1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন

ডেভিড ও গলিয়াথের গল্প এবং আমাদের শিক্ষা

  • সময় মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১
  • ১১৩৫ বার দেখা হয়েছে

সমস্যা, চ্যালেঞ্জ, সংকট দানবসম হতে পারে। কিন্তু দানবেরও একটা দুর্বল জায়গা আছে।

রূপকথার গল্পে যত রাক্ষস খোক্ষসের কথা আমরা শুনেছি। তাদের একটা দুর্বল জায়গা থাকে। যেটা খুবই দুর্বল। সেই দুর্বল জায়গাটা কোথায় সেটা যদি কেউ বুঝতে পারে তাহলে দানবও ধরাশায়ী হয়ে যায়।

আমরা ডেভিড এবং গলিয়াথের সেই গল্পটা সবাই জানি। গলিয়াথ কী? হি ইজ এ্যা দানব। হি ইজ এ্যা জায়গান্টিক পার্সন।

অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত, কোথাও আপনি যে আঘাত করবেন কোনো সুযোগ নাই! তার বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রাম নিয়ে কে গেলেন?

ডেভিড। এক কিশোর।

তার কোনো অস্ত্র নাই, তলোয়ার নাই, বল্লম নাই। তীর নাই, ধনুক নাই, কিচ্ছু নাই। নাথিং। গ্রামের কৃষক।

তো ডেভিড শিকারি। সে শিকার করত পাথরের নুড়ি দিয়ে। নুড়ি পাথর, ছোট পাথর। এটুকুই ছিল তার গুণ!

ডেভিডের পক্ষে যত লোকজন কেউ এগুতে চায় না। সবাই দূর থেকে দেখছে। গলিয়াথ এসে আহ্বান করছে কোন বাপের ব্যাটা আছো, এসো কে আমার সাথে লড়তে চাও।

তো গলিয়াথ দেখল কিছুক্ষণ পরে এক কিশোর এগিয়ে আসছে। কিন্তু সে নিরস্ত্র। তার একটা থলি। থলির মধ্যে নুড়ি। এবং ওটার সাথে দড়ি বাধা।

গলিয়াথ চিৎকার করছে। বলছে যে, তোমাদের যোদ্ধা পাঠাও, এই পাঠাও সেই পাঠাও।

কিন্তু যোদ্ধা বলতে তো এই এক কিশোর। কিশোর ডেভিড। সে দিব্যি এগুতে এগুতে এগুতে এগুতে কাছে চলে গেছে।

গলিয়াথ চিন্তাই করতে পারছে না যে এই ছোকরাকে দিয়ে সে কী করবে! কিন্তু ছোকরা তো! তার তো টার্গেট।

গলিয়াথের সবকিছু আচ্ছন্ন ছিল। গোটা শরীর বর্ম আবৃত ছিল। কিন্তু শুধু কপালের জায়গায় ফাঁক ছিল। কারণ কপালটা বর্মাবৃত করা যায় না। করতে গেলে চোখ ঢেকে যাবে। সে দেখতে পাবে না।

ডেভিড তার পাথর, নুড়ি গতির সৃষ্টি করে মিসাইলের মতন মেরেছিল ওই খানটায়। একদম কপাল বরাবর।

এবং গলিয়াথ ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছিল ঐ পাথরের আঘাতে। এত অস্ত্র, এত কিছু নিয়েও সে ছোট্ট ডেভিডের সাথে ফাইট করতে পারল না।

তার মানেটা কী? করোনাকালে আতঙ্কবাদী যারা ছিল, আতঙ্কবাদী দানবের কাছে আমাদের অস্তিত্ব ছিল পিঁপড়াসম।

সারা পৃথিবী আতঙ্কে সয়লাব। কিন্তু আমরা সেই আতঙ্কের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি ডেভিডের মত।

ডেভিড যে রকম গলিয়াথের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, আমরা ঠিক একইভাবে দাঁড়িয়েছি।

এবং ডেভিড কী করেছিল? ডেভিড যা জানত, যে বিদ্যা সেই বিদ্যাই প্রয়োগ করেছিল।

সে কিন্তু গলিয়াথের মত অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শী ছিল না। গলিয়াথ তো এক্কেবারে পুরোদস্তুর রণসাজে সজ্জিত। উদহারণ হিসেবে বলা যায়, একটা ট্যাংকের বিপরীতে একটা বালক।

কিন্তু ডেভিড জানত পাথর, নুড়ি ছুঁড়তে। নুড়ি কীভাবে ছুঁড়তে হয় নিখুঁতভাবে। লক্ষ্যভেদ করতে হয়।

তো করোনাকালে আতঙ্কের যে দানব, আতঙ্কের দানব হচ্ছে আসলে একটা বেলুন। বেলুন যত ফুলবে তত পাতলা হবে।

এবং আতঙ্ক হচ্ছে একটা মিসইনফরমেশন। আমরা সেটার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করেছিলাম ইনফরমেশন। সঠিক তথ্য। জাস্ট সুঁইয়ের মতো ওটা বেলুনে ঢুকে গেছে এবং বেলুনটা চুপসে গেছে।

আতঙ্কের সবচেয়ে দুর্বল জায়গাটা কোথায়? আতঙ্ক হচ্ছে একটা মিসইনফরমেশন। একটা মিসইনফরমেশন আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

তাহলে কী করতে হবে? সঠিক ইনফরমেশনটা দিতে হবে।

আমরা করোনাকালে কী করেছি? আমরা মানুষজনকে সঠিক ইনফরমেশনটা দিয়েছি। এবং প্রত্যেকটা ইনফরমেশন ছিল বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত গবেষণালব্ধ ফল।

এবং আসলে এই করোনাকালে মানবজাতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অপরাধ করেছে ডব্লিউএইচও। তাদের বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা।

এই যে লাশের প্রতি যে অবমাননা, লাশের প্রতি যে আতঙ্ক, এটা সৃষ্টির জন্যে মূল দায়ী হচ্ছে ডব্লিউএইচও। তারা বলেছিল লাশ থেকে করোনার জীবানু ছড়াতে পারে। তার মানেটা কী?

বিজ্ঞানের যারা ছাত্রছাত্রী আছেন, বায়োলজি যারা পড়েছেন তারা খুব ভালোভাবে জানেন যে, দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরে মৃতদেহে থেকে কোনোকিছুই ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই।

ওখানে কোনো ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস কোনোকিছুই আর জীবিত থাকে না। এটা তো ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রছাত্রীও জানেন।

কিন্তু ডব্লিউএইচও বলে দিল! এবং পরে আবার তারা সেটাকে সংশোধন করল!

কখন? যখন সমস্ত আতঙ্ক শেষ তখন।

তো আমরা কি করেছি? যে আতঙ্ক মিসইনফরমেশনের সবচেয়ে দুর্বল জায়গাটা হচ্ছে ইনফরমেশন। সঠিক তথ্য।

ভুল তথ্যের জায়গায় যদি আপনি শুধু সঠিক তথ্যটা পৌঁছে দিতে পারেন তাহলেই হলো। এবং আমরা এই সঠিক তথ্য পৌঁছানোর কাজটি করেছি সেই সময়।

[আর্ডেন্টিয়ার ওয়ার্কশপ, ২৯জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি, ২০২১]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © RMGBDNEWS24.COM