টিপু সুলতান (ঢাকা প্রতিনিধি)
বিশ্বজুড়ে চলছে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সমাজ নৈতিকতার অধোপতনের কাল। অর্থ নষ্ট বৈষম্যতায় রাজনীতি নষ্ট নীতিহীনতায় আর সমাজ নষ্ট শিক্ষায়। আদর্শ চরিত্র আর সামাজিক মূল্যবোধহীনতা দিনে দিনে আমাদের কোথায় নিয়ে গেছে। ধর্ম নষ্ট ওয়াজ মাহফিলে। বক্তাদের নেট দুনিয়ায় তুমুল আলোড়ন চলছে । টিভি সিনেমার যে পরিমান যোগ ব্যবহার করা হয় তাতে মনে হয় তারা যেন ডুবে থাকে নেট দুনিয়ায়। তারা জ্ঞান আহরন করছেন। বঝকঝকে তকতকে নুৱাৰী চেহারায় আর মাশাল্লাহ যে বাহারী পোষাক তাতে মনে হয় আকাশের নুবানীপুরের তাজগুলো যেন ধূলির ধরায় লুটে পড়েছে।
আমার ধর্মপ্রান মুসলমান ভাই ও বোনেরা ইসলাম আমি গ্রহন করেছি বা জাতিগত মুসলিম কিন্তু ধর্মীয় ব্যাথার সাম্প্রতিক সময়ের কলবরে তা যেন বিভ্রান্ততায় ভরা। বিভ্রান্ত গোটি মুসলিম জাহান, কোনটা সঠিক আর কোন পথ বেঠিক কোন কন্ট্রোল নেই কারো হাতে। আর স্বাধারন শিক্ষায় যেদিন হতে শিক্ষক নিয়োগ অসাচ্ছতায় ভরে গেছে সেদিন হতে সমাজ নষ্ট, মানে গোটা জাতি নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামের মোডল সমাজ যারা যুগে যুগে মোডলীপানা দোষে দুষ্ট তারা কিভাবে এ সুযোগ পেল।
কেউ কি বলতে পারবেন ?
নেতার পিছে গোটা জাতি ঘুরে কারণ তার কাছে আনের আলোর/প্রদীপ আছে। তিনি হবেন চরিত্রবান আদর্শ মানুষ, তিনি জ্ঞানে, সিদ্ধান্তে বিচক্ষনতায়,দাম্ভিকতায় হবেন সবার সেরা ব্যক্তিত্ববান। তাকে স্যালুট করবে গোটা জাতি। আজ কালকার নেতাদের অবস্থা দেখে কি মনে হয় আপনারা ভাল জানেন। যাদের নামে শতশত নোংরা মামলা ঝুলে বেড়ায় তারা তো পুলিশ দেখলে দৌড় দিবে না তো কি করবে ? তাই দেশ যখন নেতা শুন্যতায় ভোগে তখন নাই অসহায় হয়ে যায়।
আমরা সেই অসহায় রাষ্ট্রের বাসিন্দা। তাই সকল জায়গায় আমাদের অপমৃত্যু তারা করে বেড়ায়। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি আমাদের নেই। দেশের একমাত্র অর্থ উপার্জনের বড় সেইন গার্মেন্টস শিল্প আড়া মুখ থুবড়ে পরে যাবার সংকায়, আছে বিশ্ব রাজনীতি আর অর্থনীতির অস্থিরতায়। বিকল্প কোন ব্যবস্থাপনা আমাদের সামনে নেই ।
প্রব্যের উদগতি এমনিতেই আমাদের জীবনকে বিপর্যন্ত করেফেলেছে তারপর নেই কোন রাজনৈতিক চ্ছতা। ফলে যে কোন সময় যে কোন অস্থিরতা তৈরী হলে তার জন্য আমাদের রোঙ্গিাদের মতো জীবন যাপন করতে হবে। গত কয়েক মাসে আগে ৪/৬/২০২২ ইং তারিখে দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের বিএন কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লেগে এখনো অলছে আগুন। আর গত ৩/৬/২০২২ ইং তারিখ হতে গার্মেন্টস শ্রমিক ভাই বোনেরা বেতন বৃদ্ধির দাবীতে রাস্তায় আন্দোলন করছে।
এক জায়গায় জ্বলছে আর আরেক জায়গায় জালায় মরছে অর্থাৎ ক্ষুধার জালায় মরছে। দিনে দিনে দৈনন্দিন দ্রব্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি আন প্রশাসনের ঘুম যেন অপেক্ষা করছে কোন মহা প্রণয়ের ডাকে। আগুনের শিখা পুরান ঢাকার অলিগলি চিনে ফেলেছে তাই চান্স পেলেই জালিয়ে দিচ্ছে আমাদের মায়ের আচল, যে আচলে দেশের অর্থনীতি হেফাজত থাকে সেখানে যদি দিনে পর দিন এভাবে আগুনে পুড়ে যায়।তার পরেও কি আমাদের ঘুম ভাঙ্গবেনা !
