প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের শিশুদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিলে বাংলাদেশকে কেউ আর পিছনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে না। তিনি তার কার্যালয়ে অসচছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি, টিউশন ফি ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাষণে এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, “ আমরা যদি ছেলে মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিই, তাহলে কেউ এ দেশকে পিছনে ঠেলে দিতে পারবে না।সরকার গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়াতে উপবৃত্তি দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের শিশুরা খুবই মেধাবী এবং তাদের মেধা বিকাশে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে যা আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।” এতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ মেধা বিকাশে একটি মহৎ উদ্যোগ, যেখান থেকে অনেক মেধাবী শিশু বের হয়ে আসছে। তিনি বলেন, আজ আমাদের শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছে এবং এখন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, কেউ দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না, অন্ধকারে ফেলে দিতে পারবে না। শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কারো কাছে মাথা নত না করে বিশ্ব মঞ্চে আত্মমর্যাদার সাথে আবারো মাথা উঁচু করে দেশকে এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে নিজেকে গড়ে তোলার কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে, আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মান নিয়ে বিশ্ব অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা কারো কাছে মাথা নত করবো না। এটি আমাদের অঙ্গীকার । শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় এ কথা মনে রাখতে হবে যে এ জাতি বীরের জাতি। তারা কারো কাছে মাথা নত করে না।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা পথ দেখিয়েছি। আমাদের মেধাবী শিশুরা এই্ পথেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ো তোলা হবে। এই দেশে থাকবে স্মার্ট জনগণ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সমাজ। আজকের যুগ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার যুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্যে নিজেদের প্রস্তুত করতে বলেন।
কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় আরো গুরুত্ব দেয়ার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গবেষণা একটি ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, আর তা হলো স্বাস্থ্য খাত। আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছি..আমি মনে করি এটিকে আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। সরকার সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণা এবং ব্লু ইকোনমিকে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ এটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সত্যিই আশাবাদী এই দেশকে আর কেউ পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেশনজট ও অস্ত্র সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছে। ৬-৮ বছর ধরে সেশন-জট ছিল এবং অতীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অস্ত্রের ঝনঝনানি হতো। তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাসকে সেই পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে পেরেছি।’
বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৯ সাল থেকে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।