রুপালি পর্দায় জেমস বন্ডকে যিনি প্রথম মূর্ত করে তুলেছিলেন, সেই শন কনারি আর নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাহামা দ্বীপে অবস্থানকালে ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি চিরঘুমে চলে গেছেন।
এই বন্ড তারকার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তাঁর ছেলে জেসন কনারি জানান, জাতিতে স্কটিশ এই অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন।
পাঁচ দশকের অভিনয়জীবন ছিল শন কনারির। ‘দ্য আনটাচেবলস’ চলচ্চিত্রে একজন আইরিশ পুলিশের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য ১৯৮৮ সালে অস্কার পুরস্কার পান তিনি। নাইট উপাধি পান ২০০০ সালে। নিজের নব্বইতম জন্মদিন তিনি পালন করেছেন গত আগস্টে। যুক্তরাজ্যের এডিনবরায় ১৯৩০ সালের ২৫ আগস্ট তাঁর জন্ম।
যে চরিত্র তাঁকে সর্বাধিক খ্যাতি এনে দিয়েছে, সেই বন্ড সিরিজের সাতটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন কনারি। বন্ড চরিত্রে সর্বপ্রথম তিনি অভিনয় করেন ১৯৬২ সালে। ১৯৮৩ সালে শেষ বন্ড চরিত্রে তাঁকে দেখা যায়। তাঁর অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে আরো আছে ‘দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর’, ‘হাইল্যান্ডার’, ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’, ‘লাস্ট ক্রুসেড’, ‘দ্য রক’। অভিনেতা থেকে প্রযোজকের খাতায়ও নাম লিখিয়েছেন তিনি।
অভিনয় দিয়ে দর্শকদের হূদয় জয় করে নিলেও সব সমালোচকের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন না শন কনারি। চরিত্রে খানিকটা নির্মমতা আর অবজ্ঞার ভাব থাকায় সমালোচকদের অনেকেই তাঁকে পছন্দ করতেন না। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের পর্যালোচনায়ও এর ছাপ পড়তে দেখা গেছে।
ক্যারিয়ারে সফল এই অভিনেতার একটি স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেছে। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার শন কনারি ২০১৪ সালে এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে গেলে তিনি বাহামার বাড়ি ছেড়ে স্কটল্যান্ডে ফিরবেন। সেই স্বপ্ন বুকে নিয়েই বাহামার বাড়িতে শুয়ে গতকাল শনিবার পৃথিবী ছেড়েছেন তিনি।
শন কনারির মৃত্যুর পর এক বিবৃতিতে ছেলে জেসন বলেন, ‘আমার বাবাকে যাঁরা চিনতেন ও ভালোবাসতেন, তাঁদের সবার জন্য এ এক দুঃখের দিন। আর অভিনেতা হিসেবে তাঁর যে অসাধারণ গুণ বিশ্ববাসী উপভোগ করেছে, সেই বিশ্ববাসীর জন্য এ এক বেদনাবিধুর বিয়োগ।’ সূত্র : বিবিসি।