1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাসের টিকার ব্যাপারে আপনার মত কী?

  • সময় শুক্রবার, ৮ অক্টোবর, ২০২১
  • ৯১৪ বার দেখা হয়েছে

টিকার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন ভালো।

তবে সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে আমরা যেটা বুঝি তাহলো-যে ভাইরাসের ফ্যাটালিটি রেট মাত্র ১%, শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি ক্ষেত্রে যার সংক্রমণ মৃদু, চিকিৎসার জন্যে হাসপাতাল তো নয়ই, ডাক্তারের কাছে পর্যন্ত যেতে হয় না, ঘরে বসে সাধারণ পথ্য-বিশ্রামেই সুস্থ হয়ে যায় এবং যে ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অনেকের এমনকি কোনো লক্ষণ-উপসর্গ পর্যন্ত দেখা দেয় না, সেই ভাইরাসের টিকা নিলেই কি আর না নিলেই কী!

বরং করোনাভাইরাসের টিকা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন যেরকম প্রতিযোগিতা চলছে, তা দেখে মনে হচ্ছে- সবাই যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে কে কার আগে টিকা নিয়ে আসবে বাজারে যাতে প্রথম ব্যবসাটা তারাই ভালোভাবে করতে পারে!

এজন্যে একটা টিকা বা ভ্যাকসিনকে যেসব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিতে হয় সেসব এড়াতেও তারা দ্বিধা করছে না। কারণ সেগুলো করতে গেলে কয়েক বছর, কখনো কখনো কয়েক দশক পর্যন্তও লাগবে!

আর তখন টিকা বা ভ্যাকসিন নিয়ে এই ব্যবসাটাও করা যাবে না। কারণ করোনার আতঙ্ক এখন মানুষকে যেভাবে গ্রাস করে রেখেছে, সময়ের সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই তো সেটা থাকবে না!

আসলে এবার করোনাভাইরাসকে নিয়ে যেভাবে আতঙ্ক বিস্তার করা হলো বা হচ্ছে তা দেখে মনে পড়ছে ১০ বছর আগে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি মহামারি আতঙ্কের কথা!

সোয়াইন ফ্লু। ২০০৯ সালে মেক্সিকোতে প্রথম এই রোগের সূত্রপাত হয়। এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা বা জ্বর যা শুকরের মধ্যে দেখা যেত।

মেক্সিকো সরকার যখন রোগটি নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্যে এর নমুনা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পাঠায়, বিজ্ঞানীরা একে ভয়ংকর এক ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করলেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভবিষ্যদ্বাণী করল- পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবে এবং মারা যাবে কয়েক মিলিয়ন মানুষ।

পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। স্কুল-কলেজ বন্ধ, ফ্লাইট বন্ধ, মাত্র কয়েক সপ্তাহে মেক্সিকোতে ক্ষতি হলো সোয়া দুই বিলিয়ন ডলার।

যেহেতু এই রোগের সাথে শুকরের একটা যোগ আছে, পৃথিবীজুড়ে শুকরের ওপর নেমে এল খড়গ! মিশরের সব শুকরকে জবাই করে ফেলা হলো। কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে প্যানডেমিক বা বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করল। মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে বলল এবং দেশগুলোকে বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুদ করতে বলল।

এমন সময়ে ইংল্যান্ড সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রফেসর এন্ডারসনকে বলতে শোনা গেল- এই মহামারি থেকে বাঁচার একটাই উপায়- ট্যামিফ্লু পিল খাওয়া। নইলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে।

আতঙ্কিত হয়ে সবাই ট্যামিফ্লু এবং আরো যেসব ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, কিনতে লাগল। ১০ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ এবং ভ্যাকসিন বিক্রি হয়ে গেল।

পরে দেখা গেল যে ২০০৮ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে যত লোক মারা গেছে, ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুতে মারা গেছে তার চেয়েও কম! দুলক্ষের কিছু বেশি। (অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভয় দেখিয়েছিল- মারা যাবে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ)!

