কক্সবাজারের চকরিয়ায় আগুনে পুড়ে তিন ভাইবোনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাংয়ের সাবানঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুরা হলো জাহেদুল ইসলাম (১২), ফৌজিয়া জান্নাত মীম (১০) ও আফিয়া জান্নাত মিতু (৮)। তারা সাবানঘাটা এলাকার জাকের হোসেনের সন্তান। তাঁর ১৫ মাস বয়সী আরেকটি ছেলে রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর জাকের হোসেনের স্ত্রী কাজল আকতার তাঁর ১৫ মাস বয়সী শিশুসন্তানকে নিয়ে বাড়ির একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁদের অন্য তিন সন্তান আরেক কক্ষে ঘুমায়। রাতে জাকের বাড়িতে ছিলেন না। রাত পৌনে ১২টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ঘরে আগুন লাগে। এ সময় ঘুম থেকে উঠে ১৫ মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে আসেন কাজল আকতার। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর অন্য কক্ষে তিন শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। তিন ভাইবোন আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।
শিশুদের মা কাজল আকতার জানান, তিনি ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এক কক্ষে ঘুমান। অন্য বাচ্চারা আরেক কক্ষে ঘুমায়। আগুন লাগার পরপরই ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে তিনি ঘর থেকে বের হন।
কাজল আকতার বলেন, ‘আমার জাহেদুল, মীম ও মিতুর কথা খেয়াল নেই। আমি জিনিসপত্র ও আলু সরাতে ব্যস্ত ছিলাম। পরে খেয়াল করে দেখি আমার সন্তানেরা পুড়ে গেছে।’ আহাজারি করতে করতে কাজল বলেন, ‘আমি তো মরে যাচ্ছি। আমি কি নিয়ে বাঁচব। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছৈয়দ নূর বলেন, জাকের হোসেনের বসতঘরটি টিনের ছাউনি ও কাঁচা মাটির ঘর। ঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ঘটনার আকস্মিকতায় সন্তানদের বের না করে কাজল আকতার ঘরের জিনিসপত্র সরাতে শুরু করেন। এ কারণে এত বড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তিনটি শিশু পুড়ে অঙ্গার হয়েছে।
হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম বলেন, শর্টসার্কিট থেকে বাড়িতে আগুন লাগে। শিশুদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ইউএনও আছেন। তাঁরা যেভাবে সিদ্ধান্ত দেন, সেভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মুহাম্মদ যোবায়ের আজ মঙ্গলবার সকালে বলেন, রাতেই শিশু তিনটির লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।