একজন মানুষের প্রতিদিন পানির চাহিদা কতটুকু তা নির্ভর করে আবহাওয়া, তার কাজকর্মের পরিমাণ, শরীরের অবস্থা ইত্যাদির ওপর। পানি পান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে রয়েছে থার্স্ট সেন্টার বা পিপাসাকেন্দ্র। এই কেন্দ্র জানিয়ে দেয় যে কখন পানি পান করা দরকার। একজন মানুষের এই অংশটি কার্যকরী থাকলে পানির অভাব বা বাড়তি কখনোই হবে না।তবে কোনো কোনো সময়, যেমন মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর এই কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যক্তির পিপাসার নিয়ন্ত্রণ লোপ পায়। তখন পানির অভাবে বিপদ ঘটে যেতে পারে। আবার এর পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে মানুষের কিডনি কার্যকরভাবে অতিরিক্ত পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দিতে পারে। কিন্তু এই কিডনি যদি অকার্যকর হয়ে যায়, তবে অতিরিক্ত পানি শরীরে জমে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
পরিমিত পানি পান করে যেসব সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়, সেগুলো হলো মাথাব্যথা, শরীরে বিরামহীন ব্যথা বা যন্ত্রণা, হার্টের রোগ, বাতের ব্যথা, দ্রুত হৃৎস্পন্দন, অতিরিক্ত ওজন।
স্নায়বিক উত্তেজনার দিক খতিয়ে দেখলে বসে পানি পান করাই ভালো। চিকিৎসকদের মতে, দাঁড়িয়ে পানি পান করলে স্নায়ু উত্তেজিত হয় ও বাড়ে রক্তচাপ।
বেশিরভাগ সময়ে দাঁড়িয়ে পানি পান করলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। শরীরের ভিতরের ছাঁকনিগুলি কুঁচকে যায় ও নেফ্রনগুলো শরীর থেকে টক্সিন সরানোর সুযোগ পায় কম। তাই শরীরকে পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়।
দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে ধাক্কা দেয়। পাচকরসের ক্ষরণ কমে হজমের সমস্যা দেখা যায়।
এক ঢোকে পানি পান করবে না। দুই থেকে তিন বার দম নিয়ে পানি পান করবে। শুরু করবে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে। শেষ করবে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); তিরমিজী
নবীজী (স) তিন ঢোকে পানি পান করতেন। অর্থাৎ পানি পানের মাঝে থামতেন, পাত্রের বাইরে দম ছাড়তেন।
—আনাস ইবনে মালেক (রা); বোখারী, মুসলিম
পানি পান করার সময় মুখ থেকে পানির পাত্র না সরিয়ে দম ছাড়বে না। (অর্থাৎ পানিতে দম ছাড়বে না।)
—আবু কাতাদা (রা); বোখারী, মুসলিম
পানির পাত্রে ফুঁ দেবে না।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); তিরমিজী
আমি নবীজীকে (স) পান করার জন্যে জমজমের পানি দিলাম। তিনি তা দাঁড়িয়েই পান করলেন।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী, মুসলিম
যে পানি পান করাবে, সে সবার শেষে পানি পান করবে।
—আবু কাতাদা (রা); তিরমিজী