রাসুল (সা.) তার প্রিয় সাহাবিদের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ—প্রত্যেক বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। তার প্রতিটি কর্ম ও পদক্ষেপ মানবতার অনুসরণযোগ্য। সফলতা ও কামিয়াবির মাধ্যম। জীবনপথের পাথেয়। তার কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করলে মুমিনের জীবনে বয়ে যাবে প্রশান্তির ফল্গুধারা।
৯৮৩.
‘বিসমিল্লাহ’ (আল্লাহর নামে) বলে খাবার শুরু করো। ডান হাতে খাবার নেবে।
—ওমর ইবনে আবু সালামা (রা); বোখারী, মুসলিম
৯৮৪.
ভুলক্রমে ‘বিসমিল্লাহ’ না বলে খাবার শুরু করার পর যদি খাওয়ার মাঝে বিষয়টি মনে পড়ে, তবে বলবে ‘প্রথম ও শেষ সবটাই আল্লাহর নামে’।
—আয়েশা (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী
৯৮৫.
শুকরিয়া প্রকাশ করে যে খাবার গ্রহণ করে, সে রোজা রাখার মতোই পুণ্য অর্জন করে।
—আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী
৯৮৬.
বরকত নাজিল হয় প্লেটের মাঝে। তাই প্লেটের মাঝখান থেকে নয়, খাবার শুরু করো তোমার সামনে থেকে।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী
৯৮৭.
বাম হাত দিয়ে পানাহার কোরো না। শয়তান বাম হাত দিয়ে পানাহার করে।
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); মুসলিম, তিরমিজী
৯৮৮.
হেলান দিয়ে বা কাত হয়ে খাবার খেয়ো না।
—ওয়াহাব ইবনে আবদুল্লাহ (রা); বোখারী
৯৮৯.
নবীজী (স) তিন আঙুল ব্যবহার করে খেতেন। খাবার শেষ করে আঙুল চেটে খেতেন।
—কাব ইবনে মালেক (রা); মুসলিম
৯৯০.
খাবার খেয়ে আঙুল না চেটে তা কাপড় দিয়ে মুছবে না।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী, মুসলিম
৯৯১.
খাবার শেষ করে আঙুল চেটে ও পাত্র পরিষ্কার করে খাবে (যাতে পাত্রে কোনো ঝুটা না থাকে)।
—জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা); মুসলিম
৯৯২.
খাবার প্লেট থেকে পুরোপুরি পরিষ্কার করে খাবে। প্লেটে কোনো খাবার উচ্ছিষ্ট করবে না। শয়তানের জন্যে খাবারের কোনো অংশ রাখবে না। কোনো লোকমা হাত থেকে পড়ে গেলে ধুলা বা ময়লা পরিষ্কার করে তা খেয়ে নেবে। খাবার শেষে আঙুল চেটে নেবে (যাতে আঙুলে লেগে থাকা খাবারের অংশবিশেষও অপচয় না হয়)। কারণ তুমি জানো না—আজকের খাবারের কোন অংশে বরকত রয়েছে।
—আনাস ইবনে মালেক (রা); মুসলিম
৯৯৩.
খাবার গ্রহণ করার পর তুমি বলো, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর। তিনি আমাকে খাওয়ালেন। আমাকে রিজিক দিলেন, যা (শুধু) আমার প্রয়াস ও ক্ষমতায় সম্ভব ছিল না। সবটাই তাঁর দয়া।’ তোমার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
—মুয়াজ ইবনে আনাস (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী
৯৯৪.
যে এক লোকমা খাবার গ্রহণ করেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, এক চুমুক পানি পান করেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে (‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে), তার ওপর আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকেন।
—আনাস ইবনে মালেক (রা); মুসলিম
৯৯৫.
একজনের উদরপূর্তির খাবার দুই জনের জন্যে যথেষ্ট। একইভাবে দুই জনের খাবার চার জনের জন্যে এবং চার জনের খাবার আট জনের জন্যে যথেষ্ট।—জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা); মুসলিম
৯৯৬.
ভরা পেট হচ্ছে সবচেয়ে অনিষ্টকর পাত্র। মেরুদণ্ড সোজা রাখার জন্যে কয়েকটি লোকমাই যথেষ্ট। তারপরও যদি আরো খাবারের প্রয়োজন হয়, তবে তোমরা পাকস্থলীকে তিন ভাগে ভাগ করো। একভাগ খাবার দিয়ে পূর্ণ করো। একভাগ পানীয় দিয়ে। আর বাকি একভাগ খালি রাখো, যাতে ভালোভাবে দম নিতে পারো।
—মিকদাম ইবনে মাদিকারিব (রা); তিরমিজী
৯৯৭.
একজন বিশ্বাসী (ঈমানদার ব্যক্তি) খায় এক পেট। আর একজন অবিশ্বাসী ভোগী খায় সাত পেট।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম
৯৯৮.
নবীজী (স) কখনো কোনো খাবার নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন নি। খাবার পছন্দ হলে তিনি খেতেন, পছন্দ না হলে খেতেন না।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম
৯৯৯.
স্বর্ণ বা রৌপ্য পাত্র থেকে যে খাবার বা পানি গ্রহণ করল, সে যেন জাহান্নামের আগুন দিয়ে তার উদরপূর্তি করল।
—উম্মে সালামা (রা); বোখারী, মুসলিম
১০০০.
সঙ্গীদের আগে খাওয়া শেষ করবে না।
—জাফর ইবনে মুহাম্মদ (রা); মেশকাত
১০০১.
একজন সাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রসুল! আমরা খাই কিন্তু তৃপ্তি পাই না। নবীজী (স) জিজ্ঞেস করলেন, ঘরে তোমরা কি আলাদা আলাদা খাও? সাহাবী বললেন, জ্বী হাঁ। নবীজী (স) বললেন, তোমরা একসাথে খাও। আল্লাহর নাম নিয়ে খাও। খাবারে বরকত ও তৃপ্তি পাবে।
—ওয়াহশি ইবনে হারব (রা); আবু দাউদ