নীনতলির ট্রাজেডি কারো কারো জীবন আচলের স্পর্শ পেলেও বাকী সবার ঘরে কিন্তু আজও আওন ভালছে নিরবে। এরপরেও আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় আগুনে জ্বলেছে আর পুড়েছে অনেকের জীবনের সকল আশা ভরসা। এই অব্যবস্থাপনা আর নিরাপত্তার শৃঙ্খল আজও আলোর মুখ দেখেনি। ফলে মাঝে মাঝেই আমাদের বিবেক কে জালায় আর পোড়ায়।
যে দেশের শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন বেতন পেয়ে আসছে তাদের জীবন প্রবাহে যদি এইভাবে লাগামহীন দ্রব্য সামহীর দান বেড়ে তাদের অতিষ্ঠ করে, তাহলে তাদের দোষ কোথায় ? এছাড়াও আছে নানাবিধ ষড়যন্ত্রের বর্গ যেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জাল বিছায়ে। এক বিছানায় ঘুমিয়ে বলে বিবাহ হয়নি। এইরূপ সম্পর্ক আমাদের লজ্জায় ফেলে, জাতি বিব্রত হয় আর অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে থাকে শ্রমিক। তাদের স্বার্থ দেখার পাহাড়ায় যারা নিয়োজিত তাদের কর্মকান্ডে, সরকারের কত টা সম্পৃক্ততা আছে তা দেখার দরকার।
সময়ের কাল পরিক্রমায় প্রব্যের দাম বাড়বে স্বাভাবিক কিন্তু তার একটা ফরমুলা আছে সরকারের নানাবিধ সংগঠন আছে তারা যাচাই বাছাই করে দাম বাড়ানো যৌক্তিক হলে বাড়াবে কিন্তু ঢালাও ভাবে লাগামহীন ভাবে যখন তখন দান বেড়ে যাবে তা সঠিক নয় দ্রব্যে দাম বেড়ে যায় নানা কারনে সেখানে কিছু কারন থাকে প্রাকৃতিক যেখানে অনেক ক্ষেত্রে কারো হাত থাকে না কিন্তু কিছু কিছু জায়গা আছে যেখানে খরচ বেড়ে গেলে সরকারের অনেক কিছু করার থাকে।
মানুষের কয়েকেটি মৌলিক বিষয় যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসা। এ গুলো কারা নিয়ন্ত্রন করে ? এখানে খাদ্য ছাড়া সবি কিন্তু ব্যবসায়ীদের হাতে। আর কারা ব্যবসায়ী ? যারা দেশের নীতি নিরধারন করে থাকে তাদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী।
ফলে এই যে দান বাড়ানো আর দাম বেড়ে যায় কিভাবে ?
যেমন ১. বাসা ভাড়া ২. স্কুলের বেতন ৩ গাড়ী ভাড়া ৪. চিকিৎসা সেবা ৫. সাধারন দ্রব্যের দাম-চাল, ডাল, তেল,লবন ইত্যাদি ।
কারা কিভাবে বাসা ভাড়া বাড়ায় ?
