1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৫ অপরাহ্ন

পরিবারে সালামের চর্চা বাড়াবে শান্তি সুখ সমমর্মিতা

  • সময় শুক্রবার, ১১ জুন, ২০২১
  • ১১৪১ বার দেখা হয়েছে

সামাজিক পরিমণ্ডলে, কর্মক্ষেত্রে, রাস্তাঘাটে কারো সাথে দেখা হলে আমরা প্রথমত সালাম দেই। সাধারণভাবে কুশল বিনিময় শুরুই হয় সালাম বিনিময়ের মধ্য দিয়ে। ‘আসসালামু আলাইকুম’ কথাটির অর্থ হলো, আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। কিন্তু পারস্পরিক সুখ-শান্তি-সাফল্য কামনার এ শুভচর্চা আমাদের পরিবারগুলোতে কতটা হয়?

অথচ একটি সুখী মমতাময় পারিবারিক আবহ সৃষ্টির জন্যে এক অনবদ্য উপায় হতে পারে এই কল্যাণ কামনা। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সালাম বিনিময় হতে পারে একটি সুন্দর পারিবারিক সংস্কৃতি।

আবহমান কাল ধরে প্রাচ্যের, বিশেষত আমাদের একটি বড় গর্বের বিষয় আমাদের পরিবার। স্থূল ভোগবাদী সংস্কৃতির আগ্রাসনে পড়ে পাশ্চাত্যের পরিবারগুলো বহুকাল ধরেই বিপর্যস্ত। যার ফলাফল ওদের আজকের ক্রমবর্ধমান সামাজিক জটিলতা, হিংস্র অপরাধপ্রবণ মনোবৃত্তি আর স্নায়বিক-মানসিক অসুস্থতা। যে কারণে পাশ্চাত্যের পরিবারগুলো আজ সত্যিকার অর্থেই ভাঙনের মুখে।

সে বিবেচনায় আমরা এখনো ভাগ্যবান। যদিও অবিদ্যাপ্রসূত দৃষ্টিভঙ্গি, ভায়োলেন্সপূর্ণ টিভি সিরিয়াল ও অসুস্থ বিনোদন আর আর্থসামাজিক নানা কারণে আমাদের পরিবারগুলো বর্তমানে একটি সংকটকাল অতিক্রম করছে। বাড়ছে স্বামী-স্ত্রী কিংবা অভিভাবক-সন্তানদের মধ্যে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি আর অকারণ দূরত্ব। এ অসহনীয় দূরত্ব দূর করতে চাই সমমর্মিতাপূর্ণ পারিবারিক পরিবেশ-যা সৃষ্টি হতে পারে, বহমান ও অটুট থাকতে পারে প্রতিদিন পারস্পরিক কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে। আর আমরা এর সূচনা ঘটাতে পারি পরিবারে সালাম আদানপ্রদানের অভ্যাসটি গড়ে তোলার মাধ্যমে।

পরিবারগুলোতে একটি সাধারণ অভিযোগ হলো, সন্তান মা-বাবার কথা শোনে না। অনেকে এ-ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগ করে বসেন। আসলে জীবনের কিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে শক্তি প্রয়োগের বদলে কৌশল প্রয়োগ করাটাই সঙ্গত। ওখানে শক্তি প্রয়োগ করতে যাওয়াটাই ভুল। কারণ শক্তি প্রয়োগ করে এখনকার ছেলেমেয়েদের ভুল চিন্তা বা কর্মকাণ্ডকে থামানো যায় না। এর মোকাবেলা করতে হবে বুদ্ধি প্রয়োগ করে।

প্রথমত, সন্তানের প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে। সন্তানকে কথা শোনাতে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সন্তান আপনার কথা শুনতে চায় না, কিন্তু কেন বন্ধুবান্ধবের কথা শোনে? কারণ সে মনে করছে, বন্ধুরা তার ব্যাপারে বেশি মনোযোগী। অথচ বাস্তবে তার ব্যাপারে মা-বাবার মনোযোগ যে অনেক বেশি, এটা সে বোঝে না। বুঝতে চায় না।

দ্বিতীয়ত, আরেকটা কারণে সন্তান কথা শুনতে চায় না, সেটা হলো বাবা-মা-অভিভাবকদের কথাগুলো সে একইভাবে বহুবার শুনেছে। তাই তাকে বোঝাতে হবে একটু অন্যভাবে। পাশে বসিয়ে মমতা দিয়ে বোঝান।

সন্তান তখনই আপনার কথায় প্রভাবিত হবে, যখন সে আপনাকে ভালবাসতে শুরু করবে। সব কাপড় কিন্তু সজোরে মাটিতে আছাড় দিয়ে ধোলাই করা যায় না, কিছু কাপড় খুব আস্তে আস্তে ঘষে পরিষ্কার করতে হয়। সন্তানও তেমনি। এজন্যে আগে তার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন।

আর এ সুসম্পর্ক গড়ে তোলার একটি শক্ত ভিত্তি হতে পারে পরিবারে সালাম বিনিময়। শুধু সন্তানের সাথেই নয়, পরিবারের ছোট-বড় সবার সাথে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে, ঘর থেকে বেরোনোর আগে, ঘরে ফিরে আগে নিজে সালাম দিন। বড়দের দেখাদেখি ধীরে ধীরে পরিবারের ছোটরাও এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।

কারণ সব ভালো কথারই শুভ প্রভাব আছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিদিন হাসিমুখে এই নিরবচ্ছিন্ন কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে আমাদের পরিবারগুলোতে সূচিত হবে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।

উচ্চশিক্ষা, ক্যারিয়ার, নিত্যনতুন যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার- এর সবই জীবনে প্রয়োজন; কিন্তু আমরা যেন পশ্চিমা স্রোতে গা ভাসিয়ে না দেই। আমাদের শান্তির উৎস আমাদের পরিবার। তাই পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে যেন কোনোভাবে গুরুত্বহীন মনে না করি। পরিবারে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, কিন্তু পারস্পরিক বোঝাপড়াটা যদি অক্ষুণ্ন থাকে তবে কোনো চ্যালেঞ্জ বা কোনো প্রতিকূলতাই শেষপর্যন্ত কোনো সমস্যা নয়।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com