ে গর্ভপাত করানোকেই ডাক্তার উত্তম মনে করেছিলেন।
গনিমের মাতা-পিতা ডাক্তারের এই সিন্ধান্ত মেনে নিতে পারলেন না। কারণ, ইসলামিক আইনে গর্ভপাত হলো বড় ধরনের অপরাধ। গনিমের মাতা “ইমান-উল-আবদেলি” এবং পিতা “মুহাম্মদ-আল-মুফতাহ্” এটাকে মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত হিসেবে মেনে নিয়ে বিকলাঙ্গ সন্তানের জন্ম দিলেন।
গনিমের মাতা স্বামীর উদ্দেশ্যে বলেন – “আমি হবো সন্তানের বাম পা, আর তুমি হবে তার ডান পা। আমরা দুজনে সন্তানকে কখনো নিম্নাংশের অভাব টের পেতে দেবো না। ৫ই মে ২০০২ সালে পৃথিবীর আলো দেখেন গনিম। শিশুকাল থেকেই পদে পদে সামাজিক বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তিনি। স্কুল, খেলার মাঠ সহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে কটু কথা শুনতে হতো।
তিনি এসবের তোয়াক্কা না করেই এগিয়ে যেতেন নিজ পথে, একেবারে নিজস্ব ছন্দে। বন্ধুদের বোঝাতেন – তাঁর অসম্পূর্ণ শরীরের জন্য তিনি মোটেও দোষী নন। আল্লাহ তাঁকে যে পরিমাণ অঙ্গ-প্রতঙ্গ প্রদান করে পাঠিয়েছেন, এর জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।
নিজের সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব-কে এসব বোঝাতে বোঝাতে নিজের অজান্তেই তিনি হয়ে ওঠেন একজন মোটিভেশনাল স্পীকার। একদিন যাঁর ভুমিষ্ট হওয়া নিয়েই যথেষ্ট সন্দেহ ছিলো, গতকাল তাঁর হাতেই উদ্বোধন হলো বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর।
কাতারের ২০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী যুবক আজ সেদেশের শান্তির দূত হিসাবে গোটা বিশ্ব দরবারে পৌঁছে গেছেন। ব্যক্তিজীবনে গনিম একইসাথে মোটিভেশনাল স্পীকার, কবি, সাহিত্যিক, দারুণ বক্তা হিসাবে আরব দুনিয়ায় সমাদৃত।
আজ তিনি কাতার সরকারের প্রধান প্রতিনিধি হিসাবে বিশ্বের দরবারে নিজের পরিচিতি তুলে ধরলেন।
গনিম-আল-মুকতাহ, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তোমাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছো।
তুমি প্রমাণ করে দিলে, শারিরীক প্রতিবন্ধকতা সাফল্যের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com