নিজের জন্যে নীরবে প্রার্থনা হচ্ছে সর্বোত্তম

নিজের জন্যে নীরবে প্রার্থনা হচ্ছে সর্বোত্তম

মানুষের সহজাত প্রবণতাই হলো এক উচ্চতর সত্তার কাছে নিজের হীনতা ও ক্ষুদ্রতার কথা ব্যক্ত করে তাকে ফরিয়াদ শ্রবণকারী ভেবে তার সাহায্য ও সহায়তা প্রার্থনা করা। সফলতার জন্যে কর্মপ্রচেষ্টার সাথে সাথে দোয়া বা প্রার্থনা নিশ্চিতভাবেই আমাদের চাওয়া ও প্রতিজ্ঞাকে সফল করে তুলতে সহায়তা করে।

দোয়াটা সবসময় কর্মমুখী হতে হয়। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে পড়াশোনা করাটা হলো দাওয়া। দোয়া বা প্রার্থনার ধারণা অতি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে এবং আদর্শ ও বাস্তব উভয় দিক দিয়েই এটি যথারীতি মানব সমাজে টিকে রয়েছে।

বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন, সক্রেটিস, জাবির বিন হাইয়ান, ইবনে সিনা, আলবিরুনী, ইমাম গাজ্জালী, ইমাম রাজী প্রমুখ দার্শনিক ও বিজ্ঞানীরা সবসময় খোদায়ী তওফিক কামনাকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিবেচনা করতেন। নিজেরা নিজের জন্যে নীরবে প্রার্থনা হচ্ছে সর্বোত্তম।

এ ছাড়া যেহেতু কোয়ান্টাম হিলিং হলো মনের গভীর স্তরে গিয়ে একাগ্রচিত্তে অসুস্থ বা সমস্যাগ্রস্তের জন্যে নিরাময় বা কল্যাণ কামনা করে প্রার্থনা করা, বিশ্বাসের সাথে আন্তরিক এই চাওয়াকেও স্রষ্টা কবুল করেন। এর পাশাপাশি সদকা অকল্যাণ হতে দূরে রাখে আর সাফল্যকে আরও কাছে টেনে আনে।

তবে একটি সতর্কতা হলো যে, কর্মহীনতা, গীবত, পরনিন্দা, পরচর্চা-এগুলোর কারণে দোয়া কবুল হয় না। ।   দোয়া শুধু বিপদের সময় নয়, হতে হবে সবসময়। শিক্ষার্থী অবস্থায় নিমগ্ন পড়াশুনা, রেজাল্ট ঘোষণা, খাতা দেয়া, পরীক্ষার আগে ও পরে, টিচারের সাথে সুসম্পর্ক-এ ধরনের নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা দোয়া করতে পারি।

কাজের শুরুতে দোয়া এবং কোয়ান্টা ধ্বনি ও ভঙ্গির মাধ্যমে সবসময় স্রষ্টার স্মরণ জারি রাখতে পারি। যে নিজে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে স্রষ্টা তাকেই সাহায্য করেন। তাই নিজে নিজের জন্যে দোয়া করার কোনো বিকল্প নেই।

এর পাশাপাশি হিলিংয়ে নিয়মিত নাম দিতে থাকলে মনে স্বস্তি থাকে যে সাথে আরো অনেকে আছেন শুভকামনার জন্যে। এ ছাড়াও প্রাপ্তি হিসেবে আছে-সঙ্ঘের সাথে সার্বক্ষণিক একাত্মতার অনুভূতি সৃষ্টি হওয়া, পড়াশোনায় বরকত বাড়া, আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হওয়া, হতাশা থেকে দূরে থাকতে পারা। আর স্রষ্টার রহমত সার্বক্ষণিক থাকে বলে নানা ধরনের বিচ্যুতি থেকেও বেঁচে থাকা যায়।

মাটির ব্যাংকের অর্থ যেহেতু সৃষ্টির সেবায়, অনাথ, এতিম, দুস্থ, বঞ্চিত মানুষের সেবায় ব্যয় হয়, এই নীরব দান অফুরন্ত কল্যাণ বয়ে আনে। কারণ স্রষ্টাই বলেছেন এরকম দানে তিনি কমপক্ষে ৭০০ গুণ প্রবৃদ্ধি দেবেন। এতিমের মাথার ওপর যার হাত, তার মাথার ওপর স্রষ্টার হাত মানে তাঁর দয়া ও করুণা থাকে। আমাদের মাটির ব্যাংকে দানের অর্থে লামায় শিশুকানন ও রাজশাহীতে শিশুসদনের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আলোকিত মানুষ হচ্ছে। এর প্রতিদানে স্রষ্টার কাছ থেকেও আমরা অকল্যাণ দূর করার এবং কোনো ভালো নিয়ত করলে তা সফল করার প্রত্যাশা করতে পারি।

দোয়া করা, মাটির ব্যাংকে দান বা হিলিংয়ে নাম দেয়ার পর সবরের দৃষ্টিভঙ্গি হবে-যেমন একজন ডিপার্টমেন্ট হেড শুধু তার ডিপার্টমেন্ট দেখতে পান। আর প্রতিষ্ঠানের হেড দেখেন পুরো প্রতিষ্ঠানকে। যে কারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনি নিলেই ভালো হয়।

ঠিক একইভাবে আমাদের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ। কিন্তু স্রষ্টার দৃষ্টির তো কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। তিনি সবকিছুই দেখছেন। আর আমাদের কীসে ভালো বা মন্দ তা তো তিনিই ভালো জানেন। তাই অনিশ্চয়তা, আশঙ্কায় শান্তি নষ্ট করার কোনো দরকার নেই। কোনো কিছু চাওয়ার পর ‘পেলে ভালো, না পেলে আরো ভালো’-এই দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *