দেশে কোনো ‘ফিউচার’ নেই; ইউরোপ-আমেরিকায় হায়ার এডুকেশন নিতে গিয়ে ওখানেই সেটেলড হও- এরকমই ভাবনা এখনকার অনেক তরুণের।
আপনিও যদি এই দলের একজন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন- মোটামুটি মানের নিজের বাড়ি আর ঝাঁ চকচকে ভাড়া বাসার মধ্যে কোনটাকে বেঁছে নেবেন আপনি? নিশ্চয়ই প্রথমটার কথাই বলবেন! কারণটা কবিতার সেই বাবুই পাখির ভাষায় ‘নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা!’
হ্যাঁ, আপনি ফুল স্কলারশিপে উচ্চতর শিক্ষার জন্যে বিদেশে যেতে পারেন। কিন্তু ঋণ করে বিদেশে গেলে, বা ওখানে গিয়ে চাকুরি করে পড়াশোনা করবেন- এ উদ্দেশ্যে গেলে পরবর্তীতে আপনাকে পস্তাতে হতে পারে। আবার স্কলারশিপ পেলেও অনুচিত হবে সেসব ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যাওয়া, যেগুলোর সার্টিফিকেটের গ্রহণযোগ্যতা নেই।
আর শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন বা একটু আরাম-আয়েশে জীবন কাটানোর জন্যে যদি আপনি বাইরে যান, আপনি তৃপ্তি পাবেন না। কারণ সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেনের জীবন একটা বয়সে এসে প্রবাসীদের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি করে। এর চাইতে আপনার মেধাকে দেশে ব্যয় করলে দেশ উপকৃত হবে, আপনারও জীবনও হবে অর্থবহ।
ইদানিং তরুণদের একটি বড় অংশ দেশ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন, যার প্রকাশ ঘটছে তাদের আলাপচারিতা বা লেখালেখিতে।
দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রিয় ঘটনা বা অঘটন ঘটছে ঠিকই। তবে আমাদের ইতিবাচক অর্জনের পরিমাণও কিন্তু কম নয়! গেল কয়েক দশকে দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, সেবা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলোতে প্রভূত উন্নতি ঘটেছে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে; আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নতুন আশাবাদ।
সূরা রাদের ১১ নং আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, নিজের ভেতর থেকে না বদলালে (অর্থাৎ দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালে) আল্লাহ কোনো জাতির (বা মানুষের) অবস্থা বদলান না।
অর্থাৎ, দেশের বর্তমান অবস্থা বদলের জন্যেও জরুরি দেশ নিয়ে ইতিবাচক ধারণা পোষণ। তরুণ সমাজের একজন হিসেবে যখন আপনি দেশের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী হবেন, নিজের কাজটুকু সবচেয়ে ভালভাবে করতে প্রয়াস চালাবেন, দেশকে সোনালী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নেয়ার শুরুর পদক্ষেপ হবে সেটাই।