ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার পথে সবকিছুই ছিল প্রতিকূল, তারপরও তিনি রাজা হয়েছিলেন
আমরা যদি সাম্প্রতিককালে দেখি, তিনি রাজকুমার ছিলেন না, রাজা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতদৃষ্টিতে তার ছিল না, বরং রাজা হওয়ার পথে, রাজা মানে আমরা প্রতীকী ব্যবহার করছি। যে ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার পথে তার সবকিছুই ছিল প্রতিকূল। তারপরও তিনি রাজা হয়ে ছিলেন।
রাজা হয়েছিলেন মানে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এবং আমরা কোর্সে তার উদাহরণ দেই- বারাক ওবামা।
তো বারাক ওবামা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট না হওয়ার জন্যে যতগুলো ফ্যাক্টর দরকার, না হওয়ার পক্ষে নেগেটিভ ফ্যাক্টর সব তার।
বাবা আমেরিকান না, বাবা আফ্রিকান। সৎ বাবা, সেও ইন্দোনেশিয়ান। যখন ইন্দোনেশিয়ায় মায়ের সাথে- সৎ বাবার সাথে বারাক ওবামা- এবং সেখানে যে স্কুল। যে স্কুলে বারাক ওবামা শিশু বারাক ওবামা ভর্তি হলো যেখানে তার মতো চেহারার একজনই।
যার ফলে বুলিং বলতে আমরা যা বুঝি। এটা আমরা সহজে আঁচ করতে পারি। কিন্তু মা প্রো-একটিভ। মা তাকে আস্থা দিল মা তাকে বিশ্বাস দিল। মা তাকে বলল যে সবসময় প্রো-একটিভ। কখনো ঝগড়ায় যাবে না। ঝগড়ায় গেলে তুমি পারবে না, ঝগড়া এড়িয়ে যাবে।
কিন্তু তোমাকে বিশ্বাস করতে হবে যে তুমি সফল হবে বড় কিছু হবে। এবং এই বুলিংটা হচ্ছে- এই পরিবেশটাই তোমাকে তৈরি করবে যদি তুমি রি-এক্ট না করো, তুমি যদি ঝগড়ায় জড়িয়ে না যাও।
এবং বারাক ওবামার পক্ষে ঝগড়ায় জড়ানো সম্ভব ছিল না একা। এবং সে সমস্ত ঝঞ্ঝাট এড়িয়ে গেছে।
এটা থেকে তার স্বপ্ন সৃষ্টি হলো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার। এবং স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় যখন রচনা লিখতে দেয়া হলো- এইম ইউর লাইফ লেখো, সে লিখল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়া।
শুধু একবার না, দুইবার আসছিল দুই ক্লাসে এবং দুইবারই তার রচনা ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়া।
এবং এই যে ভাবনা, এই ভাবনাটা তার বিশ্বাসে রূপান্তরিত হয়েছিল। এবং বারাক ওবামার সেপারেটেড ফ্যামিলি, বাবার সাথে তার যোগাযোগ নাই, মায়ের কাছে। বাবা কৃষ্ণাঙ্গ ছিল, সেও কৃষ্ণাঙ্গ। বাবার সাথে তার এটাচমেন্ট বেশি হওয়ার কথা ছিল!
কিন্তু বাবার সাথে তার কোনো এটাচমেন্ট স্বাভাবিকভাবে ডেভেলপ করতে পারে নি। বারাক ওবামার বয়স যখন ১০ বছর তখন একবার তার বাবার সাথে দেখা হয়েছিল। এরপরে আর দেখা নাই।
মা তাকে লালন করেছে, মা তাকে কারেজ দিয়েছে মা তাকে সাহস দিয়েছেন মা তাকে বিশ্বাস দিয়েছে। এবং অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট শুধু একবার না দুইবার। কারণ দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হওয়া যায় না। দুইবার তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন!
এবং আমেরিকার ইতিহাসে এর আগে কোনো কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হয় নাই এবং ভবিষ্যতে আরেকজন কৃষ্ণাঙ্গ কবে প্রেসিডেন্ট হবেন- সেটা কেউ বলতে পারে না। তো আসলে মা যা পারেন লালনের ক্ষেত্রে এটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবা পারেন না, বাবার ভূমিকা আসলে খুব মাইনর। বাবা হচ্ছে মাইনরিটি রোল প্লে করতে পারেন আর মেজরিটি রোল হচ্ছে মায়ের।
এবং এই জিনিসটা যত আমরা মনে রাখব, মা যদি রোল প্লে করতে পারেন ঠিকভাবে, সন্তান সফল। আর মা যদি ঠিকভাবে রোল প্লে না করে্ ব্যর্থতার দায়ভারও যদি থাকে প্রধানত মায়ের। কারণ মা হচ্ছেন প্রধান ফ্যাক্টর প্যারেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে।
[প্যারেন্টিং ওয়ার্কশপ, ২৭ মে ২০২৩]