ডায়াবেটিস শব্দটি আমাদের সবার কাছেই বেশ পরিচিত। এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো ডায়াবেটিসের রোগী নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী,
ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। এই রোগের অত্যধিক বিস্তারের কারণেই সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ডায়াবেটিস (চিনি, ডায়াবেটিস) এমন একটি রোগ। যা রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির উপস্থিতির মাত্রা বৃদ্ধি করে। খাবার খেয়ে শরীরে গ্লুকোজ হয়। এই গ্লুকোজ কোষগুলিতে ইনসুলিন-মুক্তির হরমোন হিসাবে কাজ করে।
যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। যখন প্রস্রাব বেশি হয়, তখন ডায়াবেটিসে ভোগা রোগী তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েন।
গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত মেডিটেশন অত্যন্ত ফলপ্রসূ।
২০০৮ সালে থাইল্যান্ডের বিজ্ঞানী চাইওপানোন্ট ৫০ জন টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীর ওপর গবেষণা করেন।
সকালে নাশতার পর এই রোগীদেরকে তিনি মেডিটেশন করান। দেখা গেল, মেডিটেশন এবং পরিমিত জীবনপদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক আছে।
আরেক গবেষণায় রোজেনউইক ও তার সহকর্মীরা ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে HbA1c (গ্লাইকোসাইলেটেড হিমোগ্লোবিন) এর মাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন। HbA1c হলো এক ধরনের গ্লুকোজ জাতীয় হিমোগ্লোবিন যা ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে দেখা যায়।
তারা দেখেন মেডিটেশন রক্তে এই HbA1c এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। সেই সাথে রক্তচাপকেও স্বাভাবিক রাখে।
এমনকি এই গবেষণাও প্রমাণ করে মেডিটেশন হতাশা, দুশ্চিন্তা ও নানারকম মানসিক অস্থিরতা কমায়। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ার এগুলোও উল্লেখযোগ্য কারণ।