পাপ কী, পুণ্য কী—তা তুমি জানতে চাচ্ছ? তোমার অন্তরকে জিজ্ঞেস করো, উত্তর পেয়ে যাবে। যে চিন্তা বা কাজ অন্তরে তৃপ্তি ও প্রশান্তি আনে, তা-ই পুণ্য। আর যে-কাজ করতে গিয়ে মনে খটকা লাগে, অন্তরে অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়, তা-ই পাপ। যদিও কেউ কেউ সে-কাজকে বৈধ বলে ফতোয়া দিতে পারে, কিন্তু তোমার ক্ষেত্রে তাতে কিছু যায়-আসে না।
—ওয়াবিসা ইবনে মাবাদ (রা); আহমদ, দারিমি
সুন্দর কাজ ও আচরণ হচ্ছে নেকি। আর যে কাজ করতে গিয়ে অন্তরে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, কেউ তা দেখে ফেলা বা জেনে যাওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, সেটাই গুনাহ।
—নাওয়াস ইবনে সামআন (রা); মুসলিম, তিরমিজী, আহমদ
শোনা কথা (সত্যতা যাচাই না করে) বলে বেড়ানোই মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্যে যথেষ্ট।
—ওমর ইবনে খাত্তাব (রা), আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম
তোমার বক্তব্যকে সত্য বলে বিশ্বাস করে—এমন কারো কাছে মিথ্যা বলা জঘন্য বিশ্বাসঘাতকতা।
—সুফিয়ান ইবনে উসায়েদ (রা); মুফরাদ (বোখারী)
নবীজী (স) অসততাকে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করতেন। নবীজীর (স) উপস্থিতিতে কেউ কোনো মিথ্যা কথা বললে তিনি কষ্ট পেতেন। মিথ্যার জন্যে সে ব্যক্তির অনুশোচনা করার কথা না জানা পর্যন্ত নবীজী (স) সন্তুষ্ট হতেন না।
—আয়েশা (রা); তিরমিজী
যে ব্যক্তি জেনেশুনে আমার নামে মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করে, সে মিথ্যাবাদী।
—আলী (রা), সামুরাহ (রা); মুসলিম, আহমদ, ইবনে মাজাহ
তোমরা কখনোই কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে না।
—উবাদা ইবনে সামিত (রা); বোখারী
প্রত্যক্ষদর্শী না হয়েও প্রত্যক্ষদর্শীর মতো করে কোনো ঘটনার বর্ণনা দেয়া চরম মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়।
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); বোখারী
সাবধান! সন্দেহ করা থেকে দূরে থাকো! সন্দেহ পোষণ বা সন্দেহবশত কথা বলা জঘন্য মিথ্যাচার। অন্যের ছিদ্রান্বেষণ কোরো না। অন্যের দোষত্রুটি বের করার জন্যে গোয়েন্দাগিরি কোরো না। কারো ব্যাপারে ঘৃণা পোষণ কোরো না। কারো বিশ্বাসভঙ্গ কোরো না। আল্লাহর বান্দা হয়ে পরস্পর ভাই ভাই হিসেবে বসবাস কোরো।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম
যারা সৎ কাজের কথা বলে কিন্তু নিজেরা তা করে না, আর খারাপ কাজ করা থেকে অন্যদের বিরত থাকতে বলে কিন্তু নিজেরা সেই খারাপ কাজ করে, আখেরাতে তাদের শাস্তি হবে কঠিন।
—উসামা ইবনে জায়েদ (রা); বোখারী, মুসলিম
নয়টি মহাপাপ (কবিরা গুনাহ) হচ্ছে,
১. আল্লাহর সাথে শরিক করা।
২. কাউকে খুন করা।
৩. এতিমের ধনসম্পত্তি আত্মসাৎ করা।
৪. জেহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া। (সত্য অনুসরণে প্রাণান্ত প্রয়াস না চালানো বা এ-ক্ষেত্রে আলস্য)
৫. সুদী লেনদেন করা।
৬. পিতামাতার সাথে দুর্ব্যবহার করা।
৭. কোনো নির্দোষ মহিলার নামে কুৎসা রটনা করা।
৮. মসজিদে গুজব ছড়ানো।
৯. মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); বোখারী, মুসলিম
নিজের গুনাহর কথা বলে বেড়াবে না। কোনো দোষ বা গুনাহ করার পর, এই গুনাহের কথা অন্য কাউকে বললে শ্রোতা তখন এটার সাক্ষী হয়ে যাবে। আল্লাহ যা গোপন রেখেছিলেন, তা তুমি প্রকাশ করে ফেললে। তখন আর ক্ষমা পাবে না।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম