আমাদের যে নার্ভাস সিস্টেম, হিউম্যান নার্ভাস সিস্টেম এটা খুব মজার।
এটা বাস্তবতা এবং কল্পনার মধ্যে কোনো তফাৎ করতে পারে না। সবকিছু চলছে। খুব শার্প।
ঢাকাইয়ারা ঘিলু বলে এটাকে। কিন্তু এই ঘিলুর যে-রকম পজেটিভ দিক আছে, আবার নেগেটিভ দিকও আছে। এর যে-রকম শক্তি আছে দুর্বলতাও আছে।
আমার মনে হয় যে, এটা আল্লাহতায়ালার বোধ হয় তাঁর… ঐ যে বলে না যে, গুরুর মার হচ্ছে শেষ প্যাঁচে। উনি একটা প্যাঁচ হাতে রেখেই দেন।
মানুষকে আসলে অনেক কিছু দিয়েছেন। আবার কিছু কিছু জিনিস রেখেও দিয়েছেন যে, আচ্ছা বেশি লাফাবা ঠিক আছে। তখন ধরার জন্যে যে যাতে আপনি সীমার বাইরে চলে যেতে না পারেন।
সীমার বাইরে গেলেই সেটার পতন হবে, সেটা রিভার্ট করবে, সেটা পতিত হবে। এবং এটা সবার ক্ষেত্রেই সত্য।
আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি প্রিয় মানুষ রসুলুল্লাহ (স)। তো ওনার একটা উট ছিল। এটা প্রতিযোগিতায় সবসময় জিতত প্রথম হতো।
তো প্রথম হওয়ারও তো একটা লিমিট আছে, বয়স তো আছে। গ্রেটেস্ট হোক, লেটেস্ট আসলে তো লেটেস্টের জন্যে জায়গা ছেড়ে দিতে হয় গ্রেটেস্টকে সবসময়।
তো এক দৌড় প্রতিযোগিতায় এটা হেরে গেল। স্বাভাবিকভাবে তাঁর যারা সাহাবী খুব মনো কষ্ট যে ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাদের উট হেরে গেছে এটা কেমন হলো?
তো উনি হেসে বললেন যে, একটা জিনিস যখন সবচেয়ে ওপরে উঠে যায়, ওপরে ওঠার পরে তাকে নামতে হয়। অতএব উট যতদিন ওপরে উঠার ছিল উঠেছে।
এখন তার নামার সময়, এখন নেমেছে।
এই যে ঘিলু, এই ঘিলুর পাওয়ার অনেক কিন্তু এটার উইক পয়েন্টও আছে। যে এই ঘিলু এই নার্ভাস সিস্টেম বাস্তবতা এবং কল্পনার মধ্যে কোনো তফাৎ করতে পারে না। এবং আপনি যদি অভিনয়ও করতে থাকেন, একটু পরে অভিনয়টাকেই ঘিলু বাস্তব মনে করা শুরু করে দেয়।
এবং যে কারণে আপনারা জানেন তো, যে ফরাসি একটা চরিত্র আছে জোয়ান অব আর্ক। এই চরিত্রে তিন জন অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন।
অভিনয়ের সাথে এত মিশে গিয়েছিলেন যে, সিনেমা শেষ হওয়ার পরেও তারা নিজেদেরকে জোয়ান অব আর্কই মনে করতেন।
অতএব বুঝতে পারেন বাস্তব জীবনে তাদের কী অবস্থা হয়েছিল! দীর্ঘসময় তাদের থাকতে হয়েছিল মেন্টাল এসাইলামে। কেন? অভিনয় করতে করতেই মনে করেছে যে মানে, আসলেই আমি জোয়ান অব আর্ক।
তো এটা হচ্ছে তার দুর্বল দিক। যে এটা রিয়ালিটি এবং অভিনয়ের মধ্যে কোনো তফাৎ করতে পারে না।
ব্রেন কিন্তু বুঝতে পারে না- এটা কল্পনা না বাস্তবতা। আপনার হাসিটা রিয়েল না চাপানো।
আপনি যখনই হাসলেন প্রথমে সে চিন্তা করবে যে হাসিটা কী, তারপরে কিন্তু যখন বেশি হাসছেন হাসতে হাসতে…ব্যস একটু পরে আনন্দের যে হরমোন ব্রেন সিক্রেশন শুরু করে দিল যে, আপনি আনন্দে আছেন।
তাহলে শিথিল হওয়ার জন্যে আমরা আমরা কী কী ফ্যাক্টর কাজে লাগাতে পারি? আপনি যখনই বসছেন আনন্দের একটা ঘটনা আনন্দের একটা কথা স্মরণ করেন, একটা অর্জনের কথা স্মরণ করেন। একটা হাসির কথা স্মরণ করেন। একটা মানে ওয়েল আপনাকে কেউ একটা ফুল দিয়েছিল, ফুলটা পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলেন।
অনেক সময় ফুল খুশি হয়। আবার অনেক সময় ফুল কিন্তু আবার কি হয় বিরক্তি উৎপাদকও হয়।
না বিরক্তি উৎপাদন না, আপনার আনন্দ হয়েছিল।
অর্থাৎ যে-কোনো আনন্দের ঘটনাকে স্মরণ করেন, একটু হাসেন। এবং একটু গ্রেটিচুড! প্রভু, তোমাকে ধন্যবাদ।
আপনি যে মেডিটেশনে বসতে পেরেছেন এজন্যে ধন্যবাদ দেন প্রভুকে। যে আপনি স্ট্রেসড হন নাই।
আমরা বলেছি যে, আমেরিকানরা হচ্ছে সবচেয়ে স্ট্রেসড। সারা পৃথিবীর সবচেয়ে স্ট্রেসড জাতি হচ্ছে আমেরিকান।
এবং তাদের পণ্য ক্রয় হচ্ছে সারা পৃথিবীর ৫০ শতাংশের বেশি! সারা পৃথিবীর লোক যত পণ্য ব্যবহার করে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করে আমেরিকানরা! তারপরেও তারা স্ট্রেসড। কেন? কারণ তাদের জীবনে গ্রেটিচুড নাই, শুকরিয়া নাই কৃতজ্ঞতা নাই।
এই কৃতজ্ঞতা হচ্ছে খুব ইম্পর্টেন্ট। কৃতজ্ঞতা হচ্ছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তো আমরা যখন ঐ অনুভূতি নিয়ে বসব আপনার আস্তে আস্তে দেখবেন যে, শিথিলতা নামছে স্রোতের মতন।
ধরেন একটা বরফ। বরফের চাঁই দেখেছেন আপনারা কেউ? বরফের চাঁই। কী হয়?
পানি গলতে গলতে চুইয়ে চুইয়ে বরফের গা বেয়ে কিন্তু নিচের দিকে পড়তে থাকে। ঐ দৃশ্যটা কল্পনা করেন যে, বডির সমস্ত ই থেকে শিথিলতাটা চুইয়ে চুইয়ে চুইয়ে চুইয়ে নিচের দিকে পড়ছে। শিথিল হয়ে গেলেন।
এবং শিথিলতা নিয়ে এত কথা বলার কারণটা কী? কারণ কিন্তু একটাই- এটা হচ্ছে দি বিগিনিং।
[প্রজ্ঞা জালালি, ০১ মে, ২০১৯]