স্কুলের হরেক রকম পরিচালনা আর শিক্ষা ব্যবস্থার হরেক রকম নীতি কাঠামো মানুষকে অস্থির করে তুলেছে । কোথায় কোন প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া শিখালে সন্তান মানুষ হবে ? সব অভিভাবকই তো চায় তার সন্তান ভাল একটা প্রতিষ্ঠানে লেখা পড়া শিখে মানুষ হোক। তার দিক নির্দেশনা কোথায় আর কে দিবে এই নিশ্চয়তা ? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালিক তো সব ব্যবসায়ী আর রাজনীতিবাদ! এই ক্ষেত্রে অনেক টাকা পকেট থেকে বেড় হয়ে যায়, কেউ বলে না !! শিক্ষা ক্ষেত্রে যে কি পরিমান খরচ হয় তা সবার জানা।
বাসা ভাড়া করা দেয় আর কারা নেয়, কি আছে এই নীতি কাঠামোয় ! কিভাবে তাদের বাসা ভাড়া বেড়ে যায় যখন তখন ? গাড়ীভাড়া !!! ওরে বাবা, হয় ভাড়া দে, নয় চাকার নীচে মর!! চাকার নীচে চিপায় চাপায় কিভাবে যে পিসায় তা এদেশের জনগন ভাল করে জানে। কোথায় আছে এর নিয়ন্ত্রন!!
চিকিৎসা !! ধর্মের কল বাতাসে নড়ে, আর আল্লাহর মাল আল্লায় নিয়ে গেছে! সবাইকে তো একদিন মরতে হবে । আহরে জাতি । তাহলে সরকারই দরকার নেই। সরকার কি করে ? সরকারের কাজ কি ? সরকারী চাকুরী এখন সোনার হরিন । অথচ কয়েক বছর আগে মানুষ বেসরকারী কার্মে কাজ করতে চাইতো বেশি টাকার আশায়।
আর এখন যত লাগে দিব রে ভাই ! আগে চাকুরী টা দে। টাকা উঠাতে কয়দিন আর লাগবে! এই হলো সরকারী আর বেসরকারী চাকুরীয় অবস্থা। বিশ্বাস হয়, কথাগুলো যে সত্য! চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান তো মানবিক বিষয়। সেখানে সঠিক মান আর সঠিক সেবা ব্যবস্থাপনানই তো প্রধান কথা। কিন্তু আপনারা তো ভাল করে জানেন. এর চিত্র। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মালিক কারা আর কে চালায় আর কি পরিমান টাকা খরচ হয় আর ফাঁদ পেতে মানুষকে কিভাবে হয়রানী আর পেরেশানীর করা হয়।
এরপর খাদ্য দ্রব্য তার দাম দিনে দিনে বাড়ে আর কমে। এরপরেও কিছু জিনিস যেমন চাল, ডাল,তেল এবং লবন এগুলো তো একটা স্থিতিশীলতা থাকা দরকার। কিন্তু কোথায় এর বাস্তবতা!!
এই সব বিষয়গুলো নিয়ে একটু ভাবেন, তারপর অন্য কিছু। শ্রমিকরা বাঞ্ছায় কিন্তু চাল, ভাল তেল নিয়ে। কিন্তু আসলে এই চাল ডাল তেল প্রধান বিষয় নয়। ভিতরের বিষয় অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। যেখানে শুধু শ্রমিক নয় সাধারন সকল মানুষের হাহাকার কান্না বোবা হয়ে দেশের অভ্যন্তরে এক ভীষন অস্থিরতা তৈরী করছে।
আর যে বুথা বলেছিলাম, এক বিছানায় শুয়ে বলে বিবাহ হয়নি। কথাটা যেমনি শোনাক না কেন, বিষয় হলো দেশের মানুষ দেশেই আছে, শ্রমের মানুষ শ্রমিক আছে কিন্তু আসল দরদে কয় জনার !! তাদের চিনে জেনে শ্রমিক নেতা বানাতে আর মানতে হবে এই সকল শ্রমিক নেতা আসল নেতা নয়, তারা থাকে অনেক দূরে, যেখানে আলো পৌছায় না।
ফলে এই সব আন্দোলন এর যৌক্তিকতা কতটুকু ?
সাধারন সকল মানুষ যাদের কষ্ট কেউ জানে না। এই শ্রমিক আর মধ্যবিত্ত মানুষ গুলোর কষ্ট শুধু পেটে নয়, মনে। এ কারনে আগুন লাগিলে তার উত্তাপ ছড়ায় অনেক দূরে!! আগুন নিয়ে পরে, এ খেলা নয়, এ নিঃস্ব করে দেয় গোটা জাতিকে।