গীবতের আটটি কারণ ইমাম গাজ্জালী শনাক্ত করেছেন।
এক নম্বর কারণ হচ্ছে, রাগ বা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে মনের ঝাল মেটানোর জন্যে গীবত করা। অর্থাৎ সে সামনাসামনি কিছু বলতে পারে নি তাই মনের ঝাল মিটাচ্ছে।
তো যারা সামনাসামনি বলতে পারে না তারা পেছনে বলে। এই মনের ঝাল মেটাতে গিয়েই একবার দুইবার তিনবার তারপরে গীবত তার অভ্যাসে পরিণত হয়।
দুই নম্বর কারণ, অন্যের দেখাদেখি। এমন যে, আরেকজন হাঁ-র সাথে হাঁ মেলানো। আমাদের মধ্যেও কিছু মানুষ আছে যে, অন্যে যা-ই বলুক সেটার সাথে সে হাঁ মিলায়। এই ভেবে যে, হাঁ না মিলালে সে যদি অখুশি হয়!
তিন নম্বর হচ্ছে, পূর্ব সতর্কতা হিসেবে যে, অমুক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে বলতে পারে বা অমুক ব্যক্তি অমুককে দিয়ে আমার বিপক্ষে লাগাতে পারে। তাই সেই ব্যক্তি যাতে তার কথায় প্রভাবিত না হয় সেজন্যে আগেই তার নামে বদনাম করে আসা অর্থাৎ আগে থেকে যদি তার সম্পর্কে একটা বিরূপ ধারণা দিয়ে দেয়া যায় তো সেই ব্যক্তি এই থার্ড পারসনকে যা-ই বলুক তখন সে প্রথম বিশ্বাস করতে চাইবে না। কারণ কিছু ইনফরমেশন তার কাছে আছে।
চার নম্বর, কোনো দোষ থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্যে গীবত করা। অমুক লোকটা তো এই এই কাজটা করেছে তো আমার কী হলো? আমার দোষ কী আরকি? অমুকেও করেছে অমুকেও করেছে তাহলে আমি করলাম অসুবিধা কী হলো? অর্থাৎ নিজের দোষটাকে ঢাকার জন্যে, নিজের দোষটাকে জাস্টিফাই করার জন্যে গীবত করা।
পাঁচ নম্বর পয়েন্ট হচ্ছে, নিজের গর্ব প্রকাশ করার জন্যে অন্যকে হেয় করা। হেয় করে নিজেকে বড় প্রমাণ করার চেষ্টা করা।
ছয় নম্বর হচ্ছে, হিংসার কারণে। হিংসাবশত ঈর্ষাবশত বদনাম করা।
সাত নম্বর হচ্ছে, কৌতুক করে গীবত করা। আরেকজনের দোষ বর্ণনা করে তাকে হেয় করার চেয়ে নিজেরা হাসাহাসি করা হচ্ছে এর লক্ষ্য। অর্থাৎ কৌতুক করে অপরকে হাসানো।
আট নম্বর, অন্যকে ঘৃণারপাত্র হিসেবে বর্ণনা করার জন্যে গীবত করা। আরেকজন যাতে ঘৃণারপাত্র বানানো যায় সেজন্যে তার বদনাম করা।
[প্রজ্ঞা জালালি ০২ নভেম্বর ২০২৪]