মার্কিন ধনকুবের এন্ড্রু কানের্গি বস্তির ছেলে ছিলেন। তার বয়স যখন বারো বছর দাড়োয়ান তাকে পাবলিক পার্কে ঢুকতে দেয় নি তার মলিন ও নোংরা পোশাকের জন্যে। তখন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যেদিন তার টাকা হবে তিনি এ পার্কটি কিনে নেবেন। তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলেন, নিজেকে তিল তিল করে গড়ে তুলে। এক সময় তিনি আমেরিকার সবচেয়ে বড় ধনকুবেরে পরিণত হন। ৩০ বছর পর তিনি সে পার্কটি কিনে নেন। এবং সেখানে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। তাতে লেখা ছিলো, আজ থেকে দিনে বা রাতে যেকোনো মানুষ যেকোনো পোশাকে এই পার্কে প্রবেশ করতে পারবে।
ধম্মপদে আছে- আমাকে মেরেছে, আমাকে বকেছে, আমার জিনিস কেড়ে নিয়েছে- এমন চিন্তা ও অভিযোগ যারা করে ঘৃণা ও শত্রুতা তাদের চিরসঙ্গী হয়। আর যারা এরূপ চিন্তা করে না তাদের শত্রুতা দ্রুত উপশম হয়। [ যমকবগগো : ৩-৪ ]
প্রতিবাদ বলতেই আমরা বুঝি চিৎকার করে, তার সাথে সরাসরি বির্তকে লিপ্ত হয়ে, তাকে কোণঠাসা করে বরং সে যে অন্যায় করছে তা বুঝিয়ে উচিত শিক্ষা দিতে হবে। প্রতিবাদের ভাষা হলো উত্তেজনা, হৈচৈ, রাগের প্রকাশ, বিতর্ক করা।
পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসার জন্যে সফল মানুষদের ভাষা ছিলো প্রতিকারের, প্রতিবাদের নয়। প্রতিকার মানে নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাতে কেউ যদি মারতে আসে, আসার আগে তাকে অন্তত দশবার যেন চিন্তা করতে হয়। প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্যে শক্তি সঞ্চয় করা। নিজের মেধাকে পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগিয়ে সাফল্য অর্জনের জন্যে ধাপে ধাপে নিজেকে প্রস্ত্তত করা।
করণীয় :
কটুক্তির জবাব দিতে হবে ঠান্ডা মাথায়। আমরা মনে করি, তাদের কটুক্তির প্রত্যুত্তরে যদি চিৎকার না করি, প্রতিবাদ না জানাই তাহলে আমি তো ছোট হয়ে যাবো। অথচ বিখ্যাত ব্যক্তিরা ঠান্ডা মাথায় হিকমার সাথে বিদ্রুপের জবাব দিয়েছেন।
প্রজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করতে হবে।
নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা সৃষ্টি করতে হবে। প্রত্যাশিত সমাদর না পেয়ে মানুষ প্রতিবাদে লিপ্ত হয়। কিন্তু সমাদরের জন্যে সেই পরিমাণ যোগ্যতাও থাকতে হবে।
সময়ের জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। শক্তিকে সংহত করতে হবে।
সৎসঙ্ঘে সঙ্ঘবদ্ধ হোন। সঙ্ঘ হলো এমন একটি শক্তি যা আপনার সকল সীমাবদ্ধতাকে সম্পদে পরিণত করবে।