বাণিজ্য হল পণ্য বা সেবা অথবা উভয়ের আদান প্রদানকে বুঝায়। একে ব্যবসাও বলা হয়।
শিল্পে উৎপাদিত কোনো পণ্য বা সেবা সরাসরি গুদাম থেকে ভোক্তার হতে পৌঁছায় না। এজন্য গুদামজাতকরণ, পরিবহন থেকে শুরু করে নানা ধাপ পেড়োতে হয়, আর ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানোর এইসকল কার্যাবলিকে বাণিজ্য বলে।
৮০২.
একজন সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী পরকালে নবী, সিদ্দিক, শহিদদের সাহচর্য উপভোগ করবে।
—আবু সাঈদ খুদরী (রা); তিরমিজী, দারাকুতনি
৮০৩.
দৈহিক (ও মানসিক) পরিশ্রম এবং সৎ ব্যবসাই উপার্জনের উত্তম মাধ্যম।
—জুমাই ইবনে উমাইর (রা); মেশকাত
৮০৪.
পরিমাপ ও ওজনে সতর্ক থাকো। মাপে কমবেশি কোরো না।পরিমাপে অসততায় অতীতে বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); তিরমিজী, মেশকাত
৮০৫.
ক্রেতা ও বিক্রেতা আলাপ-আলোচনা চূড়ান্ত করে স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত লেনদেনের চুক্তি বাতিল করার অধিকার রাখে। লেনদেনের আলোচনায় যদি তারা সব সত্য আন্তরিকভাবে প্রকাশ করে, তবে তাতে বরকত বা প্রবৃদ্ধি থাকে। আর যদি প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করা হয়, তবে লেনদেনে বরকত নষ্ট হয়ে যায়।
—হাকেম ইবনে হিজাম (রা); বোখারী, মুসলিম
৮০৬.
কোনো পণ্য অগ্রিম ক্রয় করার পর তা নিজের হস্তগত হওয়ার আগে অন্যের কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবে না।
—হাকেম ইবনে হিজাম (রা); আবু দাউদ, নাসাঈ
৮০৭.
খাদ্যশস্য ক্রয় করার পর তা নিজের হস্তগত না হওয়া পর্যন্ত পুনরায় বিক্রি করা বৈধ নয়। এ ধরনের লেনদেন থেকে দূরে থাকবে।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী, মুসলিম
৮০৮.
ফল বাগান নির্ধারিত মেয়াদে এবং নির্ধারিত পরিমাপে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী, মুসলিম
৮০৯.
গাছের ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে বিক্রয় করবে না।
—জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা); বোখারী, মুসলিম
৮১০.
খেতের ফসল পরিপক্ক হওয়ার আগে ক্রয়-বিক্রয় করবে না।
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); বোখারী, আহমদ
৮১১.
জিনিস বন্ধক রেখে বাকিতে ক্রয় করা যাবে।
—আয়েশা (রা); বোখারী, মেশকাত
৮১২.
নিলাম ডাকে মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।
—আনাস ইবনে মালেক (রা); তিরমিজী, আবু দাউদ (মেশকাত)
৮১৩.
কোনোকিছু বিক্রি করার সময় অতিরিক্ত শপথ করা থেকে বিরত থাকো। এতে বিক্রি বাড়লেও বরকত নষ্ট হয়ে যায়।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম
৮১৪.
ক্রয়-বিক্রয়ের লিখিত দলিল থাকা উচিত।
—আদ্দা ইবনে খালেদ (রা); তিরমিজী, মেশকাত
৮১৫.
কোনোকিছু কেনার জন্যে যখন একজন দরদাম করছে, তখন তুমি সেখানে দরদাম করবে না।
—আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); বোখারী, মুসলিম
৮১৬.
একচেটিয়া ব্যবসার উদ্যোক্তারা (ও সিন্ডিকেট গঠনকারীরা) গুরুতর অপরাধী।
—মামের (রা); মুসলিম, মেশকাত
৮১৭.
নকল ক্রেতা সেজে পণ্যের দাম বাড়িয়ে আসল ক্রেতাকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য কোরো না। (এই কাজটি হারাম)।
—আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম
৮১৮.
প্রতিযোগিতা করে (প্রতারণার উদ্দেশ্যে) কোনো জিনিসের দাম বাড়াবে না।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম
৮১৯.
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য (আমদানিকারক, প্রস্তুতকারক ও) সরবরাহকারীরা কল্যাণ লাভ করবে। কিন্তু (বেশি মূল্যে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে মজুদ রাখার জন্যে) মজুতদাররা অভিশপ্ত হবে।
—ওমর ইবনে খাত্তাব (রা); ইবনে মাজাহ, দারিমি
৮২০.
মূল্যবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে খাদ্যদ্রব্য ৪০ দিন গুদামজাত করা গুরুতর পাপ। এরপর সে যদি সব মাল দানও করে দেয়, তবুও তার এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত হবে না।
—আবু উমামা (রা); রাজিন (মেশকাত)
৮২১.
মজুতদাররা কতই না জঘন্য! দ্রব্যমূল্য কমলে তারা চিন্তিত হয়। আর দ্রব্যমূল্য বাড়লে তারা আনন্দিত হয়।
—মুয়াজ (রা); রাজিন, বায়হাকি (মেশকাত)
৮২২.
ব্যবসায়িক অংশীদাররা পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত ও সৎ থাকলে আল্লাহ অংশীদারী ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি বা বরকত দেন। কিন্তু যখনই অংশীদাররা একজন আরেকজনকে প্রতারিত করতে শুরু করে, তখনই তিনি প্রবৃদ্ধি প্রত্যাহার করেন।
—আবু হুরায়রা (রা); আবু দাউদ, মেশকাত
৮২৩.
ক্রয়-বিক্রয় ও পাওনা টাকার তাগাদায় যে নমনীয়তা ও সৌজন্যবোধের পরিচয় দেয়, আল্লাহ তার ওপর রহমত বর্ষণ করেন।
—জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা); বোখারী