কোরবানি একটি আরবি শব্দ যা এসেছে আরবি ‘কোরবান’ শব্দ থেকে, যার আদি শব্দটি ছিল ‘কুরব’। মানে নৈকট্য বা nearness.
কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ। মানে আমরা আমাদের কিছু ত্যাগ বা কোরবান করে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করতে চাই।
যেমন চেয়েছিলেন নবী হযরত ইব্রাহিম (আ)। এবং এই নৈকট্য লাভেই আমাদের আনন্দ, আমাদের ঈদ।
পবিত্র কোরআনে সূরা হজে বলা হয়েছে –
৩৪. আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে কোরবানিকে ইবাদতের অংশ করেছি। যাতে জীবনোপকরণ হিসেবে যে গবাদি পশু তাদেরকে দেয়া হয়েছে, তা জবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে আর (সবসময় যেন মনে রাখে) একমাত্র আল্লাহই তাদের উপাস্য। অতএব তাঁর কাছেই পুরোপুরি সমর্পিত হও।
৩৬. কোরবানির পশুকে আল্লাহ তাঁর মহিমার প্রতীক করেছেন। তোমাদের জন্যে এতে রয়েছে বিপুল কল্যাণ। অতএব এগুলোকে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় এদের জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। এরপর এরা যখন জমিনে লুটিয়ে পড়ে, তখন তা থেকে (মাংস সংগ্রহ করে) তোমরা খাও এবং কেউ চাক না চাক সবাইকে খাওয়াও। এভাবেই আমি গবাদি পশুগুলোকে তোমাদের প্রয়োজনের অধীন করে দিয়েছি, যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করো।
অর্থাৎ কোরবানি আমাদের জন্যে ইবাদতের একটি অংশ। আমাদেরকে যে জীবনোপকরণ দেয়া হয়েছে, তা যেন আমরা আল্লাহর নাম নিয়ে কুরবান করি। এবং তা সবার মধ্যে বিলিয়ে দেই।
কিন্তু যদি আমরা শুধু আমাদের জীবনোপকরণ থেকে একটা অংশ কোরবান করি তাতেই কি আমাদের কোরবানি হয়ে যাবে?
এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় এর পরের ৩৭ নাম্বার আয়াতে –
৩৭. (কিন্তু মনে রেখো) কোরবানির মাংস বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ-সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তোমাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন, সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো।
অর্থাৎ আমরা আমাদের জীবনোপকরণ থেকে যে বস্তু বা পশু আমরা কোরবান করি তা স্রষ্টার কাছে পৌঁছায় না। স্রষ্টার কাছে পৌঁছায় আমাদের নিয়ত, আমাদের স্রষ্টা সচেতনতা।