তাছাড়া সোয়াইন ফ্লুতে যারা মারা গেছে, তাদের বেশিরভাগেরই আগে থেকে ক্যান্সার বা এইডসের মতো প্রাণঘাতী রোগ এবং শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমার মতো ফুসফুসের সমস্যা এবং মারাত্মক স্থূলতা ছিল।

পরে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল একটা তদন্ত পরিচালনা করে যে, WHO কেন এত আতঙ্ক ছড়ালো?

তখন দেখা গেল যে ট্যামিফ্লু নামের যে ওষুধটি সোয়াইন ফ্লু-র চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে তার প্রস্তুতকারক সুইস কোম্পানি হফম্যান লা রশ এবং উপাদান প্রস্তুতকারক কোম্পানি জিএসকে-তে কর্মরত বেশ কয়েকজন সেসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঐ বিশেষজ্ঞ প্যানেলেরও সদস্য ছিল যেখান থেকে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে একের পর এক ভীতিকর ঘোষণা এসেছে!

এবং যে বৃটিশ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ট্যামিফ্লু-র প্রচারণা চালিয়েছেন, তিনি প্রতি বছর জিএসকে থেকে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ডলার পেতেন সম্মানী হিসেবে।

এমনকি এই সোয়াইন ফ্লু কেলেংকারিতে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার নামও শোনা যায়। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর ইনফ্লুয়েঞ্জা ডিভিশনের ডিরেক্টর ন্যান্সি কক্স।

জিএসকে তাকেও নিয়মিত অনুদান দিত।

শেষ পর্যন্ত কী হলো?

ওষুধ বিক্রি শেষ। টিকা বিক্রি শেষ। পৃথিবীতে সোয়াইন ফ্লু-ও শেষ! সোয়াইন ফ্লু বলে আর কোনো রোগের অস্তিত্ব পৃথিবীতে থাকল না!

আর এই যে টিকা, বিশেষজ্ঞরাই বলছেন যে, কোভিড-১৯ টিকার কার্যকারিতার মেয়াদ অনিশ্চিত।

কারণ এর আগে যে ছয় ধরনের করোনাভাইরাসের কথা জানা গেছে তার চারটির ক্ষেত্রে টিকা বা ভ্যাকসিন দিয়ে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা হয়েছিল তা বেশিদিন টেকে নি। সর্দি বা ফ্লু-র মতোই তা বার বার বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে এসেছে।

এবং এটা শুধু আমাদের কথা না। বিশেষজ্ঞরাই এখন বলছেন এ কথা-অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজিস্ট ড. সুনেত্রা গুপ্তা বলেন

I think the coronavirus pandemic will end naturally. It will settle. But it will end by not going away.

It will end by becoming part of our lives just like influenza, hopefully with a lower death toll than influenza.

অর্থাৎ “করোনাভাইরাস আসলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে যাচ্ছে। কিন্তু এর ক্ষতিকারক প্রভাব হবে ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়েও কম!”

তাছাড়া একটু আগেই আমরা যেটা বলছিলাম যে, করোনাভাইরাসের টিকা দ্রুততম সময়ের মধ্যেই মানুষের হাতে চলে আসবে বলে যারা দাবী করছেন বা আশা (!) দেখাচ্ছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে, যে ভাইরাসের ভ্যাকসিন এত সহজে আবিষ্কার হতে পারে, সে ভ্যাকসিনের আদৌ প্রয়োজন আছে কি না!

বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এ বিষয়টি তুলে ধরছেন। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত হবে। এর জন্যে ভ্যাকসিনের কোনো প্রয়োজন নেই।

এদের মধ্যে আছেন ইতালির সেন্ট ম্যাটিনো হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মাত্তিও বাসিত্তি। তিনি বলছেন-coronavirus has downgraded from Tiger to Wild Cat and could die out without vaccine”

অর্থাৎ করোনা বাঘ এখন নেহাত বেড়ালে পরিণত হয়েছে। এবং এর জন্যে ভ্যাকসিনের আর প্রয়োজন হবে না।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © RMGBDNEWS24.COM